ঢাকা: ধারণা করা হতো অজগর শিকার ধরার পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণা শেষে বিশেষজ্ঞরা বলছেন শ্বাসরোধ করে নয়, রক্ত সঞ্চালন বন্ধ করে শিকারের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ করে দেয় অজগর।
অজগরের প্রথম কামড়েই ইঁদুরের শরীর অবস হয়ে যায়। মার্কিন গবেষকরা ইঁদুরের রক্তচাপ ও হৃদকম্পন পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন, অজগর রক্ত সঞ্চালন বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে সেকেন্ডের মধ্যে ইঁদুরের হৃদকম্পন অস্বাভাবিক হয়ে যায়।
পেনিসলভেনিয়ার ডিকিন্স কলেজের সাপ গবেষক স্কট বোব্যাক বলেন, সাপ জড়িয়ে ধরার পরে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হওয়ায় শিকারের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। ফলে শ্বাসরোধে নয়, যেকোনো প্রাণীই হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়। বিষয়টি শুনতে খুব হালকা লাগলেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে, ইঁদুর মৃত্যুকালে ব্যথা পাচ্ছে কিনা। কেবল অজগর নয়, বোয়া’র ক্ষেত্রে বিষয়টা একই। ডা. বোব্যাক অর্ধশত বোয়া গবেষণাগারে নিয়ে পরীক্ষা করেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখেছি শিকার ধরার পরে সাপ প্রচণ্ড শক্তি দিয়ে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। ইঁদুর সাপের কবলে পড়ার পরে যখন রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয় এবং অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়, তখন হৃদকম্পন অস্বাভাবিক হয়ে যায়।
সাপ তার শক্তি অপচয় রোধে হার্ট অ্যাটাক নিশ্চিত হওয়ার পরেই কুণ্ডলি থেকে শিকারকে ছেড়ে দেয়। বোয়া একই কৌশল অবলম্বন করে তার তুলনায় অনেক বড় প্রাণী শিকার করে খায়। যেমন ইঁদুর, পাখি, বাঁদর, বুনো শূকর ও সজারু।
এর আগে ১৯২৮ সালে গবেষক ফ্যাঙ্ক এমসিলি অ্যান্টিভেনিন ইনস্টিটিউট অব অ্যামেরিকা প্রকাশিত একটি স্মরণিকায় অজগর এবং বোয়া সাপ তার শিকারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এ ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেন।
ডা. বোব্যাকের বন্ধু বায়োলজিস্ট ডাভ হার্ডি ১৯৯৪ সালে দাবি করেন শ্বাসরোধ কখনও হত্যার কৌশল হতে পারে না। কিন্তু এই প্রথম সেই হাইপোথিসিস গবেষণাগারে পরীক্ষা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৫
এটি/এএ