ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

নীতিমালা মানা হচ্ছে না ইসলামী ব্যাংকিংয়ে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৬
নীতিমালা মানা হচ্ছে না ইসলামী ব্যাংকিংয়ে

মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে ব্যবসা করছে দেশের ইসলামী ব্যাংকগুলো। আমানত সংগ্রহ, বিনিয়োগ, বাণিজ্য তার কোনো ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না ইসলামী ব্যাংকিং নীতি। এভাবে তারা আমানতকারীদের সঙ্গে প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গ করছে।

ঢাকা: মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে ব্যবসা করছে দেশের ইসলামী ব্যাংকগুলো। আমানত সংগ্রহ, বিনিয়োগ, বাণিজ্য তার কোনো ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না ইসলামী ব্যাংকিং নীতি।

এভাবে তারা আমানতকারীদের সঙ্গে প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গ করছে।

বুধবার (৩০ নভেম্বর) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত ইসলামী ব্যাংকিংয়ে সুশাসন শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপন করা গবেষণা পত্রে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামী ব্যাংকিং পরিচালনার জন্য বাংলাদেশে একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা দরকার। ইসলামী ব্যাংক শুধু শেয়ার হোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষার জন্য নয়, সব গ্রাহকদের আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে কাজ করবে এমনটা শরিয়া নীতিমালায় রয়েছে। যা পুরোপুরি মানা হচ্ছে না।

বাংলাদেশে তিন ধরনের ইসলামী ব্যাংকিং করে এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটি ভাগ রয়েছে। কিছু ব্যাংক পুরোপুরি ইসলামী ব্যাংকিং করে (এ১ ক্যাটাগরি), কোনো কোনো ব্যাংক কয়েকটি শাখার মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকিং পরিচালনা করে (এ২ ক্যাটাগরি) এবং কিছু ব্যাংক কয়েকটি উইন্ডোর (এ৩ ক্যাটাগরি) মাধ্যমে এটি করে থাকে।

এ১ ক্যাটাগরির গড় সুশাসনের হার ৮৩ শতাংশ। আর এ ক্যাটাগরির দু’টি ব্যাংক রয়েছে যারা সর্বোচ্চ সুশাসন রয়েছে ৮৯ শতাংশ। তবে সুশাসনের সর্বনিম্ন পর্যায় হলো ৭৮ শতাংশ। সুশাসনের হিসেব করা হয়েছে এএওআইএফআই’র ৫টি স্ট্যান্ডার্ডের ওপর ভিত্তি করে।

এ২ ক্যাটাগরির ব্যাংকগুলো সুসাশনের সর্বোচ্চ হার হলো ৮৩ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৭৯ শতাংশ। আর এ৩ ক্যাটাগরির ব্যাংকগুলো সব ধরনের সুশাসনের স্ট্যান্ডার্ডগুলো মেনে চলে না। ফলে তাদের গড় সুশাসনের হার অনেক কম, যা ৫৯ শতাংশ। আর এ ধরনের ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ সুশাসনের হার ৭২ এবং সর্বনিম্ন হার ২৮ শতাংশ।

শরিয়া বোর্ডের নিয়মানুযায়ী, ৫টি ক্যাটাগরিতে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের কাজগুলোকে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে প্রথমে রয়েছে যাদেরকে সংজ্ঞায়িত করা হয় ‘আন্ডারডেভেলপড’ বলে। দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাংকগুলোকে ‘ইমারজিং প্র্যাকটিস’, তৃতীয় পর্যায়ে ‘ইমপ্রুভড প্র্যাকটিস’,  চতুর্থ পর্যায়ের ‘গুড প্র্যাকসিট’ এবং সর্বশেষ ‘বেস্ট প্র্যাকটিস’ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয় নির্দিস্ট নাম্বারের ভিত্তিতে।

এক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোনো ব্যাংক প্রথম দুই ক্যাটগরিতে নেই। তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে ৩৩ শতাংশ, ৫০ শতাংশ রয়েছে চতুর্থ পর্যায়ে এবং ৫ম পর্যায়ে রয়েছে ১৭ শতাংশ ব্যাংক যারা ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রম করে থাকে। তবে অন্যান্য যেসব দেশ শরিয়া ভিত্তিতে পরিচালিত হয় তাদের মধ্যে বাংলাদেশ সুশাসনে এগিয়ে রয়েছে। যেমন বাংলাদেশের ১৭ শতাংশ ব্যাংক বেস্ট প্র্যাকটিস করলেও মালয়েশিয়ার জিসিসি দেশগুলো এবং যুক্তরাজ্যের কোনো ইসলামী ব্যাংক এখনো এ পর্যায়ে আসতে পারেনি।

বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী ব্যাংকের সাবেক এমডি ফরিদউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও বিমা বিভাগের অধ্যাপক এম মুজাহিদুল ইসলাম ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ইয়াসিন আলী।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৬
এসই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।