ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

ঘন কুয়াশায় শাহজালালে ফ্লাইট শিডিউলে বিপর্যয়

ইমরান আলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০১৪
ঘন কুয়াশায় শাহজালালে ফ্লাইট শিডিউলে বিপর্যয় ছবি: জাহিদ সায়মন/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ফ্লাইট শিডিউলে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত কয়েকদিনে কুয়াশার কারণে রাত ১১টার পর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত কোনো ফ্লাইট ঠিক সময়ে উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারছে না।

সকালে যে ফ্লাইটগুলোর অবতরণ করার কথা সেগুলো কুয়াশার কারণে ঢাকায় অবতরণ না করে কলকাতায় অবতরণ করছে। পরে ২-৩ ঘণ্টা পর কলকাতা থেকে ঢাকায় আসছে। আর উড্ডয়নের ক্ষেত্রেও  ফ্লাইটগুলো একই পরিমাণ সময় দেরি করে ছাড়ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত প্রায় এক সপ্তাহে ঘন কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। কুয়াশার কারণে শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট শিডিউলে এক প্রকার বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। রাত ও সকালের ফ্লাইটগুলো সময়মত অবতরণ ও উড্ডয়ন করতে পারছে না।

সূত্র জানায়, ঠিকমত ফ্লাইট উঠানামা করতে না পারার কারণে তার্কিশ এয়ারলাইন্স তাদের ভোরের ফ্লাইটটির শিডিউল পরিবর্তন করেছে। এই এয়ারলাইন্সের যে ফ্লাইটটি ভোরে অবতরণ করতো সেটি এখন সকাল ১০টায় অবতরণ করছে। ৩-৪ দিন আগেও তার্কিশ এয়ারলাইন্সটি ঠিক সময়ে শাহজালালে অবতরণের চেষ্টা করে। কিন্তু কুয়াশার কারণে পারেনি। পরে ফ্লাইটটি চট্টগ্রাম, সিলেট এমনকি কক্সবাজারে অবতরণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরবর্তী সময়ে সেটি কলকাতায় অবতরণ করে। পরপর দু’দিন এই অবস্থা চলার কারণে তারা ইস্তাম্বুল থেকে পাঁচ ঘণ্টা পর ফ্লাইট উড্ডয়ন করছে।

সূত্র আরও জানায়, এই অবস্থায় পড়ে তার্কিশ এয়ারলাইন্স ইস্তাম্বুল থেকে পাঁচ ঘণ্টা পর উড্ডয়ন করার সিদ্ধান্ত নিলেও অন্য এয়ারলাইন্স এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ কারণে ঢাকায় অবতরণের ক্ষেত্রে তাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে উড়ে এলেও কুয়াশার কারণে এখানে তারা অবতরণ করতে পারছে না, কলকাতায় অবতরণ করতে হচ্ছে। সেখানে ৩-৪ ঘণ্টা সময় অতিবাহিত করার পর শাহজালালে আসতে হচ্ছে।

এদিকে, যেহেতু অবতরণের সময় ৩-৪ ঘণ্টা সময় বেশি লাগছে, সেহেতু উড্ডয়নেও একইসময় ব্যয় হচ্ছে। এ কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদেরও। যে সকল যাত্রী তাদের গন্তব্যে যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে আসছেন তাদের অতিরিক্ত আরও ৩-৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আসার ক্ষেত্রেও ওই একই সমস্যা হচ্ছে। অতিরিক্ত এই সময় তাদের ব্যয় করতে হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে কুয়েত এয়ারলাইন্সের যে ফ্লাইটটি অবতরণের কথা ছিল কিন্তু সেটি সময়মত নামতে পারবে না। এছাড়া, ৫টায় কুয়ালালামপুর থেকে বাংলাদেশ বিমানের বিজি ০৮৬, দোহা থেকে ৭টা ৪৫ মিনিটে বিজি ০২৬, দুবাই থেকে সকাল ৮টায় ইকে ৫৮২, ৮টা ১৫ মিনিটে বিজি ০৪৮ অবতরণ করার কথা থাকলেও কোনোটিই শিডিউল অনুযায়ী নামতে পারবে না। ঠিক সময়ে নামতে পারবে না কুয়ালালামপুর থেকে আসা রিজেন্ট এয়ারওয়েজের এরএক্স ৭৮৩   ৮টা ২০ মিনিটের ফ্লাইটটিও।

বিমানবন্দরের ফ্লাইট অপারেশন অফিস সূত্র জানায়, মঙ্গলবার ভোর থেকে যে ফ্লাইটগুলোর অবতরণ করার কথা সেগুলোর একটিরও সময় ঠিক থাকবে না। ইতোমধ্যে ভোরের ফ্লাইট কুয়েত এয়ারলাইন্স আসেনি। সেহেতু অন্যগুলোও ঠিক সময়ে আসতে পারবে না।

সূত্র আরও জানায়, যেহেতু তাদের পৌঁছুতে দেরি হচ্ছে, সেহেতু শাহজালাল থেকে উড্ডয়নও দেরি হবে এটাই স্বাভাবিক। প্রতি বছর এই সময়টাতে ঘন কুয়াশার কারণে ফ্লাইট শিডিউলে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। এবারও তাই হয়েছে।

কুয়াশা কেটে গেলে এই সমস্যা থাকবে না  বলে জানায় এই সূত্র।

মঙ্গলবার ভোরের ফ্লাইট সময়মত এসেছে কিনা সরেজমিন দেখতে বিমানবন্দরে যায় বাংলানিউজ। ফ্লাইট না আসার বিষয়টি নিশ্চিত করে ফ্লাইট অপারেশন অফিস ও এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ।

বিমানবন্দরে কতর্ব্যরত সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন বিমান চলাচলের সূচি নির্ভর করে আবহাওয়ার ওপর। পূর্বাভাস ছাড়া কোনো বিমানবন্দর উড্ডয়ন ও অবতরণ ছাড় দেয় না। সাধারণত শীতকালে কুয়াশা এবং অন্যান্য আবহাওয়ার সম্পর্কিত ব্যাপারগুলোর ওপর নির্ভর করে বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। ঘন কুয়াশার কারণে ফ্লাইট পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

তিনি বলেন, এই কুয়াশার কারণেই তার্কিশ ও কুয়েত এয়ারলাইন্স তাদের সময়সূচিতে পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৫২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।