ঢাকা: অবশেষে বুঝি বহু কাঙ্খিত চাকরি জুটছে পুলিশের নির্যাতনে নিহত ইয়াসমিনের মা শরিফা বেগমের। গত শুক্রবার বাংলানিউজে ‘প্রধানমন্ত্রী সমীপে, আমি ইয়াসমিনের মা, চাকরি চাই’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার মাত্র চার দিনের মাথায় আজ সোমবার তাকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) জামাল উদ্দিন আহমেদ।
একইসঙ্গে শরীফার ১০ বছরের শিশুপুত্র পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া শাহীনুর রহমান সোহানের পড়ালেখার খরচ বহনেরও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
এর ফলে সতেরো বছর আগে অকালে মেয়ে হারানো এই মায়ের বুকে বাসা বেঁধেছে নতুন স্বপ্ন।
বিকেলে মোবাইলফোনে কথা বলার সময়েও বেশ টের পাওয়া যাচ্ছিলো শরীফা বেগম ও তার স্বামী ডাবলু রহমানের আবেগ আর আনন্দ।
আশ্বাস পেয়েই উচ্ছ্বসিত শরিফা বললেন, “এবার বুঝি চাকরিটা আমার হলো। ”
তারা জানালেন, দুপুরের দিকে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার একটি গাড়ি নিয়ে শরীফাদের বাড়ি আসেন। ডিসি সাহেব দেখা করতে চান শুনে শরীফা বেগম কমিশনারের সঙ্গে গাড়িতে চড়েন।
প্রশাসকের কার্যালয়ে পৌঁছুলে শরীফার কুশল জানতে চান জামাল উদ্দিন। এরপর একে একে শরীফার কাছে জেনে নেন প্রয়োজনীয় নানা তথ্য। কেমন চাকরি হলে ভালো হয়, লেখাপড়া কতটুকু করেছেন ইত্যাদি জানতে চান জামাল। শরীফা একটি আয়ার চাকরি হলেই চলবে বলে জানান জামাল উদ্দিনকে। কাগজে লিখে দেন নিজের নাম, স্বামীর নাম ও ঠিকানা।
এরপর জামাল শরীফাকে ‘অতিসত্বর একটি সুবন্দোবস্ত’র আশ্বাস দেন। শরীফার চাকরির সঙ্গে সঙ্গে শিশু শাহীনের পড়ার ব্যয় নির্বাহেরও প্রতিশ্রুতি দেন জেলা প্রশাসক।
তবে শরীফা ও ডাবলুর সঙ্গে আলাপ শেষে জামাল উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে চাকরির ব্যাপারটা স্পষ্ট করলেন না তিনি।
শুধু বললেন, ‘‘শরীফার খোঁজখবর নিয়েছি। তা তো আমি নিতেই পারি। ’’
এদিকে বাংলানিউজের প্রতি এখনই কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রাখছেন শরীফা ও ডাবলু রহমান। বাংলানিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ফলে আজ এই চাকরির সম্ভাবনা জেগেছে বলেই মনে করছেন তিনি। ভাবছেন, সতেরো বছরের অপেক্ষা সাঙ্গ হলো বুঝি। তাই প্রহর গুণছেন চূড়ান্ত প্রাপ্তির।
চাকরির আশ্বাস ছাড়াও আরও অনেক ভালো খবর তৈরি হচ্ছে শরীফার জন্য। বাংলানিউজে প্রতিবেদন প্রকাশের পর অনেকেই যোগাযোগ করেছেন বাংলানিউজের সঙ্গে। সমবেদনা জানাচ্ছেন শরীফা বেগমকে। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন সাহায্য-সহযোগিতার।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১২
সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর