ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

তিতাসের অবহেলায় মনোহরদী-নরসিংদী লুপ লাইন হচ্ছে না

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১১
তিতাসের অবহেলায় মনোহরদী-নরসিংদী লুপ লাইন হচ্ছে না

ঢাকা: তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন অ্যান্ড ট্রান্সমিশন কোম্পানির অবহেলার কারণে বিলম্বিত হচ্ছে মনোহরদী-নরসিংদী লুপ লাইন প্রকল্পের কাজ। ৮৪ কোটি টাকার এ প্রকল্পটির টাকা ফেরত যাওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।



১১ মাস আগে হাইকোর্টে রিট দাখিল হলেও তিতাসের গাছাড়া ভাব প্রকল্পটিকে ঝুলিয়ে রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ওই রিটের শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। আবার করে শুনানি হবে সে বিষয়ে তিতাসের আইন বিভাগের কর্মকর্তারা কোনও জবাব দিতে পারেন নি। সেইসঙ্গে কি কারণে শুনানি হয়নি সে বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি তারা।

এদিকে ফরিদ আহমেদ ও শেখ হাসান আরিফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট পিটিশনটির বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা ছিলো।

কিন্তু রোববার শুননি তালিকা থেকে বাদ রিট পিটিশনটি পড়ে।

প্রকল্পটির দরপত্র চূড়ান্ত করা হলে দ্বিতীয় দরদাতার মেসার্স পাইপ লাইন অ্যাসোসিয়েট হাইকোর্টে রিট পিটিশনটি দাখিল করেন।

তিতাস সূত্র জানায়, অনেক সময় সিলেট এলাকায় গ্যাস উদ্বৃত্ত থাকলেও ঢাকায় গ্যাস সংকট থাকে। প্রকল্পটির কাজ শেষ করা গেলে সিলেটের উদ্বৃত্ত গ্যাস ঢাকার দক্ষিণাঞ্চলে নেওয়া সম্ভব হবে।

এতে ঢাকা, ডেমরা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও কদমতলী এলাকার গ্যাস সংকট অনেকাংশেই  কেটে যাবে।

২০১০ সালে গৃহীত এ প্রকল্পটির দরপত্র কমিটি মেসার্স প্রবাহ প্রকৌশলী অ্যান্ড জেভিকে ঠিকাদার মনোনীত করে।

ঠিকাদার নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে দ্বিতীয় দরদাতা মেসার্স পাইপ লাইন অ্যাসোসিয়েট ২০১০ সালের ১৪ ডিসেম্বর  হাইকোর্টে  রিট পিটিশন দাখিল করে (নং ৯৬৬৬/১০)।

রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত শুনানির আগে প্রকল্পটির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে কাজ শুরুর আগেই প্রকল্পটি ঝুলে যায়।

এ ব্যাপারে তিতাসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের খামখেয়ালির কারণে এ অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ’

কর্মকর্তাদের দুর্নীতিকে দায়ী করে একটি সূত্র বলেছে, ‘সঠিক নিয়ম মেনে ঠিকাদার নিয়োগ দিলে অন্য দরদাতার রিট করার সুযোগ থাকত না। আর রিট করলেও তারা নিষেধাজ্ঞা পেত না।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ডিপিপিতে অনুমোদিত এ প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৮৪ কোটি ৯ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা। যা তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি. এর অর্থায়নে সম্পন্ন হওয়ার কথা। ’

প্রকল্পের আওতায় নরসিংদী ভাল্ব স্টেশন থেকে ২৫ কিলোমিটার (২০ ইঞ্চি গুণ ১০০০ পিএসআই) সমান্তরাল পাইপ লাইন নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্পটি ২০১০-১১ অর্থবছরে সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক (আইন বিভাগ) রঞ্জন কুমার দত্ত কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে মামলার কারণে বিলম্বিত হলে প্রকল্পটির টাকা ফেরত যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিতাসের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহজাহান মিয়া।

‘আর এমনটি হলে প্রকল্পটির ভবিষ্যত অনেকটাই অনিশ্চিত বলে ধরে নেওয়া যায়। ’

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল আজিজ খান বাংলানিউজকে জানান, প্রকল্পটি বাস্তবতার প্রেক্ষিতে খুবই প্রয়োজনীয়। আমাদের পক্ষ থেকে সব রকম চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।