মাগুরা: কানাডার টরেন্টো থেকে প্রতারণা করে ২ কোটি ডলার হাতিয়ে নেওয়া মনজুর মোর্শেদ খান আজাদকে নিয়ে প্রতিদিনই তার নিজ জেলা মাগুরায় মিলছে নতুন নতুন তথ্য।
তবে তার গুণগ্রাহীর সংখ্যাও এলাকায় কম নয় বলে জানা গেছে।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মাজাহার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘১৯৮৪সালে মাগুরাসহ বিভিন্ন জায়গার মানুষকে সৌদি আরবে চাকরি দেওয়ার নামে তখনকার হিসেবে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপন করেন আজাদ। তখন তার নিজ এলাকাসহ সর্বত্র বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক জনরোষ তৈরি হয়। এ সময় তিনি এলাকায় জনরোষ থামাতে এবং মানুষের নজর অন্যদিকে ফেরাতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিজের মৃত্যুর মিথ্যা সংবাদ টেলিগ্রামের মাধ্যমে বাড়িতে পাঠান। ওই সংবাদের পরে গ্রামে তার গায়েবানা জানাযারও আয়োজন করা হয়। ’
মাজাহার আরও বলেন, ‘দীর্ঘ বিরতির পর ১৯৯১ সালে হঠাৎ করে তারাউজিয়ালের বাড়িতে ফিরে বাড়িঘর সংস্কারের কাজ শুরু করে আজাদ। এসময় নিষিদ্ধঘোষিত চরমপন্থি দল তাকে অপহরণ করে। ঘটনার কয়েকদিন পর মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হাট ফাজিলপুর থেকে সে ছাড়া পায়। ’
পার্শ্ববর্তী কাজলী গ্রামের আব্দুল আলিম বাংলানিউজকে বলেন, ‘পারিবারিকভাবে অনেক জমিজমার মালিক থাকলেও একসময় সরকরি খাজনা না দেওয়ার কারণে তাদের পারিবারিক জমিজমা নিলাম হয়। এরপর থেকে সে টাকা আয়ের বিভিন্ন অপকৌশল গ্রহণ করে মানুষকে প্রতারিত করে আসছিল। ’
মনজুর মোর্শেদের প্রতিবেশী শ্রীপুর ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মশিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘দীর্ঘ বিরতির পর হঠাৎ করে বাড়িতে ফিরে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রচুর দান-অনুদান দিতে থাকায় এলাকায় তাকে নিয়ে বেশ কানাঘুষা চলছিল। এছাড়া অন্য কোনও ধরনের সামাজিক কাজের সাথে তিনি থাকতেন না। বাইরের কারো সাথে তেমন মিশতেনও না। তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর থেকে তাকে আর এলাকায় দেখা যায়নি। ’
এদিকে, তার প্রতারণা সংক্রান্ত সংবাদ প্রচার হওয়ার পরে এলাকায় তার কাছ থেকে মোটা অংকের সাহায্য-সহায়তা প্রাপ্তদের মধ্যে অনেককে বলতে শোনা গেছে- সাংবাদিকরা এ ধরণের সংবাদ পরিবেশন করবে জানলে ওইদিন (প্রথম সংবাদ সংগ্রহ করা ও তার বাড়ির ছবি তোলার দিন) ‘চাঁদাবাজ’ নাম দিয়ে তাদের ধোলাই দিয়ে দিতাম!
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১১