ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

উপকূল ছুঁয়েছে সিত্রাং, মধ্যরাত বা ভোরে উপকূল অতিক্রম করবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২২
উপকূল ছুঁয়েছে সিত্রাং, মধ্যরাত বা ভোরে উপকূল অতিক্রম করবে

ঢাকা: প্রবল ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ উপকূল স্পর্শ করেছে। ফলে তাণ্ডব শুরু হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে।

মধ্যরাত বা ভোরে এটি ভোলার কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করে স্থলভাগে ওঠে আসবে।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাতে এ তথ্য জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম।  

তিনি বলেন, সিত্রাংয়ের তাণ্ডব ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। যার প্রভাব পড়ছে সারাদেশেই। এটির অগ্রভাগ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো স্পর্শ করেছে। মধ্যরাত বা ভোরের দিকে সিত্রাংয়ের চোখ বা মূল অংশ ভোলার কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করে স্থলভাগে ওঠে আসবে।  

অন্য এক পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ সন্ধ্যা ৬টায় (২৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত এবং উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ মধ্যরাত/আগামীকাল ভোর নাগাদ ভোলার কাছ দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে।  

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।  

এ অবস্থায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ০৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ০৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। সেসঙ্গে এসব এলাকায় ভারীবর্ষণসহ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮৮ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।  

অন্যদিকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ০৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ০৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম ও এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ০৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। সেসঙ্গে এসব এলাকায় ভারীবর্ষণসহ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮৮ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এছাড়া কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ০৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ০৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। সে সঙ্গে এসব এলাকায় ভারীবর্ষণসহ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭৫ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।  

সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ফরিদপুর, ঢাকা, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদীবন্দরগুলোকে ০৩ (তিন) নম্বর নৌ-বিপদ সংকেত (পুন.) ০৩ (তিন) নম্বর নৌ-বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ০৫-০৮ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।  

সিত্রাং নামটি থাইল্যান্ডের দেওয়া, এর অর্থ ফুলগাছ।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার দেশের বেশিরভাগ জায়গায় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। আগামী দু’দিনে আবহাওয়ার উন্নতি হবে। কেননা, বুধবার শক্তিক্ষয় করে সিত্রাং স্থল লঘুচাপে পরিণত হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২২
ইইউডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।