বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘প্রধানমন্ত্রী’ সমপর্যায়ের সম্মান ও প্রটোকল দেওয়া হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে। লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলের লবি থেকে এসে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বরণ করেছেন—এতে এমনটাই মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল আমিন বেপারী।
শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডনের ডরচেস্টারে হোটেলে স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, তারেক রহমান লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলের সামনে যখন আসেন তখন হোটেলের লবিতে অপেক্ষমান ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। তার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রেস উইংয়ের সদস্যরাও ছিলেন। তারেক রহমানকে বহনকারী গাড়ি হোটেলের সামনে আসামাত্রই বাইরে অপেক্ষমান কর্মীদের স্লোগান শুনে ও গাড়ি দেখে হোটেলের লবি থেকে গাড়ির একদম সামনে এসে দাঁড়ান খলিলুর রহমান। এ সময় তারেক রহমান গাড়ি থেকে নামলে তাকে অত্যন্ত আন্তরিকভাবে বরণ করেন ড. খলিল ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রত্যক্ষদর্শীরারা আরও জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকের জন্য নির্ধারিত কক্ষ ও নির্ধারিত চেয়ার থেকে উঠে একদম দরজার সামনে এসে তারেক রহমানকে বরণ করেন ও অভ্যর্থনা জানান। এ সময় তারা অত্যন্ত আন্তরিকভাবে ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কথা বলেন। তাদের কথা শুরু হয় একে অন্যের স্বাস্থ্য ও পরিবারের খোঁজ খবর নেওয়ার মাধ্যমে। এরপর গণমাধ্যমকর্মী ও নেতাকর্মীরা বাইরে চলে গেলে এক ঘণ্টার বেশি সময় দুজনে একান্তে কথা বলেন।
অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকের বিষয়ে রাজনীতি বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ নুরুল আমিন বেপারী বাংলানিউজকে বলেন, ড. খলিলুর রহমান হলেন সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে যে প্রকোটল ও সম্মান দিয়েছেন, তা আসলে ড. ইউনূসই দিয়েছেন। একদমই প্রধানমন্ত্রীর পর্যায়ের সম্মান। নির্বাচন হলে তারেক রহমান ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী, এতেও কোনো সন্দেহ নেই। এ ছাড়া তিনি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। আমাদের দেশেও সম্ভ্রান্ত কেউ বাড়িতে বেড়াতে এলে আমরা গেটে এসে বরণ করি এবং যাবার সময় গেট পর্যন্ত দিয়ে আসি। তারেক রহমান ছিলেন অতিথি। ড. ইউনূস সেই সম্মানটাই দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর মতো করে সম্মান দিয়ে এখানে তিনি বিএনপিকে আস্থায় নিতে পেরেছেন।
ড. বেপারী আরও বলেন, মিটিং শেষে তারেক রহমান যেভাবে হাত নেড়েছেন, তাতে বোঝা যায় ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক সফল হয়েছে। নির্বাচনের ব্যাপারেও একটা কম্প্রোমাইজ হয়েছে। নির্বাচনের মাধ্যমে তাদেরও তো নিরাপদ ও সম্মানজনক একটা প্রস্থান দরকার।
তবে সতর্কতার সঙ্গে সরকার ও বিএনপিকে পথ চলার পরামর্শ দিয়ে নুরুল আমিন বেপারী বলেন, ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকে ভারত বেজায় নাখোশ হবে। তাদের সব কৌশল ও ধারণা একে একে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ভারত তাদের এ দেশীয় দোসরদের দিয়ে নতুন কোনো কূটকৌশল করে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এমজেএফ