যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দীপ্ত বাঙালি। একইসঙ্গে শান্তিপ্রিয় বাংলাদেশিরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী জামায়াত-শিবিরের ধর্মের নামে রাজনীতি বন্ধের দাবিও তুলছে।
![Sirajul-islam-chowdhury Sirajul-islam-chowdhury](../../../images/PhotoGallery/2013March/Sirajul-islam-chowdhury20130306210818.jpg)
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে জামায়াত ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ‘ছাত্রসংঘ’ ধর্মের নামে মিথ্যাচার করেছে। ২০১৩ সালে যখন এ প্রজন্মের তরুণরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করেছে তখন এ দলটি এবং তাদের কথিত ছাত্র সংগঠন ‘ছাত্র শিবির’ তৃণমূলে প্রবেশ করে সাধারণ মানুষের কাছে বলছে, প্রজন্মের এ গণজাগরণ নাস্তিকদের। অপপ্রচার চালাচ্ছে যে, শাহবাগের আন্দোলন ধর্মের বিরুদ্ধে। তাদের প্রধান টার্গেট থাকে দেশের সাধারণ ধর্মভীরু মানুষ। জামায়াত-শিবির জানে, মফস্বল ও গ্রামের মানুষদের ধর্ম দিয়ে বিভ্রান্ত করতে পারলেই তাদের স্বার্থ হাসিল হবে। জামায়াতের সাঈদীর (দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী) যখন ফাঁসির রায় হলো তখনই এরা দেশব্যাপী তাণ্ডব শুরু করলো। এক পর্যায়ে তারা বলেছে, চাঁদে নাকি সাঈদীর ছবি দেখা গেছে! কতটা অবৈজ্ঞানিক এবং ধর্মান্ধ হলে এ কথা বলতে পারে।
স্বাধীনতার এতো বছর পরও এ দলটি দেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। জামায়াত-শিবিরকে প্রতিরোধ করতে হবে। গ্রামে-গঞ্জে, পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ কমিটি করতে হবে। কেননা শেকড়ে এদের দানা বাঁধলে পুরো জাতির জন্য তা অমঙ্গল হবে। সাধারণ মানুষকে ভুল পথে নিয়ে যাবে এ গোষ্ঠী।
![Anisuzzaman Anisuzzaman](../../../images/PhotoGallery/2013March/Anisuzzaman20130306210737.jpg)
সারা দেশে জামায়াত-শিবিরের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে সারাদেশে তাণ্ডব শুরু হয়েছে। তাদের লক্ষ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে তাদের মুক্তি। সারাদেশের মানুষ ’৭১-এর বিচার চায়। এর প্রেক্ষিতে শাহবাগে নতুন প্রজন্ম চত্বর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে জাগরণের সৃষ্টি করেছে। কিন্তু তাদের ইসলামবিরোধী বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আঘাত করা হচ্ছে এবং সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। ন্যক্কারজনকভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ করা হয়েছে। এসব নাশকতার প্রতিবাদ আজ সোচ্চার হতে হবে। তৃণমূল পর্যায়ে তারা দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। গণজাগরণ সম্পর্কে ভুল তথ্য দিচ্ছে। এটা নিন্দনীয়। তাদের এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর থাকতে হবে। তারা যেন বিশৃঙ্খলা ও দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সজাগ থাকতে হবে।
![de-akbar-ali-khan de-akbar-ali-khan](../../../images/PhotoGallery/2013March/de-akbar-ali-khan20130306210749.jpg)
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি খুবই উদ্বিগ্ন। ইতিমধ্যে যত সহিংস ঘটনায় সাধারণ মানুষ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিহত হওয়াসহ যত সহিংস ঘটনা ঘটেছে তার সুষ্ঠু তদন্ত এবং তদন্তের ভিত্তিতে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। সারা দেশে যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই এর সমাধান করতে হবে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকেই উদ্যোগ নিতে হবে এবং রাজনৈতিকভাবেই এর সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কে কিভাবে এই উদ্যোগ নেবে। রাজনীতিবিদদেরই এই উদ্যোগ নিতে হবে। দেশব্যাপী যে তাণ্ডব চলছে এর কোনো সমাধান বের করতে না পারলে তা পুরো জাতির জন্য অমঙ্গল বয়ে আনবে।
![Syed-shamsul-haque Syed-shamsul-haque](../../../images/PhotoGallery/2013March/Syed-shamsul-haque20130306210828.jpg)
জামায়াত জঙ্গি সংগঠন। সেই হিসেবেই একে বিবেচনায় নিতে হবে। আর জঙ্গি সংগঠন হিসেবে এখনই ওদের নিষিদ্ধ করতে হবে। ওদের বিরুদ্ধে জনতা জেগে উঠেছে। মানুষই ওদের প্রতিরোধ করবে। তবে এর আগে ওদের নিষিদ্ধ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতেই হবে। আমরা যদি আমাদের প্রিয় এ বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে অসাম্প্রদায়িক হিসেবে তুলে ধরতে চাই তাহলে রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার বন্ধ করা জরুরি। তারা যেন ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করার সুযোগ না পায় সে জন্য তৃণমূল পর্যায়ে জামায়াত-শিবির প্রতিরোধ কমিটি গড়তে হবে। জামায়াতি কর্মকাণ্ডে সোচ্চার থাকতে হবে দেশবাসীকে। ধর্ম দিয়ে বিভ্রান্ত করার জন্য ওরা ওঁত পেতে আছে।
![Rasheda-k-chowdhury Rasheda-k-chowdhury](../../../images/PhotoGallery/2013March/Rasheda-k-chowdhury20130306210808.jpg)
দেশের সহিংস ঘটনায় সবচেয়ে উদ্বেগের ব্যাপার হচ্ছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়ছে। এসএসসি পরীক্ষা বারবার পিছিয়েছে। ১২ লাখ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা যদি পেছায় তবে এ প্রজন্ম দেশের ভবিষ্যতের ওপর ভরসা হারাবে। রাজনৈতিক দলগুলো এসব শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের বারোটা বাজাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ওপর এর প্রভাব পড়বে নেতিবাজক। শুধু শিক্ষাজীবনের ওপর নয়, সহিংসতায় নেতিবাচক মানসিক প্রভাব পড়বে শিক্ষার্থীদের ওপর। আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এসব ব্যাপারে ভাবছেন কিনা জানি না।
হরতালকারীদের প্রতিহত করতে পাড়ায় পাড়ায় কমিউনিটি প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক বিবেচনায় নয় বরং জনগণের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণেই এ প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে।
ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙার সময়ে আমাদের দেশে পাড়ায় পাড়ায় কমিউনিটি করে হিন্দু-মুসলিম একসঙ্গে ধর্মীয় উপাসনালয় পাহারা দিয়েছে। এ কারণে আশঙ্কা থাকলেও বাবরি মসজিদ ভাঙ্গনের প্রভাব এখানে তেমন পড়েনি। কমিউনিটির লোকদের নিয়ে প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে পারলে সেটি সবচেয়ে ভালো।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১২ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৩
আইএইচ/এডিএ/এমএন/আরআর