ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

ভ্যাপসা গরম দমিয়ে পদ্মাপাড়ে স্বরূপে আষাঢ়

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৬ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২০
ভ্যাপসা গরম দমিয়ে পদ্মাপাড়ে স্বরূপে আষাঢ়

রাজশাহী: টানা তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল আমের শহর রাজশাহীর ওপর দিয়ে। অবশেষে গরমের সেই প্রতাপ দমিয়ে পদ্মাপাড়ে স্বরূপে ফিরেছে আষাঢ়। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হওয়ায় বর্ষার পরশ পেয়েছে উত্তর জনপদের মানুষগুলোও। 

করোনাকালে দূষণ কমায় এবার বর্ষার আগেই সবুজ হয়ে উঠেছিল প্রকৃতি। হালে বর্ষণসিক্ত হয়ে উঠেছে সেই শ্যামল প্রকৃতি।

নতুন সুরের বার্তা নিয়ে এবার সবুজের সমারোহে দেখা দিয়েছে প্রাণের স্পন্দন। বৃষ্টিরধারায় নবতর জীবন এসেছে পুষ্প-বৃক্ষে, পত্রপল্লবে। নতুন আশার সঞ্চার ঘটিয়েছে মেঠোপল্লীর কৃষকের রোপা-আমনে।

তাপপ্রবাহের মধ্যে উঁচু জমিতে আউশ রোপণ নিয়ে সেচের জন্য গলা শুকিয়ে যাওয়া কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। কৃষি বিভাগ বলছে- এই বৃষ্টি ফসলের জন্য আশীর্বাদ।

বুধবার (১৭ জুন) সকালটাই শুরু হয় ঝুমবৃষ্টি দিয়ে। আষাঢ়ের তৃতীয় দিনের শুরুতেই বর্ষার বারিধারায় ভিজেছে রাজশাহীর তপ্ত রাজপথ; তামাটে বর্ণ ধারণ করা বরেন্দ্রর আঁটো হয়ে যাওয়া লাল মাটি। এতে শহুরে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ছেদ ঘটলেও সেচ নিয়ে চিন্তায় থাকা কৃষকরা খুশি। সবাই নেমেছেন জমিতে।  

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের আবহাওয়া সহকারী আনোয়রা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, দেশে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হয়েছে। এটি বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বিস্তৃত হওয়ায় এর প্রভাবে সারাদেশেই কমবেশি বৃষ্টি হচ্ছে। রাজশাহীতেও বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এটি স্বাভাবিক ঘটনা এবং চেনা রূপ।

টানা তাপপ্রবাহের পর গত ১৩ জুন প্রথম দফায় ২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে। এর পর ১৪ জুন ১ মিলিমিটার ১৫ জুন ১ মিলিমিটার এবং ১৬ জুন ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয় রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের রেইনগেজে (বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্র)। আর  বুধবার (১৭ জুন) ভোর ৬টা ২০ মিনিটে রাজশাহী মহানগরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় বলেও উল্লেখ করেন এই আবহাওয়া কর্মকর্তা।

...এছাড়া ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে ভারী ও অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। এতে দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমবে বলেও আবহাওয়ার অধিদফতরের ২৪ ঘণ্টার এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।

এদিকে, বর্ষার সূচনালগ্নে এমন বৃষ্টিপাত কৃষির জন্য উপকারী বলে জানিয়েছেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামছুল হক।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, রোপা-আমনের বীজতলার জন্য এই বৃষ্টি উপকারী। আর কৃষকরা এখন যেই আউশ ধান রোপণ করছেন তার জন্যও উপকারী। বৃষ্টির জন্য জমিতে আর বাড়তি সেচ লাগবে না। প্রকৃতিকভাবে তাদের জমিতে সেচের কাজ হয়ে যাবে।

এছাড়া রাজশাহী ও বরেন্দ্র অঞ্চলের উঁচু মাটিতে সবজি চাষের জন্য যেই সেচ লাগছিল তারও আর প্রয়োজন হবে না। সব মিলিয়ে জমিতে থাকা সবজি, রোপা-আমনের বীজতলা তৈরি ও আউশ রোপণের জন্যে এই বৃষ্টি আশীর্বাদ বলেও উল্লেখ করেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২০
এসএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।