ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

চেরাপুঞ্জিতে ২৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫০ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২২
চেরাপুঞ্জিতে ২৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত! ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে (শোহরা) একদিনে ৯৭২ মিলিমিটার বর্ষণ হয়েছে, যা গত ২৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বলা হচ্ছে। এছাড়া মৌসুমের বৃষ্টিপাতও হয়েছে দ্বিগুণ।

এ পরিমাণ বৃষ্টিপাতের ফলেই বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতিও অবনতি হচ্ছে।

গোয়াহাটির (আসাম) আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আসাম-মেঘালয় মৌসুমের স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সীমা হচ্ছে ৪ হাজার ১৫০ মিলিমিটার। সেখানে ইতিমধ্যে ৮ হাজার ২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়ে গেছে। আর এক দিনেই [শুক্রবার (১৭ জুন) সকাল আটটা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায়] হয়েছে ১ হাজার ৪৩৮ দশমিক ৯ মিলিমিটার বর্ষণ। এরমধ্যে কেবল মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতেই একদিনে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৯৭২ মিলিমিটার।

চেরাপুঞ্জিতে মৌসুমের স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হচ্ছে ২ হাজার ৫৯২ মিলিমিটার, ইতিমধ্যে হয়ে গেছে ৪ হাজার ৮১ মিলিমিটার। চেরাপুঞ্জির এ বৃষ্টিপাতকে গত ২৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বর্ষণ বলছে ভারতের আবহাওয়া অফিস।

ভারতের এ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অতি প্রবল ভারী বর্ষণের কারণে ইতিমধ্যে আসামে বড় বন্যার দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১১ লাখ মানুষ।

বাংলাদেশের নদ-নদীগুলোর দু’কুল ছাপিয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত করে সীমান্তবর্তী ভারতীয় রাজ্যগুলোয় অতিভারী বর্ষণ হলে। বিশেষ করে আসাম-মেঘালয়ের বর্ষণে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে।

শিলংয়ের (মেঘালয়) আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ২২ জুন পর্যন্ত অতিভারী বর্ষণের আভাস রয়েছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিসও জানিয়েছে, রংপুর, সিলেট, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের আভাস রয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে অতিভারী বর্ষণ হচ্ছে। এ অবস্থায় উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। ইতোমধ্যে উত্তরাঞ্চলের কতিপয় স্থানের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, জুনের শেষ নাগাদ দেশের অন্তত ১৬টি জেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়তে পারে। কেননা, আসাম-মেঘালয়ের অতিপ্রবল ভারী বর্ষণের কারণে বাড়তে শুরু করেছে ব্রহ্মপুত্র-যমুনাসহ প্রধান-প্রধান নদ-নদীগুলোর পানির সমতল। আগামী ২২ জুন পর্যন্ত বন্যা প্রবণ নদ-নদীগুলোর পানির সমতল ব্যাপকহারে বাড়বে।

আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, আগামী মঙ্গলবার নাগাদ আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। বর্তমানে ১৯টি জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের আভাস রয়েছে। এক্ষেত্রে রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, ঢাকা, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, ‍কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২২
ইইউডি/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।