ঢাকা: কেবল নিজের প্রাণ বাঁচাতেই নয়, স্বজাতিদের শিকারির হাত থেকে রক্ষা করতেও সংকেত দেয় থর্নবিল পাখি। ভয় পেলে এরা বিভিন্ন পাখির স্বর নকল করে সংকেত দেয় শিকারি প্রাণী আসছে, ঘর ছেড়ে বাইরে যেতে হবে।
শিকারি পাখিকে বিভ্রান্ত করতে এরা বিভিন্ন পাখির ডাক নকল করে। কখনও কখনও শিকারি পাখি মনে করে আশপাশে ওর চেয়ে বড় কোনো পাখি রয়েছে। ফলে পালিয়ে যাওয়ার মতো সময় পায় থর্নবিল।
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এএনইউ) বিশেষজ্ঞরা ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেনে এক গবেষণা শেষে এসব তথ্য জানান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কিছু পাখি রয়েছে যারা শিকারিদের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে এবং অন্যদের সতর্ক করতে নির্দিষ্ট শব্দ ব্যবহার করে। কিন্তু থর্নবিলের ক্ষেত্রে বিষয়টি একেবারেই আলাদা। শিকারি প্রাণীর হাত থেকে বাঁচতে অন্য পাখির ডাক নকল এক দারুণ কৌশল, বলেন এএনইউ রিসার্চ স্কুল অব বায়োলজির সাবেক শিক্ষার্থী ডা. ব্রানিস্লাভ আইজিক।
গবেষণাটি তিনি পিএইচডি করার সময় করেন। গবেষণায় প্রথম বারের মতো দেখা যায়, কোনো পাখি শিকারিদের হাত থেকে বাঁচার জন্য এমন ‘হরবোলা’ রূপ নিতে পারে। কেবল নিজেকে বাঁচাতেই নয়, স্বজাতিদের সংকেত দিতেও এরা এমন আচরণ করে থাকে।
তিনি বলেন, থর্নবিল আকারে ছোট হওয়ায় শিকারি পাখি এদের বাসায়ও হামলা চালায়। ফলে আত্মরক্ষার জন্যই এরা নিজেদের আকারের বড় পাখির ডাক নকল করে।
শিকারি বাজপাখি এলে এরা কখনোই বাজপাখির ডাক নকল করে না। থর্নবিলের তুলনায় বাজপাখি ৭৫ গুণ বড় হওয়ায় ছয় গ্রাম ওজনের পাখির পক্ষে বাজপাখির ডাক নকল করা কঠিন। আরও একটা বিষয় হলো, বাজপাখি যখন শিকার করে তখন এরা ডাকে না। ফলে কোনো একটা পাখির ডাক নকল করলে ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
স্কুল অব বায়লোজির গবেষক অধ্যাপক রবার্ট মাগ্রাথ বলেন, শিকারি পাখি কাছে আসার পরে থর্নবিলের প্রতিক্রিয়া কেমন হয় জানার জন্য পেঁচার ডাক শোনানো হয়। এরপর আমরা রবিন, হানিইটার ও রোসেলাস পাখির ডাক শুনতে পাই। কিন্তু একটি পাখিও দেখতে পাওয়া গেলো না।
গবেষকরা থর্নবিলের বাসায় ব্যবহার করে কুরং পাখির প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য। সাধারণত প্রতি প্রজনন মৌসুমে এরা প্রায় দুই কেজি বাচ্চা পাখি খেয়ে ফেলে। যখন গবেষকরা থর্নবিলের রেকর্ড করা ডাক শোনায় তখন ১৬ সেকেন্ড পর্যন্ত কুরং পাখি বিভ্রান্ত হয়ে থাকে, যা বাচ্চা নিয়ে বাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ঠ। ৎ
বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১৫
এটি/এএ