ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

সরকারি কোষাগারে রাজস্ব পরিশোধে টালবাহানা গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশনের

আনোয়ারুল করিম/মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০১০
সরকারি কোষাগারে রাজস্ব পরিশোধে টালবাহানা গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশনের

সাতক্ষীরা থেকে: সাতক্ষীরায় সরকারি মাছের খামার চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে ২০ বছর মাছ চাষ করলেও সরকারকে ভূমি উন্নয়ন ফি’র ২৩ লাখ ৭৮ হাজার ৬৯০ টাকা দেয়নি গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশন’। এ অর্থ সরকারের রাজস্ব তহবিলে জমা দেওয়া কথা।



এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের রাজস্ব বিভাগ ও ভূমি দপ্তর থেকে বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও কোনো জবাব দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার চরবালিথা এলাকায় একটি চিংড়ি খামার নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার চর বালিথা মৌজার এলারচরে ৫০ দশমিক ৩১ একর একটি মাছের খামার ১৯৮৭ সালে চিংড়ি চাষের জন্য ২০ বছরের চুক্তিতে ভাড়া (লিজ) নেয় গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশন। সেই থেকে পরবতী কুড়ি বছর তারা সেটি পরিচালনা করে।

খামারটি সরকারের জেলা মৎস্য দপ্তরের প্রদশর্নী খামার। এ খামার থেকে বছরে গড়ে ৮ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয়। এ বছরও ওই খামার থেকে মাছ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।  

জেলা প্রশাসনের রাজস্ব বিভাগ জানায়, লিজের শর্ত অনুযায়ী ভূমি উন্নয়ন কর বাবদ গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশনের ২৩ লাখ ৭৮ হাজার ৬৯০ টাকা সরকারের তহবিলে পরিশোধ করার কথা ছিল। চুক্তি শেষের পর তিন বছর হয়ে গেলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি।

জেলার রাজস্ব আদায় বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান সাদিকুর রহমান বৃহস্পতিবার বাংলানিউজকে বলেন, ‘কৃষি জমির মতো শতকে এক টাকা হারে গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশন কর দিতে চায়। কিন্তু ওই জমির বাণিজ্যিক ব্যবহারের কারণে এর কর হবে শতাংশে ১৫ টাকা। ’

তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী ওই প্রতিষ্ঠানটির কাছে সরকারের পাওনা ২৩ লাখ ৭৮ হাজার ৬৯০ টাকা আদায়ে সার্টিফিকেট মামলা করা হয়েছে। সাতক্ষীরার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) আদালতে বিষয়টি বিচারাধীন আছে। ’

তিনি বলেন, ‘সরকারের জমি লিজ নিয়ে বাণিজ্যিক ব্যবহার অবশ্যই বাণিজ্যিক হারে কর আদায়যোগ্য। অন্যদের থেকেও এ হারে কর নেওয়া হয়। ’

গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশনের ভূমি উন্নয়ন কর বাবদ টাকা পরিশোধ না করার ব্যাপারটি সম্পর্কে অবগত আছেন সাতীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শেখ ইয়াকুব আলী।

তিনি বলেন, ‘যতদূর জেনেছি ওই অর্থের জন্য গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশনের সঙ্গে ভূমি দপ্তরের চিঠি চালাচালি হয়েছে। ’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শেখ ইয়াকুব আলী বৃহস্পতিবার বাংলানিউজকে বলেন, ‘চিংড়ি চাষ সম্প্রসারণ ও চিংড়ি চাষীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য সরকার ১৯৮০ সালে এই খামারটি প্রতিষ্ঠা করে। ’

তিনি বলেন, ‘১৯৮৬ সাল পর্যন্ত খামারটি জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি কর্মসূচি (এফএও)’র সহযোগিতায় সরকারের একটি প্রকল্প হিসেবে পরিচালিত হয়। ’

চিংড়ি চাষের ওই প্রকল্পটি শেষের পর এক বছর সেটি পরিচালনা করে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর।

মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয় ১৯৮৭ সালের ৬ ডিসেম্বর এই খামারটি কুড়ি বছরের জন্য গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশনকে লিজ দেয়।

মৎস্য খামারের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মিখাইল হোসেন বৃহস্পতিবার বাংলানিউজকে বলেন, ‘২০০৭ সালের ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত খামারটিতে মাছের চাষ করে গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশন। ’

বাংলাদেশ সময়: ২৩০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।