শনিবার (৯ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কাদের এ কথা বলেন। এর আগে বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাও বিদেশি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন।
তবে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির এ অভিযোগ বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর দাবি করে এ ধরনের তথ্য প্রচারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমা চাইতে বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি শুক্রবারের (৮ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রধানমন্ত্রীকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ক্ষমা না চাইলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এসেছে, বাংলাদেশি পত্র-পত্রিকাও এই খবর প্রচার করেছে। সৌদি আরবে শপিং মল ও কাতারে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণে খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান, আরাফাত রহমান কোকো ও খালেদার ভাই শামীম ইস্কান্দার ১২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছেন।
বিদেশে অর্থপাচার বিষয়ে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্তের আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা উচিত।
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফখরুলের অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সত্য বলার সৎ সাহস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আছে। কানাডিয়ান টেলিভিশনের খবরের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অকপটে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। শেখ হাসিনা যা বলেছেন, জেনে-শুনে বলেছেন। তথ্য-প্রমাণ আছে বলেই বলেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়ায় ফখরুলের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য খণ্ডন করতে গিয়ে ফখরুল আরেক সংবাদ সম্মেলনে যে অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করেছেন, সেটাই বিএনপির চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। ফখরুলের ওই বক্তব্য শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা, কখনও মনে হয় সত্যকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা।
বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা বুঝে ফেলেছে, ইতোমধ্যে দুর্নীতির মামলা ঝুলছে, আরও দুর্নীতির মামলা আসছে। সামনে নির্বাচন, তারা এখন হতাশার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। তাই আবোল-তাবোল বলা শুরু করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর সততার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা সর্বজনস্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত। দেশের বাইরেও তার সততা স্বীকৃত। সর্বশেষ ১৭৩টি দেশের মধ্যে সেরা সৎ ব্যক্তির মধ্যে শেখ হাসিনার নাম আসার পর থেকে একটা মহলের গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে।
পদ্মা সেতু ও মেট্রো রেল প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে- বিএনপির এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু ও মেট্রো রেলে দুর্নীতি হয়েছে প্রমাণ করতে না পারলে আপনাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।
কাদেরের এ সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৭
এমইউএম/এইচএ/