ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

হরিণ পালনে নতুন নীতিমালা : মাংস খাওয়া ও বিক্রি করা যাবে

আহমেদ রাজু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১০
হরিণ পালনে নতুন নীতিমালা : মাংস খাওয়া ও বিক্রি করা যাবে

হরিণ পালনে সরকার নতুন নীতিমালা করেছে। নতুন নীতিমালায় ব্যক্তিগত পর্যায়ে দশটি হরিণ পালন করা যাবে।

হরিণের খামারও করতে পারবেন আগ্রহীরা। লালন-পালনের পর সে হরিণের মাংস খেতেও বাধা নেই। এছাড়া ক্রেতাদের কাছে বিক্রিও করা যাবে হরিণের মাংস। তবে চিত্রা হরিণ ছাড়া বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির হরিণ পালন এই নীতিমালার আওতায় আসবে না।

বন অধিদফতর এ তথ্য জানায়।

হরিণ পালন সম্পর্কে বন সংরক্ষক (বন্যপ্রাণী) তপন কুমার দে বাংলানিউজকে বলেন, ‘নতুন নীতিমালাটি সরকার অনুমোদন করেছে। খুব শিগগিরই তা কার্যকর হবে। ’

তিনি বলেন, ‘হরিণ পালন ও খামার করার আগে বন অধিদফতর থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। অনুমতি ছাড়া কেউ হরিণ পালন করতে পারবেন না। বন বিভাগের লিখিত অনুমতি ছাড়া হরিণ ক্রয়-বিক্রয় করাও যাবে না। তাছাড়া মাংস খাওয়া ও বিক্রি করতেও লাগবে বনবিভাগের অনুমতি। ’

বন অধিদফতর জানায়, হরিণ কেনার আগে উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে উৎসাহীরা হরিণ পালনের জন্য বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করবেন। অপরদিকে খামার করতে হলে আবেদন করতে হবে বন সংরক্ষক বরাবরে। আবেদন পাওয়ার পর বন কর্মকর্তারা হরিণের আবাস পরিদর্শন করবেন। তারপর আগ্রহীকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।

ব্যক্তিগতভাবে হরিণ পালনের জন্য আবেদনকারীর লাইসেন্স ফি পাঁচ শ’ টাকা। আগে এই ফি ছিলো পাঁচ হাজার টাকা। তবে মেট্রোপলিটন এলাকায় প্রতি খামারের জন্য লাইসেন্স ফি নির্ধারন করা হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা।

জেলা সদর এলাকায় প্রতি খামারের জন্য লাইসেন্স ফি আড়াই হাজার টাকা। মেট্রোপলিটন ও জেলা সদর ছাড়া অন্য এলাকায় খামারের লাইসেন্স ফি দুই হাজার টাকা।

প্রতিটি হরিণের পজেশন ফি ও নবায়ন ফি ধরা হয়েছে এক শ’ টাকা। প্রতি বছর জানুয়ারি মাসের মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন  করতে হবে।

ব্যক্তিগত পর্যায়ে এক সঙ্গে ১০টি হরিণ পালন করা যাবে। ব্যক্তি পর্যায়ে হরিণের সংখ্যা ১০টির বেশি হলে তা খামার হিসেবে বিবেচিত হবে এবং খামারের জন্য নতুন করে লাইসেন্স নিতে হবে।

হরিণ কেনার ক্ষেত্রেও দিক নির্দেশনা রয়েছে। বন বিভাগ, সরকারি চিড়িয়াখানা ও পজেশন সার্টিফিকেট আছে এমন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে হরিণ কেনা যাবে। ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও খামার পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট বন সংরক্ষকের কাছে পজেশন ফি জমা দিয়ে পজেশন সার্টিফিকেট নিতে হবে। প্রত্যেকটি হরিণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। আগে একটি হরিণের দাম ছিলো ২৫ হাজার টাকা।

চিত্রা হরিণ লালন-পালনের পর তা বিক্রি, হস্তান্তর ও মাংসও বিক্রি করা যাবে ক্রেতাদের কাছে।

তবে যে বনে চিত্রা হরিণ পাওয়া যায় তার ১৫ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে হরিণ পালন করা যাবে না।

হরিণ বাচ্চা প্রসব করলে ১৫ দিনের মধ্যে এবং মৃত্যু হলেও ১৫ দিনের মধ্যে জানাতে হবে বন বিভাগকে।

নতুন নীতিমালা অনুমোদিত হওয়ার আগেই বন বিভাগ ও ঢাকা চিড়িয়াখানায় হরিণের লাইসেন্সের জন্য অনেক আবেদন জমা পড়েছে। শুধু ঢাকা চিড়িয়াখানাতেই আবেদন পড়েছে চার শতাধিক।

ঢাকা চিড়িয়াখানা গত বছর ৩৯টি হরিণ বিক্রি করেছে। এখন তাদের কাছে আছে দেড় শতাধিক হরিণ। বর্তমানে চিড়িয়াখানার ৫৫টি হরিণ গর্ভবতী। আবেদনের তুলনায় হরিণ কম থাকায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ আগামী ৬ মাসের জন্য হরিণ বিক্রি বন্ধ রেখেছে।

কিন্তু বন বিভাগের কাছ থেকেও চাহিদা মতো হরিণ কিনতে পারছেন না ক্রেতারা।  

বাংলাদেশ সময় : ১৮০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।