ঢাকা, বুধবার, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২, ১৪ মে ২০২৫, ১৬ জিলকদ ১৪৪৬

কর্পোরেট কর্নার

স্টুডেন্ট ব্যাংকিংয়ে আস্থা অর্জন করেছে ‘আগামী’: মেহরুবা রেজা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:০৯, মে ১৪, ২০২৫
স্টুডেন্ট ব্যাংকিংয়ে আস্থা অর্জন করেছে ‘আগামী’: মেহরুবা রেজা

স্কুল ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে নতুন ধারণা নিয়ে এসেছে ব্র্যাক ব্যাংক। ব্যাংকটিতে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের পাশাপাশি শিক্ষাঋণ ও বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

এসব বিষয়ে কথা বলেছেন ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অব ‘তারা’, ‘আগামী’ এবং প্রিমিয়াম ব্যাংকিং সেগমেন্ট (রিটেইল ব্যাংকিং) মেহরুবা রেজা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট জাফর আহমদ।

বাংলানিউজ: শিক্ষার্থীদের জন্য কী কী ব্যাংকিং সুবিধা আছে ব্র্যাক ব্যাংকে?

মেহরুবা রেজা: শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে নিতে এবং দেশে ও বিদেশে তাদের উচ্চশিক্ষা অর্জনে সহায়তা করতে ব্র্যাক ব্যাংকের একটি পূর্ণাঙ্গ স্টুডেন্ট ব্যাংকিং সার্ভিস হলো ‘আগামী’। শিক্ষার্থীদের বাবা-মা বা অভিভাবকরা এ ব্যাংকিং সুবিধা নিতে পারেন। ‘আগামী’-এর আওতায় যেসব ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হয়, সেগুলো হলো:

ফিউচার স্টার অ্যাকাউন্ট (স্কুল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট)
এটি শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ডিজাইন করা একটি অ্যাকাউন্ট, যার মাধ্যমে তারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে পারে। আঠারো বছরের কম বয়সীরা এই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে এবং তাদের আইনগত অভিভাবকরা তাদের পক্ষে এই অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারবেন। এই অ্যাকাউন্টের বিশেষত্ব হলো, এর সাথে আমরা শিশুদের শিক্ষাবিমা সুবিধা দিয়ে থাকি। এ বিমার পরিমাণ ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত। কোনো শিশুর অভিভাবক যদি ডিজঅ্যাবল (অক্ষম) হয়ে যান, তাহলে ‘ফিউচার স্টার’ অ্যাকাউন্টের অধীনে যেসব শিশু বা শিক্ষার্থী থাকবে, তাদের ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিমা সুবিধা দেবে ব্র্যাক ব্যাংক। এটি যেকোনো পরিবারের জন্য একটি বড় সুবিধা।

আগামী সেভার্স অ্যাকাউন্ট
শিক্ষার্থীদের আর্থিক প্রয়োজন মেটায় ঋণ এবং সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলা হয় সঞ্চয়ের প্রয়োজনে। শিক্ষার্থীদের এই ব্যাংকিং প্রয়োজনগুলোকে মাথায় রেখেই বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে আগামী সেভার্স অ্যাকাউন্ট। ছাত্র-ছাত্রীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে গুরুত্ব দিয়ে এতে আছে জিরো মেইনটেন্যান্স ফি, মাল্টি-কারেন্সি ডেবিট কার্ড সুবিধা, যেকোনো ব্যালেন্সে ইন্টারেস্ট-প্রাপ্তির সুবিধাসহ আরও অনেক কিছু। এই অ্যাকাউন্টটি সম্পূর্ণ ডিজিটালি খোলা যায়।

আগামী পারসোনাল লোন
শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার খরচ মেটাতে পিতা-মাতা বা অভিভাবকদের দেওয়া হয় এই ঋণ সুবিধা। আর্থিক সীমাবদ্ধতা যেন ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে, তা নিশ্চিত করে এই পারসোনাল লোন।

স্টুডেন্ট ফাইল সার্ভিস
স্টুডেন্ট ফাইল সার্ভিস হলো বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ইচ্ছুক এবং উচ্চশিক্ষা গ্রহণরত শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ ও কাস্টমাইজড অর্থ প্রেরণ সেবা। ভর্তি ফি, টিউশন ফি, জীবনযাত্রার ব্যয় এবং অন্যান্য শিক্ষা-সংক্রান্ত খরচ নির্বিঘ্নে পাঠানোর জন্য এটি একটি নির্ভরযোগ্য সার্ভিস।

স্টাডি অ্যাব্রড ক্রেডিট কার্ড
বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইনকৃত এই ক্রেডিট কার্ড তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ এবং জরুরি প্রয়োজনে সহায়তা করে। ডলার এনডোর্সমেন্ট সুবিধাসহ এটি বিদেশে পড়াশোনার সময় শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক নিরাপত্তা, স্বাচ্ছন্দ্য এবং মানসিক প্রশান্তি নিশ্চিত করে।

বাংলানিউজ: স্টুডেন্ট ব্যাংকিং ‘আগামী’র অধীনে ব্র্যাক ব্যাংক স্টুডেন্ট ফাইল খুলছে। এটি কীভাবে শুরু হলো?

