এমন পরিস্থিতিতে কমলনগর উপজেলা ছাত্রলীগের রাজনীতি সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন সাবেক ছাত্র নেতারা। ছাত্রলীগের এ দ্বন্দ্বকে বিরোধী রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন কাজে লাগাবে বলে মন্তব্য করছেন রাজনৈতিক সচেতনরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৫ মার্চ আবদুস সামাদ রাজুকে সভাপতি ও রাকিবুল হাসান বিপ্লবকে সাধারণ সম্পাদক করে কমলনগর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। তিন মাস পর ১৩ জুন লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগ মাইন উদ্দিনকে সভাপতি ও সাদ্দাম হোসেন আবিদকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করে। নতুন কমিটি গঠনের পর থেকে সদ্য বিলুপ্ত কমিটির নেতারা নতুন কমিটি বাতিল করে আগের কমিটি পুনর্বহাল করার দাবিতে হাজিরহাটে মানববন্ধন, লরেন্স ও তোরাবগঞ্জে বাজারে বিক্ষোভ করে। গত ২১ জুন বিকেলে ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটি মুন্সিরহাট বাজারে আনন্দ মিছিল বের করলে সদ্য বিলুপ্ত কমিটি তাদের ধাওয়া করে।
শুক্রবার (৩০ জুন) দুপুরে উপজেলা ছাত্রলীগের নব গঠিত কমিটির সভাপতি মাইন উদ্দিনসহ তিন নেতাকর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষ। এ ঘটনায় ওই রাতেই উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আবদুস সামাদ রাজু ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান বিপ্লবসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৫/৬ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় ছাত্রলীগের তিন নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এদিকে, ছাত্রলীগ সভাপতি মাইন উদ্দিকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করার খবর পাওয়া গেছে। অপর দিকে, সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৯ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অব্যাহত আছে।
কমলনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আবদুস সামাদ রাজু বলেন, তিন মাস না যেতেই কোনো কারণ ব্যতীত, নোটিশ ছাড়াই আমাদের কমিটি বাতিল করে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ত্যাগী নেতার্কীরা ওই পকেট কমিটি মানতে পারে না। আগের কমিটি পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
কমলনগর উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি মাইন উদ্দিন বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় পূর্বের কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। তাদের সাথে আমার কোনো দ্বন্দ্ব নেই। তারা অন্যায়ভাবে আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়; কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে।
সাবেক ছাত্রনেতা কমলনগর উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ফজলুল হক সবুজ বলেন, ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের এমন দ্বন্দ্ব কোনোভাবে কাম্য নয়। এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বিরোধী রাজনৈতিক দল সুযোগ কাজে লাগাবে। এ ব্যাপারে আমরা সাবেক ছাত্রনেতাদের নিয়ে সভা করি। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নিজাম উদ্দিন বলেন, ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের চলমান দ্বন্দ্ব নিরসনে জেলা ছাত্রলীগ যথাযথ উদ্যোগ নেবে এমনটাই প্রত্যাশা করছি।
লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি চৌধুরী মাহমুদুননবী সোহেল বলেন, সংগঠনের স্বার্থে উভয় গ্রুপকে নিয়ে বসবো, আশা করি দু’একদিনের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসন হয়ে সুন্দর একটা পরিবেশ ফিরে আসবে; সে লক্ষ্যে কাজ চলছে।
বাংলাদেশ সময় : ১৬৩০ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৭
জেডএম/