ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হতাশাগ্রস্ত হয়ে গুপ্তহত্যা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
তিনি বলেছেন, নির্বাচন না করে খালেদা জিয়া সংসদ হারিয়েছেন, রাজনীতির মাঠ হারিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) বিকেলে ১৪ দলের মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে নাসিম এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
নাসিম বলেন, মাদারীপুরে বুধবার (১৫ জুন) এক শিক্ষককে হত্যা করতে গিয়ে জনগণের হাতে যে ধরা পড়েছে সে শিবিরকর্মী। সে ঢাকায় লেখাপড়া করে, কলেজের ছাত্র। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে শিক্ষককে মারতে গিয়েছিলো। জনগণ ধরে ফেলেছে। এটাই প্রমাণ করে বিএনপি-জামায়াত জোট আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারার পর ব্যর্থ হয়ে এখন গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। কিন্তু এরপরও ইফতারির আগে খালেদা জিয়া বলেন, সরকার এটা করছে। একজন রোজা রাখা মানুষ কীভাবে এ ধরনের মিথ্যা কথা বলেন? খুন করেছে কে, ধরা পড়েছে কে?
১৪ দলের মুখপাত্র বলেন, আমেরিকার ফ্লোরিডার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় খালেদা দুঃখ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তিনি বাংলাদেশের গুপ্তহত্যায় দুঃখ প্রকাশ না করে প্রত্যক্ষভাবে খুনিদের পক্ষ নিয়েছেন।
খালেদা জিয়া বারবার পরাজিত হয়েছেন, এবারও হবেন মন্তব্য করে নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে আজ মানুষ গুপ্তহত্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে, জেগে উঠেছে। মাদারীপুরের মানুষ সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে খুনিকে ধরে ফেলেছে। তাদের ধন্যবাদ জানাই। আগামী ১৯ জুন মানববন্ধনে ব্যাপক মানুষের সমাগম ঘটিয়ে দেখাতে হবে গুপ্তহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে আমরা আছি।
সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, খালেদা জিয়া মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। প্রচণ্ড হতাশা থেকে বিকারগ্রস্ত রোগীর মতো গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। সরকারের ওপর দোষ চাপানোর মধ্য দিয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন, তিনি গুপ্তহত্যাকারীদের রক্ষা করতে চান। সরকারের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ হত্যা বন্ধ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন, দ্রুতই গুপ্তহত্যাও বন্ধ হবে।
গুপ্তহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে আগামী ১৯ জুন ঢাকাসহ সারাদেশে ১৪ দলের মানবন্ধন কর্মসূচি সফল করতে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ঢাকায় এ মানবন্ধন গাবতলী থেকে ধানমন্ডি রাসেল স্কয়ার, কারওয়ান বাজার সোনারগাঁও মোড়, শাহবাগ, মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব, পুরানা পল্টন, নূর হোসেন স্কয়ার, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, ইত্তেফাক মোড়, যাত্রাবাড়ী হয়ে ডেমরা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, জাসদের (একাংশের) সাধারণ সম্পাদক শিরিন আকতার, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য ড. হারুণ অর রশিদ, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য ডা. কামরুল হাসান খান, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, সাংস্কৃতিক জোটের গোলাম কুদ্দুস, ইঞ্জিনিয়ার নুরুজ্জামান, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. ইকবাল আরসালান, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ কামাল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৬
এসকে/এইচএ/