মেহরুবা রেজা: বিদেশে যারা পড়তে যান, তাদের জন্য একটি স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে হয়। বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ইচ্ছুক এসব শিক্ষার্থীদের ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে আমরা পূর্ণাঙ্গভাবে স্টুডেন্ট ফাইল সার্ভিস চালু করি। এর মাধ্যমে তারা টিউশন ফি, বই কেনা, থাকা-খাওয়ার খরচসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ বিদেশে পাঠান। তখন ব্র্যাক ব্যাংক ভাবল, শুধু স্টুডেন্ট ফাইল না, ছাত্রছাত্রীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ব্যাংকিং সার্ভিস নিয়ে একটি বান্ডেল অফার দেওয়া যায় কি না।

এসব বিষয় বিবেচনা করে ব্র্যাক ব্যাংক ঠিক করল কীভাবে একটি কমপ্রেহেনসিভ প্রপোজিশন চালু করা যায়। এর নাম দেওয়া হলো ‘আগামী’। ‘আগামী’ ব্যাংকিংয়ের অধীনে ছাত্রছাত্রীরে জন্য সব ধরনের সুবিধা আছে। সঞ্চয়ের জন্য অ্যাকাউন্ট, বিদেশে টাকা পাঠানোর জন্য স্টুডেন্ট ফাইল, দৈনন্দিন পেমেন্টের জন্য ক্রেডিট কার্ড, আর বাবা-মা ও অভিভাবকদের জন্য পারসোনাল লোন।

একইসাথে ব্যাংকিং শেখানোর জন্য জাতীয় পাঠ্যক্রমের আওতাধীন ও ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ‘স্কুল আউটরিচ প্রোগ্রাম‘ শীর্ষক কার্যক্রম শুরু করি আমরা। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ফিনান্সিয়াল লিটারেসি (আর্থিক সাক্ষরতা) ও ব্যাংকিং সার্ভিস সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়।


বাংলানিউজের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অব ‘তারা’, ‘আগামী’ এবং প্রিমিয়াম ব্যাংকিং সেগমেন্ট মেহরুবা রেজা / ছবি: শাকিল আহমেদ

বাংলানিউজ: কোন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন করেন?

মেহরুবা রেজা: নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ব্র্যাক ব্যাংক ‘স্কুল আউটরিচ’ প্রোগ্রাম চালু করে। এই প্রোগ্রামের আওতায় আর্থিক সাক্ষরতা বিষয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি স্কুল কর্তৃক নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ব্র্যাক ব্যাংক নিকটবর্তী ব্রাঞ্চে নিয়ে বিভিন্ন আর্থিক ও ব্যাংকিং কার্যক্রম বিষয়ে বাস্তব ধারণা দিয়ে থাকে। এগুলোর আওতায় রয়েছে ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ওপেনিং, এটিএম সার্ভিসসহ ব্যাংকের অন্যান্য দৈনন্দিন কার্যক্রম। পাশাপাশি আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অন-ক্যাম্পাস প্রোগ্রাম পরিচালনা করে থাকি। এই প্রোগ্রামের আওতায় শিক্ষার্থীদের জন্য সবেচেয়ে কম সময়ে অ্যাকাউন্ট খোলা হয় এবং শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক সাক্ষরতা-বিষয়ক সেশনের আয়োজন করা হয়।

এ ছাড়াও ব্রিটিশ কাউন্সিলের সঙ্গে আমরা পার্টনারশিপ করেছি। এই পার্টনারশিপের আওতায় জাতীয় শিক্ষাক্রমের অধীনে থাকা ৩৫টি স্কুলে শিশুদের ইংলিশ স্পিচ কম্পিটিশনের আয়োজন করি আমরা।

এই বিষয়গুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কী কী ব্যাংকিং সার্ভিস পেতে পারে, আমরা তা জানানোর সুযোগ পাচ্ছি। পাশাপাশি ৩৫টি স্কুলে শিক্ষার্থীদের ব্যাংকিং বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দিতে পারছি। যখন আমরা ব্রিটিশ কাউন্সিলের সঙ্গে বিভিন্ন স্কুলে যাচ্ছি, তখন শিক্ষার্থীদের বিস্তারিত জানাচ্ছি যে, এই অ্যাকাউন্টে কী কী সুবিধা আছে, কীভাবে সঞ্চয়ের অভ্যাস তৈরি করা যায় এবং এর সুফল নিয়ে আলোচনা করে তাদের ব্যাংকিংয়ে উদ্বুদ্ধ করছি, যাতে তারা বাসায় গিয়ে বাবা-মাকে জানাতে পারে।

বাংলানিউজ: ‘আগামী’ অ্যাকাউন্টে আর কী কী সুবিধা রয়েছে?

