ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

সঙ্গী পটাতে ভালো বাবা হওয়ার প্রতিশ্রুতি নাইটিঙ্গেলের

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৫
সঙ্গী পটাতে ভালো বাবা হওয়ার প্রতিশ্রুতি নাইটিঙ্গেলের

ঢাকা: সুমধুর ডাকের জন্য নাইটিঙ্গেলের খ্যাতি রয়েছে। তবে তার চেয়েও মজার বিষয়, সঙ্গী পটানোর জন্য নাইটিঙ্গেল ভালো বাবা হওয়ায় প্রতিশ্রুতি দেয়! শুনতে অবাক লাগলেও এমন কথাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।



একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে তারা বলেন, সঙ্গীর খোঁজে যখন পুরুষ নাইটিঙ্গেল ডাকে তখন এরা বিভিন্ন ধরনের ধারাবাহিক সুর, গুঞ্জন, শিস ও কাঁপা স্বর ব্যবহার করে।

যারা ভালো ডাকে তারা বেশি দায়িত্বশীল হয় এবং নারী নাইটিঙ্গেল ডাক শুনলে বুঝতে পারে সন্তানদের খাবার সংগ্রহ করে দেওয়া, নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষ কতটুকু দায়িত্বশীল হবে। আর এভাবেই তারা সঙ্গী নির্বাচন করে।

গবেষণাটিতে নেতৃত্ব দেন বার্লিনের দ্যা ফ্রি ইউনিভার্সিটির গবেষক কোনি বার্সক।

তিনি বলেন, সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আকার ও পুরুষ নাইটিঙ্গেল কেমন গাইতে পারে, নারী পাখির জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণাটিতে উঠে এসেছে পুরুষ পাখির ডাকের নির্দিষ্ট ধরন লক্ষ্য করে নারী পাখি।

কারণ হিসেবে দেখা গেছে, শতকরা প্রায় ৮০ শতাংশ প্রজাতির পাখি ছানার বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পুরুষ পাখি। বাবা হওয়ার পরে
তাদের মূল দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায় সন্তানদের খাবার সংগ্রহ করে দেওয়া, নিরাপদ জায়গায় বাসা নির্মাণ করা ও শিকারিদের হাত থেকে সন্তানদের রক্ষা করা।
এসব কারণে সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারী পাখি দায়িত্বশীলতাকে প্রথম মূল্যায়ণে রাখে।

গবেষকদের মতে, এ বিষয়গুলো সামনে আসার পরে বলা যেতে পারে পুরুষ পাখি নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দেয় ডাকের মধ্য ‍দিয়ে। যদিও পুরুষ নাইটিঙ্গেল প্রায় ১৮০ ধরনের ভিন্ন সুরে গাইতে পারে, তবে লক্ষ্য করার বিষয় সুর নয়, বরং গায়কি।

নাইটিঙ্গেলের গানের আগে সঙ্গী হিসেবে পুরুষ পাখির যোগ্যতা নিয়ে গবেষণা করা হয়।

সেখানে দেখা যায়, সন্তানদের খাবার সংগ্রহ করে দেয় যেসব পাখি তারাই মূলত ভালো সঙ্গী। পরের গবেষণায় দেখা যায়, দায়িত্বশীল এসব পাখিগুলোই ভালো গাইতে পারে।

প্রজনন মৌসুমের আগে ২০টি নাইটিঙ্গেলের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ইলেক্ট্রনিক ট্যাগের মাধ্যমে বাসা নির্মাণ থেকে শুরু করে বাবার দায়িত্ব পালন পর্যন্ত সমস্ত চলচ্চিত্র সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করেন গবেষকরা।

দায়িত্বশীল পুরুষদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, নারী পাখি সন্তানদের নিয়ে যখন বাসায় থাকে ও পুরুষ পাখি খাবার সংগ্রহ করতে যায়, তখন সঙ্গী এবং সন্তানদের খাবার নিয়ে আসার পাশাপাশি ঘণ্টায় গড়ে প্রায় ১৬ বার এরা সন্তানদের খবর নিতে বাসায় আসে।

প্রজনন মৌসুমে তাই পুরুষ নাইটিঙ্গেলের গান ও গানের মান সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বলেন বার্সক।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৫
এটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।