এর আগে আগামী ৬ মার্চের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ সব শাখার সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু মুজিববর্ষের কর্মসূচির কারণে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
গত বছরের ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় সম্মেলনের আগে কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ সব জেলা-উপজেলাসহ তৃণমূল পর্যায়ের সম্মেলন সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। অধিকাংশ জেলা ও উপজেলার সম্মেলন অবশিষ্ট রেখেই দলের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনের আগে বিদায়ী কার্যনির্বাহী সংসদের সর্বশেষ সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জাতীয় সম্মেলনের পরপরই অবশিষ্ট জেলা, উপজেলাসহ তৃণমূল পর্যায়ের সম্মেলন সম্পন্ন করা হবে। সে অনুযায়ী গত ৩ জানুয়ারি দলের নতুন কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথসভায় দ্রুত তৃণমূল পর্যায়ের সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত হয়।
এসব জেলা, উপজেলাসহ তৃণমূল পর্যায়ের সম্মেলন আগামী ৬ মার্চের মধ্যে শেষ করার জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জেলা কমিটির কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। দলের সাধারণ সম্পাদকের চিঠি পাওয়ার পর সাংগঠনিক কার্যক্রমও শুরু হয়েছিলো। কয়েকটি জেলা-উপজেলায় সম্মেলনের তারিখও নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু আগামী ১৭ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে মুজিববর্ষ। মূলত মুজিববর্ষের কারণেই সম্মেলন প্রক্রিয়া এপ্রিল পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, সংগঠনকে গতিশীল করতে তৃণমূল পর্যায়ে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আসার উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ কারণেই দ্রুত সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া জাতীয় সম্মেলনের আগে যেসব জেলা-উপজেলায় সম্মেলন হয়েছে এই সময়ের মধ্যে সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটিও গঠন করা হবে। তবে এই কার্যক্রম ৬ মার্চের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও মুজিববর্ষের কারণে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ জাতীয়ভাবে মুজিববর্ষের কর্মসূচি উদযাপনের পাশাপাশি দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। একই সময়ে মুজিববর্ষ এবং সম্মেলন প্রক্রিয়া, দুটি কর্মসূচি চালাতে সমস্যা হতে পারে। এ কারণে সম্মেলন প্রক্রিয়া এপ্রিল পর্যন্ত পেছানো হয়েছে বলে নেতারা জানান।
আওয়ামী লীগের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে জাতীয় সম্মেলনের আগে ২৯টি জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আবার এই ২৯টি জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও একটিরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি। এছাড়া জাতীয় সম্মেলনের আগে অর্ধেকেরও কম উপজেলায় সম্মেলন করা সম্ভব হয়েছে। আগামী এপ্রিল থেকে জেলা-উপজেলাসহ তৃণমূল পর্যায়ের সব মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন করা হবে বলেও দলটির নেতারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মার্চে তৃণমূল সম্মেলন হচ্ছে না। এপ্রিল থেকে শুরু করা হবে। মার্চে শুরু হচ্ছে মুজিববর্ষ। এই সময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে অনেক কর্মসূচি থাকবে। এ কারণেই তৃণমূল পর্যায়ের সম্মেলন প্রক্রিয়া পেছানো হয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলানিউজকে বলেন, মার্চে সম্মেলন করার কথা ছিলো। কিন্তু ওই মাসে মুজিববর্ষের বিভিন্ন কর্মসূচি থাকছে। একসঙ্গে দুটি কর্মসূচি আয়োজন করা সমস্যা হতে পারে। এ কারণেই মার্চে সম্মেলনের বাধ্যবাধকতা না রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২০
এসকে/জেডএস/এমএইচএম