ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

মৌলভীবাজারের কুরমা সীমান্তে ৫০০ বিঘা ভূমি বিএসএফের দখলে

মুনজের আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০১১
মৌলভীবাজারের কুরমা সীমান্তে ৫০০ বিঘা ভূমি বিএসএফের দখলে

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার কুরমা সীমান্তে বিএসএফ সীমান্তের খুঁটি ভেঙ্গে বাংলাদেশের ৫০০ বিঘা ভূমি দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের দখলে রেখেছে।

সীমানা পিলার উপড়ে ফেলে কৌশলে ৫০০ বিঘা জমি বিএসএফের দখল করে নেওয়ার বিষয়টি সম্প্রতি যৌথ সীমানা জরিপের পর নিশ্চিত হওয়া গেছে।



এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গলস্থ ১৪ রাইফেলস (বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল নুরুল হুদা রোববার সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে জানান, সীমানা জরিপে বিষয়টি বেড়িয়ে আসার পর বিএসএফ তাৎণিকভাবে কোনো প্রতিবাদ করেনি। কাগজপত্রের ভিত্তিতে এই জমির মালিক বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, ‘এ জমি ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনসহ সবার সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। ’

কুরমা সীমান্তে ভারতের দখলে থাকা বাংলাদেশের জমি ভিডিও ফুটেজে সনাক্ত করে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

বিজিবির যৌথ জরিপের তথ্য ও কুরমা সীমান্তের স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারত সীমানা ভাগের সময় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কুরমা সীমান্তের চাম্পা রায় চা বাগানের পাশে একটি ছোট খালকে ঘিরে দুদেশের সীমানা নির্ধারণ করে সেখানে খুঁটি স্থাপন করা হয়। সে খালের পাশে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের ৫০০ বিঘা ভূমি মানচিত্র অনুসারে এখনো বাংলাদেশের।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯০৫ নং সীমান্ত খুঁটি এলাকার ৫০০ বিঘা ভূমি ব্যবহার করতো সেখানে বসবাসকারী চাম্পারায় চা বাগানের শ্রমিকরা। বৃষ্টির সময় পাহাড়ি ঢলের স্রোতে সীমানা হিসেবে নির্ধারিত হওয়া খালটির গতিপথ পাল্টে দুটি ধারায় পানি প্রবাহিত হতে থাকে। এসময় সুকৌশলে বিএসএফ খালের পুরাতন অংশে মাটি ভরাট করে পর্যায়ক্রমে সীমান্ত খুঁটি ভেঙ্গে ফেলে।

দীর্ঘ ৪০ বছরে বাংলাদেশ সরকার সে জায়গার কোনো খোঁজ না করায় একসময় বিএসএফ জায়গাটি দখলে নিয়ে সীমান্তে কাটা তারের বেড়া স্থাপন করে ৫০০ বিঘা ভূমি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গলস্থ ১৪ রাইফ্যালস (বিজিবির) অধিনায়ক লে. কর্নেল নুরুল হুদা বাংলানিউজকে জানান, ১৯৪৫ সালের ম্যাপে নিশ্চিত হওয়া যায় বিএসএফের দখলকৃত ভূমি বাংলাদেশের।

তিনি আরও জানান, বিষয়টি ভারতে বিএসএফকে অবহিত করে বাংলাদেশের ভূমি ফেরতের দাবি করা হয়।

এক পর্যায়ে এ ভূমির ওপর আপত্তি জানিয়ে যৌথ জরিপের আহ্বান জানান তিনি ।

গত বছর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ডিজি পর্যায়ের এক বৈঠকের সিন্ধান্ত মোতাবেক গত ১৪ ডিসেম্বর লে. কর্নেল নূরুল হুদার উপস্থিতিতে শুরু হয় দু’দেশীয় সীমানা জরিপ। আর এ জরিপে বেড়িয়ে আসে  কমলগঞ্জ উপজেলার চাম্পা রায় চা বাগানের পাশে ভারতের চন্দন নগরের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রায় ৫০০ বিঘা জমি বাংলাদেশের।

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বাংলাদেশের এ জমিটি উদ্ধারের ব্যাপারে সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে বিজিবির সেক্টর কমান্ডারদের উপস্থিতিতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। কুরমা সীমান্তের এ ৫০০ বিঘা জমি উদ্ধারের ব্যাপারে প্রয়োজনী তথ্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় এবং সেখান থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ জমি উদ্ধারের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।