ঢাকা: দেশের অন্যতম কৃষি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের সঙ্গে মালদ্বীপের মিয়ানজ প্রাইভেট লিমিটেডের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০২ মার্চ) দুপুর ১২টায় রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এ সমঝোতা স্মারক সই হয়।
ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার এর পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান এবং মিয়ানজ প্রাইভেট লিমিটেডের পক্ষে কোম্পানিটির চেয়ারম্যান আহমেদ মোত্তাকি চুক্তিতে সই করেন।
২০০২ সালে ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার বাংলার কৃষকের কোম্পানি হিসেবে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি দেশের কৃষি বিপ্লবে শুরু থেকেই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে।
দেশের কৃষি উপকরণের চাহিদা মিটিয়ে এবার কৃষি উপকরণ তথা বালাইনাশক রপ্তানির যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার। আমদানি নির্ভর বালাইনাশক এবার রপ্তানিমুখি শিল্পে পরিণত হতে যাচ্ছে।
এ চুক্তির ফলে মালদ্বীপের মিয়ানজ প্রাইভেট লিমিটেড ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার থেকে বিভিন্ন রকম কৃষি উপকরণ ক্রয় করবে (বিশেষ করে বালাইনাশক)। বাংলাদেশের কৃষি বিপ্লবের শুভলগ্নে এ সমঝোতা স্মারক সইয়ের মাধ্যমে দেশের শিল্প জগতে আরও একটি মাইলফলক স্থাপন হয়েছে এবং বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো বালাইনাশক রপ্তানির সূচনা হলো।
প্রসঙ্গত, দেশের বালাইনাশকের চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশ পূরণ হয় আমদানির মাধ্যমে এবং মাত্র ১০ শতাংশ পূরণ হয় দেশীয় উৎপাদনের মাধ্যমে। এ মুহূর্তে বাংলাদেশ যখন বিভিন্ন দ্রব্য আমদানির ক্ষেত্রে সমস্যার মোকাবিলা করছে সেজন্য এক্সপোর্ট বা রপ্তানি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে আর ঠিক তখনই ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রপ্তানিমূলক এ চুক্তি সই করেছে।
এ চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে এবং দেশ দুটির অর্থনীতি আরও বেগবান হবে বলে মনে করছেন অনুষ্ঠানের অতিথিরা এবং বাংলাদেশ এগ্রোকেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান।
অনুষ্ঠানে মিয়ানজ গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ মোত্তাকি বলেন, মিয়ানজ গ্রুপ মালদ্বীপের ফর্চুন ১০০ কোম্পানির মধ্যে অন্যতম একটি কোম্পানি। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে (মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা) তারা ব্যবসার সম্প্রসারণ করছে। ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের মতো বড় অর্থনীতির দেশেও তারা ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছে। এ চুক্তির মাধ্যমে মিয়ানজ গ্রুপ ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের পণ্য এশিয়ার তিনটি দেশে বাজারজাত করবে।
অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রিত অতিথিদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি আশা করেন যে, মেইড ইন বাংলাদেশ ব্র্যান্ড মালদ্বীপে বাংলাদেশের নাম আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
বাংলাদেশি পণ্যের গুণগত মানের মাধ্যমে বাংলাদেশ পরিচিত হবে বিশ্বের কাছে।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ও আফ্রিকার দেশগুলোতেও অচিরেই তাদের ব্যবসার সম্প্রসারণ করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো-র ভাইস চেয়ারম্যান ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার এ এইচ এম আহসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ মাসুকুর রহমান সিকদার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ এগ্রোকেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম এ মান্নান প্রমুখ।
এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের হেড অব অপারেশন, কৃষিবিদ খন্দকার মকবুল হোসেন, হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট, কৃষিবিদ আবুল হাসান মোস্তফা কামাল ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০২৩
আরআইএস