ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২, ০৮ জুলাই ২০২৫, ১২ মহররম ১৪৪৭

কর্পোরেট কর্নার

পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য বিমা পলিসি চালু করেছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:৩৮, মার্চ ৫, ২০২৫
পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য বিমা পলিসি চালু করেছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ

ঢাকা: শীর্ষস্থানীয় নিত্য-ব্যবহার্য ও ভোগ্যপণ্য উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার বাংলাদেশ তাদের প্লাস্টিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্টের অংশ হিসেবে দেশে প্রথমবারের মতো পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য জীবন বিমা সুবিধা চালুর ঘোষণা দিয়েছে।  

সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সত্ত্বেও পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা প্রায়ই বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করেন এবং তাদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের সুবিধা থাকে খুবই সীমিত।

এ কর্মীরা পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রায় ৬০ শতাংশ সংগ্রহ ও বাছাই করলেও তারা প্রায়ই গুরুতর স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ঝুঁকির সম্মুখীন হন, যার মধ্যে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া ও প্রাণহানির মতো ঘটনাও অন্তর্ভুক্ত।  

এ সমস্যাগুলোর সমাধান করতে সরকার, বিশেষজ্ঞ এবং এনজিওগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে ইউনিলিভার একটি সামাজিকভাবে ন্যায্য সার্কুলার অর্থনীতি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। মেটলাইফ বাংলাদেশ এবং ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশনের সঙ্গে একসাথে ইউনিলিভারের এ উদ্ভাবনী উদ্যোগ চট্টগ্রামের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জীবন-জীবিকার মান উন্নত করার লক্ষ্যে জীবন বিমা সুবিধা প্রদান করছে।  

ঢাকায় অনুষ্ঠিত এ চুক্তি সই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার; মেটলাইফ বাংলাদেশের সিইও আলা আহমদ; ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশনের সিইও মো. আরিফুর রহমান; ইউনিলিভারের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স, পার্টনারশিপস অ্যান্ড কমিউনিকেশনস ডিরেক্টর শামিমা আক্তার; মেটলাইফ বাংলাদেশের পরিচালক ও কর্মচারী সুবিধা বিভাগের প্রধান মো. কামরুজ্জামানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।  

এ বীমার আওতায়, প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মসূচিতে নিযুক্ত এক হাজার ৮২৭ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী জীবন ও স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা পাবেন, যা তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে। বিমা সুবিধার আওতাভুক্ত প্রত্যেক কর্মী দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত জীবন বিমা সুবিধা পাবেন এবং বিশেষ চিকিৎসা পরিস্থিতিতে শতভাগ সুবিধাও পাওয়া যাবে। এছাড়াও দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত বিমা সুবিধা দেওয়া হবে। এ স্কিমের মধ্যে চিকিৎসক পরামর্শ ফি ও হাসপাতাল ফি-এর মতো জরুরি স্বাস্থ্যসেবা খরচের জন্য মেডিকেল রিইম্বার্সমেন্ট সুবিধাও প্রদান করা হবে।

ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার বলেন, ইউনিলিভার বাংলাদেশ প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করার অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে প্লাস্টিক সাস্টেইনেবিলিটি উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতিতে প্লাস্টিক সংগ্রহকারী ব্যক্তিরা আমাদের সমাধান কার্যক্রমে অবিচ্ছেদ্য ভূমিকা পালন করে। তাদের ছাড়া প্লাস্টিক সংগ্রহকে বড় আকারে সম্প্রসারণ করা অসম্ভব। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার উন্নত করার মাধ্যমে আমরা আজ সামাজিকভাবে ন্যায়সঙ্গত সার্কুলার অর্থনীতির জন্য একটি মানদণ্ড স্থাপন করেছি। আমি বিশ্বাস করি এ উদ্যোগ অন্যদের এগিয়ে আসতে উৎসাহিত করবে এবং এক সঙ্গে আমরা সুন্দর সমতাভিত্তিক ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারব।  

মেটলাইফ বাংলাদেশ-এর সিইও আলা আহমদ বলেন, এ যৌথ প্রচেষ্টা শুধুমাত্র বর্জ্য কর্মীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্যই নয়, বরং একটি শক্তিশালী ও টেকসই কমিউনিটি গঠনে বিমার গুরুত্বকেও আরও সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরে। প্রায় ১০ লাখ ব্যক্তিগত গ্রাহক এবং ৯০০টিরও বেশি কর্পোরেট ক্লায়েন্টকে সেবা প্রদানে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, আমাদের এমন একটি বিমা সমাধান ডিজাইন করতে সাহায্য করেছে। এর মাধ্যমে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা শুধু আর্থিক সুরক্ষাই দেবে না, পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসী ভবিষ্যৎ গড়ার নিশ্চিয়তা প্রদান করবে।  

২০২২ সালে ইউনিলিভার বাংলাদেশ একাধিক সংস্থার সঙ্গে সম্মিলিতভাবে চট্টগ্রামে একটি প্লাস্টিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প চালু করে। এ উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য ছিল মোট বিক্রিত প্লাস্টিকের চেয়ে বেশি পরিমাণ প্লাস্টিক সংগ্রহ করা। ২০২২ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি ২১ হাজার ৭৫০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহের পাশাপাশি তিন হাজারের বেশি পরিছন্নতাকর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের জীবনযাত্রার মান বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। বর্তমানে এ উদ্ভাবনী প্রকল্পের লক্ষ্য হলো চট্টগ্রামের ১০ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ ও পাঁচ হাজারের বেশি পরিছন্নতাকর্মীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২৫
এমআইএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।