ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

টিকিট কারসাজি: ১৫ মিনিটে বিমানের ক্ষতি ৪৪ লাখ টাকা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২২
টিকিট কারসাজি: ১৫ মিনিটে বিমানের ক্ষতি ৪৪ লাখ টাকা

ঢাকা: টিকিট কারসাজির অভিযোগ উঠল রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সংগঠন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিরুদ্ধে। কারসাজিতে সিট ফাঁকা থাকায় ১৫ মিনিটেই সংস্থাটির ক্ষতি হয়েছে ৪৩ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৪৪ লাখ টাকা)।

ঘটনাটি বিমানের জেদ্দা রুটের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিমানের শীর্ষ বিপণন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ওই রুটে কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সি টিকিট বিক্রির ঘোষণার ১৫ মিনিটের মধ্যে ঢাকা-জেদ্দা রুটের ফ্লাইটের সব টিকিট বুক করে ফেলে। এতে ওই ফ্লাইটের ২৬৮টি আসনের বিপরীতে ৮০০টি বুকিং পড়ে। তবে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ৪৩টি আসন খালি নিয়েই ওই ফ্লাইট যাত্রা করে।

বিজি১৮০২ ফ্লাইটটি পরে ভিআইপি যাত্রীদের বহন করতে জেদ্দা থেকে লন্ডন হয়ে নিউইয়র্কে যায়। বিমানের বিপণন বিভাগের তথ্যানুসারে, ঢাকা-জেদ্দা রুটের প্রতিটি টিকিটের মূল্য ছিল এক হাজার ডলার।

বিমানের অনুমোদিত যেসব ট্রাভেল এজেন্সি টিকিট পায়নি, তাদের অভিযোগ, আটটি টিকিট এজেন্সি বিমানের বিপণন মহাব্যবস্থাপক এবং তার ঘনিষ্ঠ ছয় কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে ১৫ মিনিটের মধ্যে সব টিকিট বুক করে রাখে। তবে শেষ পর্যন্ত বুকিং নিশ্চিত করা যায়নি বলে ওই ফ্লাইটের ৪৩টি আসন খালি থেকে যায়। অভিযুক্ত এজেন্সিগুলোর মধ্যে রয়েছে খান ট্রাভেল, রয়্যাল ট্রাভেল, খাজা এয়ারলাইনার ও গালফ ট্রাভেল।

ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর সংগঠন আটাবের সভাপতি এস এন মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, বিমানের সেলস অ্যান্ড মার্কেটিংয়ের মধ্যে একটি গ্রুপ আছে, যাদের পরামর্শে কিছু ট্রাভেল এজেন্সি সিট বুক করে রাখায় সাধারণ যাত্রীরা টিকিট পান না। ফলে সিট খালি যায়। যারা এই অনিয়মে জড়িত, তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। আমাদের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে যদি এ কাজে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে।

টিকিট কারসাজির এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে বিমানের বিপণন মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন তড়িঘড়ি করে এক চিঠিতে ওই রুটে অগ্রিম যাত্রী থাকার কথা জানিয়েছিলেন উল্লেখ করে বিমানের আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের দোষারোপ করেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, তাদের জেদ্দা রুটে যাত্রী সরবরাহ করার কথা ছিল। তবে চিঠির জবাবে আঞ্চলিক কর্মকর্তারা বলেছেন, বিমানের প্রধান কার্যালয় বা বিপণন বিভাগ তাদের এই ধরনের কোনো আগাম নির্দেশনা দেয়নি।

কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওমরাহ ও সৌদি আরবে কর্মরত প্রবাসীদের চাপের কারণে ঢাকা-জেদ্দা রুটে আসন পাওয়া খুব কঠিন। বর্তমানে ঢাকা থেকে এই গন্তব্যে ১৬ ডিসেম্বরের আগে কোনো সিট খালি নেই। ১৬ ডিসেম্বরের পরের তারিখগুলোয় বিমানের জেদ্দা রুটে সর্বনিম্ন ভাড়া এক লাখ সাত হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।   

ঘটনার সত্যতা শিকার করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. যাহিদ হোসেন বলেন, এটি ভিভিআইপি পজিশনিং ফ্লাইট ছিল। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।  

বাংলাদেশ সময়: ১১২৭ ঘণ্টা, ২৫ নভেম্বর, ২০২২
এমকে/আরএইচ/এমজে
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।