আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের প্রায় দেড়শ’ বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাঠে নেমেছেন।
এই নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন ৭০ জনের বেশি। পাশাপাশি উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪টি ওয়ার্ডে ৫০ জনের বেশি বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলের এই বিদ্রোহী প্রার্থীদের বসিয়ে দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের বার বার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য। যারা এই নির্দেশ মানছেন না তাদের ব্যাপারে দল শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। তবে বর্তমানে ঢাকা মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় পদ থেকে বাদ দেওয়ার কোনো বিষয় নেই। এ কারণে অনেকেই সাংগঠনিক শাস্তির বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছেন না। কিন্তু তারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হওয়ায় ভবিষ্যতে দলীয় রাজনীতিতে নেতৃত্ব পর্যায়ে আসতে পারবেন না।
এর আগে গত বছর অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে শতাধিক স্থানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলো। ওই সব বিদ্রোহী প্রার্থীর পেছনে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের মদদ এবং তাদের পক্ষে কাজ করার অভিযোগ ছিলো। বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের মদদদানকারী সব মিলিয়ে দুই শতাধিক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। এদের ব্যাপারে দলীয়ভাবে তদন্তও করা হয়। অভিযুক্ত এই নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগ। কিন্তু পরে ওই বিদ্রোহী প্রার্থী ও নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বর্তমানে ঢাকা উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগ ও ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই। গত বছর ৩০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। নভেম্বরেই সম্মেলন হয়ে যাওয়া চার সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনেরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার অপেক্ষায় আছে।
আওয়ামী লীগের ওই নেতারা আরও জানান, সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের পর দুই মহাগনর আওয়ামী লীগসহ দলের সহযোগী সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। এই সিটি নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন এবং দলের নির্দেশ মানছেন না তাদের দল থেকে বহিষ্কারের বিষয় না থাকলেও ভবিষ্যতে তারা কোনো কমিটিতে স্থান পাবেন না। এদের চিহ্নিত করে রাখা হচ্ছে, ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের মহানগর, থানা, ওয়ার্ড কোনো কমিটিতেই তারা কোনো পদ পাবেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি, প্রতিনিয়তই তাদের সঙ্গে কথা বলছি। তাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার। শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করা হবে তাদের বসিয়ে দেওয়ার। তবে যারা নির্দেশ মানবে না তাদের চিহ্নিত করে রাখা হবে। তারা ভবিষ্যতে দলের কোনো পদ পাবেন না। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
এসকে/এজে