ঢাকা: গভীর সমুদ্র তেল ও গ্যাস উৎপাদন প্রকল্পে বিস্ফোরণ ও সমুদ্রে তেল ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা আদালত পর্যন্ত গড়ানোর পরে ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়েছে মার্কিন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বিপি পিএলসি।
২০১০ সালের ২০ এপ্রিল মেক্সিকো উপকূলে বিপি’র মালিকানাধীন ট্রান্সওশেন লিমিটেড পরিচালিত ম্যাকোন্দো প্রোসপেক্টে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এতে ব্যাপকভাবে সমুদ্রে তেল ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। টানা ৮৭ দিন পরে, ওই বছর ১৫ জুলাই তেল নির্গমনের সবগুলো পথ বন্ধ করা সম্ভব হয়। এ ঘটনায় পরিবেশ ও উপকূলীয় অঞ্চলের অর্থনীতির ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
দীর্ঘ দিন যাবৎ এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্ষতিপূরণ দাবি করে আসছিল পরিবেশবাদিরা।
ক্ষতিপূরণ আদায় করতে কেয়ার-টু নামে একটি পরিবেশবাদী সংগঠন তাদের ওয়েবসাইটে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু করে। দেড় লাখেরও বেশি স্বাক্ষর সংগ্রহ শেষে সংগঠনটি বিপি কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠালেও ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে প্রতিষ্ঠানটি। ফলে বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
ডিস্ট্রিক্ট জজ কার্ল বারবিয়ের প্রথমে বিপি’র পক্ষে অবস্থান নিয়ে রুল জারি করেন। কিন্তু এর তিনদিন পর সম্প্রতি এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ডিস্ট্রিক্ট জজের রুল বাতিল করে দেন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত। এরপরই ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয় বিপি পিএলসি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিপি’র সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই বলেই এবার তারা এ ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়েছে।
প্রস্তাবিত প্রাথমিক চুক্তি অনুযায়ী, পরিবেশ ও অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে ক্ষতিপূরণ হিসাবে কোম্পানিটিকে গুণতে হবে ১৮ বিলিয়ন ডলার (১ লাখ ৩৯ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা)।
প্রতি বছর ১ বিলিয়ন ডলার (৭ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা) করে ১৮ বছর ধরে এ ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করতে হবে। এর মধ্যে ১২.৬ বিলিয়ন ডলার (৯৭ হাজার ৮৮২ কোটি ৪০ লাখ টাকা) পাবে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকার। বাকি অর্থগুলো পাবে লুসিয়ানা, মিসিসিপি, আলবামা, ফ্লোরিডা ও টেক্সাসের রাজ্য সরকার এবং আরও চার শতাধিক স্থানীয় সরকার।
তবে ক্ষতিপূরণের এ প্রস্তাব চূড়ান্ত হবে জনমত ও আদালতের রায়ের পরই। সেক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের অর্থ ও তা পরিশোধের সময়সীমায় খানিকটা পরিবর্তনও আসতে পারে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ছয়টি তেল ও গ্যাস কোম্পানির একটি বিপি পিএলসি’র নাম অতীতে ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৫
আরএইচ/এটি