ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফেড আমাদের সঙ্গে আছে: গর্ভনর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৯
মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফেড আমাদের সঙ্গে আছে: গর্ভনর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়ার অর্থ উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইর্য়ক (ফেড) সঙ্গে রয়েছে বলে জানিয়েছেন গর্ভনর ফজলে কবির।

শনিবার (০২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিআইবিএম মিলনায়তনে ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (আইবিবি) এর ১১তম পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
 
নিউইর্য়কের ব্যাংকে রক্ষিত রিজার্ভ চুরির ঘটনায় গত ৩১ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ফিলিপাইনের ম্যানিলার রিজাল কর্মাশিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন কোর্টে মামলা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

 
 
গর্ভনর ফজলে কবির বলেন, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইর্য়কের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে মামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তারা আমাদের (বাংলাদেশ ব্যাংক) সঙ্গে থাকবে। প্রত্যেকটি ডলার উদ্ধার না পর্যন্ত ফেড আমাদের সঙ্গে রয়েছে।
 
কতদিনের মধ্যে এই অর্থ উদ্ধার হতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা এখনও বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে দ্রুত টাকা আদায় করতেই নিউইর্য়কের আদালতে মামলা করা হয়েছে। এই মামলা ফিলিপাইনে করলে অনেক দেরি হতো। নিউইয়র্কে এই সমস্যা হবে না। দ্রুতই টাকা পাওয়া যাবে।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলাকে আরসিবিসি ভিত্তিহীন বলেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে ফজলে কবির বলেন, আরসিবিসি এটা বললেও স্বীকার করতে হবে সমস্ত টাকা তাদের ব্যাংকের মাধ্যমেই ক্যাসিনোতে গেছে। ৮১ মিলিয়ন ডলারের পুরোটাই আরসিবিসির চারটি ভুয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে।
 
ব্যাংকিং লেনদেনের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সুইফটে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফিলিপাইনের আরসিবিসিতে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও শ্রীলঙ্কার দুটি ব্যাংকে ২ কোটি ডলার স্থানান্তর করা হয়েছিল। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কার ব্যাংকে স্থানান্তর হওয়া ২ কোটি ডলার ফেরত আনা হয়েছে।  

ফিলিপাইনের আরসিবিসি থেকে ফেরত আনা হয়েছে ১ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। এখনও ফেরত আনা সম্ভব হয়নি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার।  
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুত্র জানায়, এই অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্যই যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করা হয়েছে। আইনি লড়াই মোকাবেলা করার জন্য দেশটিতে দুটি ল’ফার্মকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। টাকা উদ্ধারে ল'ফার্ম দুটির সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে যে, চুরি যাওয়া ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার উদ্ধার করে দিতে পারলে ল’ফার্ম দুটিকে মোট অর্থের ১০ শতাংশ দেওয়া হবে।
 
জানা যায়, হ্যাকাররা চুরির অর্থ ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখার চারটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে। সেখান থেকে ওই অর্থ ফিলিপাইনের মুদ্রা পেসোতে রূপান্তরের পর দুটি ক্যাসিনোতে পাঠানো হয়।  
 
রিজার্ভ চুরির এই ঘটনায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি আরসিবিসির সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতোকে সাজা দেন ফিলিপাইনের আদালত। এছাড়া তাকে সর্বমোট ১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার জরিমানা করেছে দেশটির আদালত।
 
অনুষ্ঠানে বিআইবিএমের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুর রহিম ও বিআইবিএম সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরীসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৯
এসই/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।