শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): গাছের সবুজ পাতার সঙ্গে মিশে যাওয়া পাখি টিয়া। তার শরীরের সবুজ আর গাছের সবুজে একাকার প্রকৃতি।
শ্রীমঙ্গলের ডলুছড়া ত্রিপুরাপাড়া প্রবেশের মুখে রাস্তার দু’ধারে অনেকগুলো মালাকানা গাছ। সেই জায়গার অধিকাংশ গাছেদের খুঁড়লে চন্দনাটিয়াদের বাসা। বিকেলের নিভে আসা আলোর মাঝে টিয়াদের সম্মিলিত ‘ক্রি-ত্র্যাররর’ ডাক নিমেষেই কান ধাঁধিয়ে যায় আমাদের।
কতদিন যে টিয়াদের এমন দলগত ডাক শুনতে ওই স্থানে ছুটে গিয়েছি তার হিসাব নেই! নীরবতায় সেই ডাক যেন স্বর্গীয় এক অনুভূতি! বহু দূর থেকে ভেসে আসা তাদের শব্দধ্বনি অন্য মাত্রা যোগ করে চা বাগানের শ্যামল প্রকৃতিতে।
চন্দনা প্রসঙ্গে পাখি গবেষক ও লেখক শরীফ খান বাংলানিউজকে বলেন, চন্দনা টিয়ার ইংরেজি নাম Alexandrine Parakeet। ঢাকা শহরের প্রচুর পরিমানে চন্দনা রয়েছে। যেমন- শিশু একাডেমি, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, হাইকোর্ট ভবন প্রভৃতি স্থানে আমি এদের বহুবার দেখেছি। ঢাকার পাখিপ্রেমীদের জন্য একটি সবচেয়ে বড় সুখবর।
ঢাকার শহরের বিভিন্ন গাছের খোঁড়লে বা কোটরে বাসা করে এবং ডিম দিয়ে বাচ্চা তোলে। গাছ ছাড়াও উঁচু ভবনের ফোঁকড় ও ফাটলে এরা অবস্থান নেয়। আট-দশ বছর ধরে এরা ঢাকা শহরে ভালো অবস্থায় রয়েছে বলে জানান এ পাখি বিশেষজ্ঞ।
আইনের দিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বন্য পশুপাখির মধ্যে অধিকাংশ মানুষের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ হলো ময়না। তারপরেই রয়েছে টিয়া। এরপরের স্থানে রয়েছে ভাত শালিকসহ অন্য পাখিরা। তবে ভাত শালিকও কিন্তু কথা বলতে পারে। মানুষ এসব পাখিকে খাঁচায় বন্দি করে গৃহে পালন করতে চায়। তবে বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনে এসব পাখি ধরা, পোষা ও মারা আইনগতভাবে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এদের খাবার সম্পর্কে শরীফ খান বলেন, এরা নানা রকম ফল, ধান ও পাকা মরিচ খায়। তবে কামরাঙা এদের প্রিয় খাবার।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব সূত্র জানায়, চন্দনা টিয়া বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি। এদের দৈর্ঘ্য ৫৩ সেমি। ডিসেম্বর-এপ্রিল এদের প্রজনন মৌসুম। তখন একেক দম্পতি ৩-৪টি করে ডিম পাড়ে। উনিশ-বিশ দিন পর ছানা বের হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০২০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৬
বিবিবি/এএ