তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে তিনদিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে বাগমারা থানা পুলিশ।
এদিকে, অস্ত্রসহ গ্রেফতারের পর যুবলীগ কর্মী হাবিবুর রহমানের সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করেছে তার নিজ দলের নেতা-কর্মীরা।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগ নেতা ও তাহেরপুর পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ স্থানীয় এমপি এনামুলের সঙ্গে হাবিবুর রহমানের বেশ কয়েকটি ছবি তার ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিগুলো ছড়িয়ে পড়ে।
পৌর মেয়রের ফেসবুক পেজে শেয়ার করা ছবিগুলোতে দেখা যায়, যুবলীগকর্মী হাবিবুর রহমান সংসদ সদস্য এনামুলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন, তাকে নিয়ে চলাফেরা করছেন। তাদের সঙ্গে অন্যান্য লোকজনও রয়েছেন।
ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “জামায়াত-শিবির, সর্বহারার এজেন্ডা বাস্তবায়নের মহানায়ক ইঞ্জি. এনামুল হকের দেহরক্ষী সর্বহারার লিডার ১১টা কেসের আসামি হাবিবুর রহমান এমপির দেওয়া অস্ত্রসহ গ্রেফতার। ”
সেখানে কাউছার আলী নামে একজন মন্তব্য করেছেন, “এই এমপি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মানুষ না। এ হলো তেলবাজ, একে সামনের নির্বাচনে নৌকার নমিনেশন দিলে বঙ্গবন্ধুকে অপমান করা হবে। তাই এই এমপির আসনে এমপিকে পরিবর্তন করে নতুন মুখ, যৌগ্য, সৎ ও দলের জন্যে ত্যাগী নেতাদের নির্বাচন করার জন্য আনুরোধ করছি। ”
এদিকে, পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় তিনি বাগমারার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন।
ফলে এমপির সাম্প্রতিক সময়ের কর্মকাণ্ডে স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এমপির একছত্র আধিপত্য ও ক্ষমতার দাপটে দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে।
এ ব্যাপারে ফোনে রাজশাহীর বাগমারা আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।
এছাড়া পুলিশের ওপর হামলার পর অস্ত্রসহ গ্রেফতার হাবিবুর রহমান সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহীর অতিরিক্তি পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী জানান, পুলিশের ওপর হামলা এবং অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। গত রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতেই পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দুটি করেছে।
পুলিশ কর্মকর্তাকে পেটানোর ঘটনায় জড়িত যুবলীগের আটক ৬ কর্মীকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাবিবের বিরুদ্ধে আদালতে তিনদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
গ্রেফতার ৬ জন হলেন- যুবলীগ কর্মী হাবিবুর রহমান (৩২), মাসুদ রানা (২৬), শাহিন মোল্লা (২৮), শফিকুল ইসলাম (৩৩), মোফাজ্জল হোসেন মায়া (২৮) ও জহুরুল (৩৭)।
রাজশাহীর অতিরিক্তি পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী বলেন, “অস্ত্র উদ্ধার এবং পুলিশের কাজে বাধাদান এবং হামলার অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় ছয়জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তবে অস্ত্র আইনে কেবল হাবিবুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। অন্যদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে। হাবিবকেও ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ”
এর আগে রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পূজায় ডিউটিতে পছন্দের লোকজনকে আনসারের ডিউটি না দেওয়ায় বাগমারায় পুলিশের এক এসআইকে পেটান যুবলীগের কর্মীরা। এ সময় আনসার ভিডিপির দুই কর্মকর্তাকেও লাঞ্ছিত করেন তারা।
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ আনসার ভিডিপি কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় রাতে অভিযান চালিয়ে যুবলীগের ৬ কর্মীকে আটক করে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭
এসআই/এমজেএফ