ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

গোপন ক্যামেরায় মহাবিপন্ন ‘কাঠ-ময়ূর’ 

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, এনভায়রনমেন্ট স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০০ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৬
গোপন ক্যামেরায় মহাবিপন্ন ‘কাঠ-ময়ূর’  ছবি: ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন এলায়েন্স

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): গাছের ডালে স্থাপন করা গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়লো মহাবিপন্ন প্রজাতির পাখি ‘কাঠ-ময়ূর’। গোপন ক্যামেরায় বন্যপ্রাণি ধরা পড়ার এ পদ্ধতির নাম ‘ক্যামেরা ট্র্যাপ’।

বান্দরবানের গহীন অরণ্যে ‘ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স’ নামের একটি বন্যপ্রাণি গবেষণা ও সংরক্ষণ প্রতিষ্ঠানের স্থাপিত ক্যামেরায় ধরা পড়ছে মহাবিপন্ন এ পাখিটির ছবি। বন্যপ্রাণি গবেষণা ও সংরক্ষণের কাজে এমন পদ্ধতি ব্যবহার হয়।

এ প্রসঙ্গে ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) ও সরীসৃপ গবেষক শাহরিয়ার সিজার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সম্প্রতি ক্যামেরা ট্র্যাপে ধরা পড়েছে এ মহাবিপন্ন কাঠ-ময়ূর পাখিটি। বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বন্যপ্রাণির প্রতি ভালোবাসা ও সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়াতে নিয়মিতভাবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক, গবেষক ও লেখক ড. মনিরুল খান বাংলানিউজকে বলেন, ইংরেজিতের এ পাখিটির নাম Grey-peacock Pheasant, বৈজ্ঞানিক নাম Polyplectron bicalcalcaratum। আইইউসিএন’র তালিকা অনুযায়ী এ পাখিটি পৃথিবীব্যাপী ‘ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত’ হলেও আমাদের দেশে কাঠ-ময়ূর মহাবিপন্ন তালিকাভুক্ত পাখি।

তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ইদানীংকালে দু’একবার এ পাখিটিকে দেখা গেছে। কাগজপত্রে সিলেট বিভাগে এর পাওয়ার রেকর্ড থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে বিভাগের বনগুলোতে পাখিটিকে দেখা যাওয়ার কোনো তথ্য নেই।

পাখিটির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ড. মনিরুল বলেন, কাঠ-ময়ূর আমাদের চিরচেনা পেখম তোলা ময়ূরের মতো অবাক করা সুন্দর না হলেও অনেকখানি সুন্দর। পুরুষ পাখির পেখম রয়েছে। স্ত্রী পাখিটির পেখম নেই, খুব সাধারণ। দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৬ সে.মি এবং ওজন ৭৫০ গ্রাম। দেহের তুলনায় লেজটি বেশ লম্বা। এদের প্রজনন মৌসুম মার্চ-জুন। প্রজনন মৌসুমে দুই থেকে পাঁচটি ডিম পাড়ে। ২১-২২ দিন পর ছানা বের হয়। এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন প্রকার শস্যদানা, ফল, পোকামাকড় ও ছোট শামুক।

বন্যপ্রাণি গবেষণা সূত্র জানায়, এ পাখিটি বাংলায় ‘মেটে কাঠ-ময়ূর’ বা ‘মেটে কাঠ-মৌর’ নামেও পরিচিত। আমাদের গৃহপালিত মোরগ-মুরগির মতো মাটিতে পা দিয়ে আঁচড় টেনে খাদ্যের সন্ধান চালায়। ‘অক-কক-কক-কক’ সুরে ডাকে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, ভুটান, মায়ানমার, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড ও চীন পর্যন্ত এ পাখিটির বিস্তৃতি রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০১০০ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৬/আপডেট: ১০৫০
বিবিবি/ওএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।