তিনি বলেছেন, আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তারা যে অপমান করেছে, তারপর তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না, আপনারা যে যা-ই বলুন, আমি অন্তত বসবো না।
রোববার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
নির্বাচন নিয়ে সংলাপ আয়োজন ও তফসিল ঘোষণার আগে সরকারের পদত্যাগসহ বিএনপির বেশ কিছু শর্তের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়েছিলাম। ফোনও করেছিলাম, আপনারা জানেন- ধরেননি (খালেদা জিয়া)। খালেদা জিয়ার ছেলে (আরাফাত রহমান কোকো) যখন মারা গেলো, তখন গেলাম, মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিলো। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তাদের সঙ্গে আমি আর আলোচনায় বসবো না। আমারও আত্মসম্মানবোধ আছে। সে আমি ক্ষমতায় থাকি বা না থাকি। এখন যে যা-ই বলুন, তাদের সঙ্গে আমি অন্তত বসবো না।
নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা নাকি খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। কে নির্বাচনে এলো না এলো, এটা দেখার বিষয় সরকারের নয়।
নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে বিএনপির সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইভিএম হলো প্রযুক্তির একটা অংশ। এটার সুফল উন্নত বিশ্ব নিচ্ছে। বিএনপি ভোটে কারচুপি করতে পারবে না বলেই ইভিএমের বিরোধিতা করছে।
সম্ভাব্য জাতীয় নির্বাচন ঘিরে অস্থিরতার শঙ্কা-উদ্বেগ নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, নির্বাচন হবেই। কেউ ঠেকাতে পারবে না, কারও শক্তি নেই নির্বাচন ঠেকানোর। যারা ঠেকাতে চেয়েছিল, তাদের আগেরবার যেমন জনগণ মোকাবেলা করেছিল, এবারও মোকাবেলা করবে।
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ভুয়া ছবি দিয়ে মিয়ানমার সশস্ত্র বাহিনীর প্রোপাগান্ডামূলক একটি বই প্রকাশের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা এভাবে ভুয়া ছবি দিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে জঘন্য কাজ করেছে। কিন্তু এটা তারা কার কাছ থেকে শিখলো? আমাদের দেশেও তো হয়েছে। একেবারে কাবা ঘরের সামনে ব্যানার ধরার ছবির মিথ্যাচারও আমরা দেখেছি। সুতরাং এসব মানুষের কাছে ধরা পড়ে যায়। মিয়ানমার সরকারও ধরা পড়ে গেছে।
সম্মেলনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমসটেক সম্মেলনে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বলেছি, বাংলাদেশ বিমসটেকের মতো সহযোগিতামূলক প্লাটফর্মের সঙ্গে কাজ করে যাবে।
বিমসটেকের মতো আঞ্চলিক বড় প্লাটফর্মের আলোচনায় মিয়ানমারের সৃষ্ট রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি এসেছে কি-না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, বিমসটেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় উঠেছে রোহিঙ্গা ইস্যুটি। এছাড়া সম্মেলনের ফাঁকে আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকেও এ নিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে কথা হয়েছে।
এতে প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক সম্মেলনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারী, নেপালের প্রধানমন্ত্রী শর্মা অলি, ভুটানের অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শেরিং ওয়াংচুকসহ অনেক দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকের কথা তুলে ধরেন। উল্লেখ করেন এসব বৈঠকে আলোচনার বিষয়াদিও।
বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে গত বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) সকালে কাঠমান্ডু যান প্রধানমন্ত্রী। দুই দিনের সফর শেষে শুক্রবার (৩১ আগস্ট) বিকেল আড়াইটার দিকে দেশে ফেরেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৮
এসকে/এমইউএম/এইচএ/
আরও পড়ুন
** নির্বাচন হবেই, ঠেকানোর শক্তি কারও নেই
** মিয়ানমার জঘন্য কাজ করেছে
** বিমসটেকের অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় রোহিঙ্গা বিষয় উঠেছে
** আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে আলোচনা হয়েছে বিমসটেকে