ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ব্যাংকিং

নির্বাচনের আগে ব্যাংক খাতের সাফল্য জানালো এবিবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮
নির্বাচনের আগে ব্যাংক খাতের সাফল্য জানালো এবিবি এবিবি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন | ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ব্যাংকিং খাতের দশ বছরের অর্জন ও সাফল্য তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেছে ব্যাংক এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)। তবে ব্যাংক খাত থেকে ২২৫০২ কোটি টাকা লুটপাটের বিষয়ে সিপিডির প্রকাশ করা তথ্য নিয়ে বিষোদগার করেছেন এমডিরা।

বুধবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বক্তব্য রাখেন এবিবি’র সভাপতি ও ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমা।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর দেশের প্রথম বাজেট ছিল ৭৮৬ কোটি টাকার।

দশ বছর আগে ছিল ৮৭ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা। সেই বাজেটের আকার বেড়ে হয়েছে ৪ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। অর্থনীতির আকার বহুগুণ বেড়েছে। ব্যাংকখাতসহ সবাই মিলে এ উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু সবসময় নেগেটিভ দিক নিয়ে আলোচনা হয়। কাজ করতে গেলে ভুলভ্রান্তি হতেই পারে। যেসব নিউজ সংবাদমাধ্যমে আসে সেগুলো একটি নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করে। ব্যাংকখাতে অনেক সাফল্য আছে সেগুলো নিয়েও কথা বলা উচিত।

চলতি বছরের ৮ ডিসেম্বর সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ এক সেমিনারে ব্যাংকিং খাত থেকে ২২৫০২ কোটি লোপাটের তথ্য প্রকাশ করে। সিপিডির ওই তথ্য প্রকাশের তিনদিন পর দশ বছরে ব্যাংক খাতের সাফল্য তুলে ধরে এবিবি।

এতে ব্যাংকের এমডিরা গত দশ বছরের ব্যাংকগুলোর বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরেন। তবে ১ লাখ কোটি টাকা খেলাপিঋণ এবং সংঘটিত অনিয়ম সম্পর্কে তারা কোনো তথ্য দেননি। এসব বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, ব্যাপক অর্জনের মধ্যে কিছু অনিয়ম হয়েছে।

সিপিডি’র প্রকাশ করা তথ্য নিয়ে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করা হয়নি দাবি করলেও এবিবি নেতারা বলেন, গবেষক ও বিশ্লেষকদের নেতিবাচক বিশ্লেষণ আমাদের পীড়া দেয়। তাদের উচিত আমাদের অর্জন নিয়েও কথা বলা।

ব্যাংকের কোনো ইস্যুতে সাধারণত এবিবি এ ধরনের সংবাদ সম্মেলন করে না। ৫ বছর আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর নিয়ে একবার সংবাদ সম্মেলন করেছিল এবিবি। নির্বাচনের আগে কেন এই সংবাদ সম্মেলন এমন প্রশ্নের জবাবে এবিবি সভাপতি ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, এর সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। বিজয়ের মাসে স্বাধীনতার ৪৫ বছরের অর্জন সম্পর্কে জানানোর জন্য সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে ব্যাংক খাতের অবদান তুলে ধরেন এবিবি’র সাধারণ সম্পাদক ও ব্যাংক এশিয়ার এমডি মো. আরফান আলী। তিনি বলেন, ব্যাংকের আকার অনেক বড় হয়েছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং চালু করার ফলে অনেক মানুষ সেবা পাচ্ছেন। ব্যাংকগুলোর ১০ হাজার শাখা, ৭৫৮টি ক্ষুদ্রঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান, ৩৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান,  ১৭টি বিমা ও ৮২ হাজার ৩৪৬টি সমবায় সমিতি  গড়ে উঠেছে। এর ফলে ব্যাংকিংয়ে সবাই আসছে। ২০১৩ সালে ১ লাখ মানুষের জন্য শাখা ছিল ৮টি এখন বেড়ে হয়েছে ৯টি, এটিএম ৫টি থেকে বেড়ে হয়েছে ৮টি, মোবাইল আউটলেট ১৮৬টি থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৬৭টি। বর্তমানে ৫০ শতাংশ মানুষের অ্যাকাউন্ট আছে যেখানে ২০১৪ সালে ছিল ৩১ শতাংশ। মোট অ্যাকাউন্টের ৩৫ শতাংশ নারীদের। অর্থাৎ সবক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে।

আইএফআইসি ব্যাংকের এমডি শাহ এ সারওয়ার বলেন, দেশের অর্থনীতির ব্যাপক উল্লম্ফন হয়েছে। ঐতিহ্যগত বিনাপুঁজি থেকে আমরা পরিশ্রম করে অর্থনৈতিকভাবে অনেক উন্নতি করেছি। এর পেছনে ব্যাংকগুলো অর্থায়ন করে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছে। কিছু ভুলের কারণে শুধু নেতিবাচক আলোচনা করা উচিত নয়।

অগ্রণী ব্যাংকের এমডি শামস উল ইসলাম বলেন, ব্যাংকিং খাতে অকল্পনীয় অগ্রগতি হয়েছে। ব্যাংক খাত শক্তিশালী বলেই জিডিপি প্রবৃদ্ধি ভালো হচ্ছে, নিজের টাকায় পদ্মাসেতু করা সম্ভব হচ্ছে। এসব উন্নয়নের চিত্র নিয়ে আমরা বাহাস করতে চাই। যে কেউ আমাদের সঙ্গে বাহাস করতে আসতে পারেন।

ইসলামী ব্যাংকের এমডি মাহবুবুর রহমান বলেন, ব্যাংকের চেষ্টার ফলে উদ্যোক্তা শ্রেণি গড়ে উঠেছে। স্বাধীনতার সময় ব্যবসা-বাণিজ্য ২২ পরিবারের হাতে ছিল। ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর পোশাকখাতসহ বড় বড় শিল্প ব্যাংকের হাত ধরে বড় হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।