শীতের পারদ নামতে শুরু করার পরে জনজীবনেও শীতের চেনা ছবি ফিরে এসেছে। ঝলমলে রোদে শীতের পোশাক পরেও ঠক ঠক করে কাঁপছে মানুষ।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে পৌষের কনকনে ঠাণ্ডায় কাঁপছে শহর। গত কয়েক দিনের শীতের কামড়ে অনেকেরই অবস্থা কাহিল।
খুলনা জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গত রাতে চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আর খুলনায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্র আরও ২/৩ ডিগ্রি কমতে পারে।
তাপমাত্রার পারদ দিনদিন যত নামছে, ঠাণ্ডায় জবুথবু শহরে ততই বাড়ছে শীতের পোশাকের বিক্রি।
মহানগরের মৌলভীপাড়ার বাসিন্দা আলী রেজা বলেন, দু’দিন থেকে জেঁকে বসেছে শীত। সকাল থেকে গরম কাপড় গায়ে দিয়ে, কানটুপি ও গলায় মাফলার পেঁচিয়ে বাইরে বের হতে হচ্ছে। শীতের তীব্রতা এত বেশি ঘর থেকে বের হওয়া দায়।
শহর ছাড়া গ্রামে শীতের কামড় বেশি বলে জানান কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দিন।
তিনি বলেন, গত দু’দিন থেকে প্রচণ্ড শীত পড়ছে। কয়রার গুচ্ছগ্রামে ও বেড়ীবাঁধের ওপর বসবাসকারী গরিব অসহায় মানুষগুলো খুব কষ্টে আছে।
এদিকে কনকনে শীত ও কুয়াশার কারণে বিশেষ করে শিশু-বৃদ্ধদের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্টজনিত রোগ-ব্যাধির প্রকোপ বেড়েছে। হতদরিদ্র নিম্নআয়ের দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষজনের আয়-রোজগারের ক্ষেত্রেও পড়েছে বিরূপ প্রভাব।
হঠাৎ করেই আবহাওয়ার এ পরিবর্তনে ছিন্নমূল মানুষকে চরম বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। হাঁড় কাঁপানো শীতে থেমে গেছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তীব্র শীতের কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ মানুষের দৈনন্দিন কাজ-কর্ম ও চলাফেরায় মারাত্মক বিঘ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। খেটে খাওয়া মানুষগুলো কাজে যেতে পারছে না।
এতে দরিদ্র, অসহায় ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্টের সীমা নেই। ছেলেমেয়ে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিশেষ করে রেলস্টেশন, বস্তিত ও বেড়িবাঁধের ওপরে বসবাসকারী হতদরিদ্র ছিন্নমূলের মানুষদের। প্রচণ্ড শীত পড়লেও বিগত বছরগুলোর খুলনায় সরকারি-বেসরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগে তেমন শীতবস্ত্র বিতরণ করতে দেখা যায়নি।
খুলনা শিশু হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আল আমিন রাকিব বাংলানিউজকে বলেন, তীব্র শীতের কাবু হচ্ছে শিশুরা। ভাইরাস জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
এমআরএম/এএ