ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

চৌদ্দগ্রামে ইউনিডো ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচ্ছন্নতা অভিযান

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২৪
চৌদ্দগ্রামে ইউনিডো ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচ্ছন্নতা অভিযান

দেশব্যাপী প্লাস্টিক বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশগত দূষণের বিষয়ে ৬০টি পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চলমান কর্মসূচির দ্বিতীয় উদ্যোগ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থা-ইউনিডোর টেকসই প্লাস্টিক দ্রব্য ব্যবস্থাপনা এবং বাংলাদেশে নৌ-বর্জ্য প্রতিরোধক কর্মসূচির আওতায় বুধবার (১১ ডিসেম্বর) চৌদ্দগ্রাম উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠান বাস্তবায়িত হয়।

 

কর্মসূচিটি সরকারের পরিবেশ অধিদপ্তর এবং ইউনিডো-এর যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে নরওয়ে দূতাবাসের আর্থিক সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।

এই কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্য হলো একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহার সংকোচন এবং তার পরিবর্তে পুনর্ব্যবহারযোগ্য এবং পুনঃপ্রক্রিয়াযোগ্য প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহারের ব্যাপারে গণসচেতনতা বাড়ানো। এই কর্ম উদ্যোগ পরিচালিত হচ্ছে গণস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য হুমকি প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে এবং প্লাস্টিকের টেকসই বিকল্প ব্যবহারে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মো. রহমত উল্লাহ্। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনিডোর ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সত্য রঞ্জন ভট্টাচার্য ও ইউনিডোর ন্যাশনাল এক্সপার্ট এম. এম. আরাফাত।

স্বাগত ভাষণে কুমিল্লার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক খন্দকার মাহমুদ পাশা আগত অতিথি ও ২০টি পরিবেশ ও গণস্বাস্থ্য বিষয়ক বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানকে অংশ নেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান।

তিনি জানান, প্লাস্টিক দূষণ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় এরই মধ্যে ২০টি মামলা করা হয়েছে এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে পরিবেশগত পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে মানুষ ক্রমেই সচেতন হয়ে উঠছে।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রহমত উল্লাহ্ বলেন, প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে সবার সম্মিলিত উগ্যোগে প্রয়োজন। পলিথিন ও প্লাস্টিক দ্রব্যাদির ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়েছে। পাশাপাশি সমাজে দূষণের বিরুদ্ধে সচেতনতাও বেড়েছে। এই অপচনশীল বর্জ্যের কারণে আমাদের ড্রেইনগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে, যার কারণে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।  

ইউনিডোর ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সত্য রঞ্জন ভট্টাচার্য বর্জ্যস্তুপের ভয়াবহতা প্রসঙ্গে বলেন, প্রতিদিন গড়ে এক লাখ ৬০ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রে গিয়ে পড়েছে, এ থেকে সৃষ্টি হচ্ছে মাইক্রোপ্লাস্টিকস, যা নৌ জীবনচক্র মারাত্মকভাবে দূষিত করছে।  

ইউনিডোর তিনটি মৌলিক অঙ্গীকার তুলে ধরে তিনি বলেন, তিনটি ‘আর’ (অর্থাৎ রিডিউজ, রিইউজ এবং রিসাইকেল) নিয়ে আমরা কাজটি করছি এবং পরবর্তী উদ্যোগে আমরা এই লক্ষ্যে প্লাস্টিক সামগ্রীর উৎপাদনকারীদেরও এ ধরনের কর্মসূচিতে সংশ্লিষ্ট করবো।  

ইউনিডোর ন্যাশনাল এক্সপার্ট এস.এম. আরাফাত তার ভাষণে প্লাস্টিক বর্জ্য পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ বা রিসাইক্লিংয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।  

কুমিল্লার পরিবেশ পরিদর্শক জোবায়ের হোসেন বলেন, বাংলাদেশের নদী-নালা, খাল ও জলাধারে দৈনিক ৮ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য নিক্ষিপ্ত হয়, যা অত্যন্ত ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ।  

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ. কে. মীর হোসেন, চৌদ্দগ্রামের সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকিয়া সরওয়ার লিমা এবং বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্যাডেট ফোরামের চেয়ারম্যান শাহ মুজিবুল হক প্রমুখ।  

তারা পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে গণসচেতনতা বৃদ্ধি, বিশেষ করে দেশের তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

২০টি পরিবেশ সংগঠনের প্রায় ২৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী এই পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি ও আলোচনা সভায় অংশ নেন। যাদের মধ্যে ছিল রেড ক্রিসেন্ট, সিভিল ডিফেন্স অ্যান্ড ফায়ার সার্ভিস, বিএনসিসি, রোড সেফটি মুভমেন্ট, চৌদ্দগ্রাম হেল্পলাইন-সহ বেশকিছু স্থানীয় এনজিও এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।  

অতিথি এবং পরিবেশকর্মীরা নিজ হাতে অর্ধ দিবসব্যাপী এই অভিযানে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে ৩৫০ কেজি বর্জ্য অপসারণ করেন। উপজেলা পরিষদ এলাকায় বিভিন্ন জাগরণী বাণী সমৃদ্ধ ফেস্টুন, ব্যানার প্রভৃৃতি প্রতিস্থাপিত হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২৪
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।