ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

কুমিল্লার পর বন্যা পরিস্থিতির অবনতি সিলেট অঞ্চলে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২৪
কুমিল্লার পর বন্যা পরিস্থিতির অবনতি সিলেট অঞ্চলে

ঢাকা: বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলের পর এবার সিলেট অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। কেননা, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীর পানি হুহু করে বাড়ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এমন তথ্য জানিয়েছে।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, কুশিয়ারার পানি সিলেটের অমলমীদে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, শেওলায় ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, শেরপুর-সিলেটে ৫ সেন্টিমিটার ওপর ও সুনামঞ্জের মারকুলীতে বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

মনু নদের পানি মৌলভীবাজার রেলব্রিজ ও মৌলভীবাজারে যথাক্রমে বিপৎসীমার ৯৩ ও ১১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, হবিগঞ্জের বাল্লায় খোয়াইয়ের পানি ২৭৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও হবিগঞ্জে ১৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।



অন্যদিকে কুমিল্লায় গোমতীর পানি বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও দেবীদ্বারে ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, চট্টগ্রামের রামগড়ে ফেনী নদীর পানি ২১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, নারায়ণহাটে হালদার পানি ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও পাঁচপুকুরিয়ায় হালদার পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে মুহুরীর পানি মাপার স্কেল বানে ডুবে যাওয়ায় তথ্য দিতে পারেনি পাউবো। এ নদীর পানি ত্রিপারের পার্টে গত ৪১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এতে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি।

২০০৪ সালে মহুরী নদীর পানি রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল। মহুরীর নদীর বিপৎসীমা হচ্ছে ১২ দশমিক ৫৫ মিটার, বুধবার (২১ আগস্ট) তা ওঠেছে ১৩ দশমিক ৪২ মিটারে। আর ২০০৪ সালে ১৪ দশমিক ৭৯ মিটার উচ্চতায় ওঠেছিল পানির স্তর।

পাউবো জানিয়েছে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত একদিনে পূর্বাঞ্চলীয় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকাসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়েছে। ফলে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলে বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি ঘটেছে।

আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী একদিনে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদী সমূহের সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরবর্তীতে উন্নতি হতে পারে।

আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, একই সময়ে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে। এ সময় এ অঞ্চলের ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী, ফেনী, গোমতী, হালদা ইত্যাদি নদীসমূহের সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরবর্তীতে উন্নতি হতে পারে।

ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, অপরদিকে পদ্মা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে। আগামী দু’দিনে এ সকল নদীর পানির সমতল হ্রাস পেতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আরও একদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২৪
ইইউডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।