মেহরুবা রেজা: ফিউচার স্টার অ্যাকাউন্টে ১ টাকা ব্যালেন্স থেকেই মুনাফার সুবিধা আছে। কারও অ্যাকাউন্টে ১০ টাকা থাকলেও সে আকর্ষণীয় হারে মুনাফা পাবে। সঙ্গে থাকছে ডেবিট কার্ড।

এরপর যখন একজন শিশু স্কুল শেষ করে কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে যায়, তখন তার জন্য আছে আগামীর সেভার্স অ্যাকাউন্ট। আগামীর অ্যাকাউন্টে কোনো ধরনের মেইনটেন্যান্স চার্জ নেই, যাতে ব্যাংক এই গ্রাহক সেগমেন্টের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা যখন চাকরিতে ঢুকবেন, তখন যেন তারা ফার্স্ট ব্যাংক হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক বেছে নেন।

আগামী সেভার্স অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আমরা মাল্টি-কারেন্সি ডেবিট কার্ড দিচ্ছি, যেটি দেশ-বিদেশে সব জায়গায় তারা ব্যবহার করতে পারবেন। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টিউশনি, ফ্রিলান্সিং করে, পার্ট-টাইম জব বা অন্য কোনো কাজের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ এখানে রাখতে পারেন। আমরা বাধ্যতামূলক ব্যালেন্সের পরিমাণও কম রেখেছি, যাতে যে পরিমাণ ব্যালেন্সই থাকুক না কেন, তারা যেন মুনাফা পান।

বাংলানিউজ: এখনকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তি সচেতন। আবার আর্থিক খাতও প্রযুক্তি নির্ভরতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। স্কুল ব্যাংকিংয়ে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির ব্যবহারিক দিকটা ব্র্যাক ব্যাংক কীভাবে যুক্ত করছে?

মেহরুবা রেজা: শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি সচেতনতার বিষয়ে আমরা খুবই সচেতন। আগামীর সেভার্স অ্যাকাউন্টের জন্য আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে গিয়ে ক্যাম্পেইন করি। এই অ্যাকাউন্ট পুরো ডিজিটালি খোলা হয়। আমরা যতগুলো ‘আগামী’ সেভার্স অ্যাকাউন্ট খুলেছি, তার ৯৬ শতাংশই হয়েছে ডিজিটালি। ক্যাম্পাসে গিয়ে মাত্র ১৫ মিনিটে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। শিক্ষার্থীরা এই ডিজিটাল সার্ভিস পছন্দ করে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ব্যাংকিংয়ে হাতেখড়ি হয়; একইসাথে আধুনিক ব্যাংকিং প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ারও সুযোগ হয়।

স্কুল ব্যাংকিংয়ের পরিসর বাড়াতে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের দিকনির্দেশনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্সের আয়োজন করে থাকি। এই কনফারেন্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়, আর্থিক ও ব্যাংকিং সেবা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিসহ আর্থিক ও ব্যাংকিং সেবার বিভিন্ন দিক নিয়ে ধারণা দেওয়া হয়।

বাংলানিউজ: শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো ঋণ কার্যক্রম আছে কি?

মেহরুবা রেজা: হ্যাঁ, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার খরচ বহনের জন্য ব্র্যাক ব্যাংক ‘আগামী পারসোনাল লোন’ দিয়ে থাকে। এই প্রোডাক্টের অধীনে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয়। এই ঋণ আমরা বাবা-মা বা অভিভাবককে দিয়ে থাকি, যেহেতু তারা রোজগার করেন। তাদের আয় অ্যাসেসমেন্ট করে আমরা ঋণ দিয়ে থাকি।

বাংলানিউজ: এই ঋণ কি একসঙ্গে দিয়ে থাকেন?

মেহরুবা রেজা:  না, এই ঋণ একসঙ্গে দেওয়া হয় না; কিস্তিতে দেওয়া হয়। তবে ব্যাংক একসঙ্গে পুরো ঋণের পরিমাণ অনুমোদন করে থাকে। এটি এই ঋণের গুরুত্বপূর্ণ দিক। শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনমতো টাকা নিতে পারবে। ধরুন, একজন শিক্ষার্থীর এক সেমিস্টারে যত টাকা প্রয়োজন, সে ওই পরিমাণ টাকা নেবে এবং এই ঋণের পরিমাণের ওপরই ইন্টারেস্ট কার্যকর হবে। পরে যখন দ্বিতীয় কিস্তি নেবে তখন প্রথম কিস্তির অবশিষ্ট টাকার সঙ্গে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা যোগ করে মোট আউটস্ট্যান্ডিংয়ের ওপর ইন্টারেস্ট দেবে। এভাবে শিক্ষা শেষ করা অবধি অনুমোদন হওয়া ঋণ নেবে। যখন থেকে ঋণ নেবে তখন থেকে ইন্টারেস্ট কার্যকর হবে এবং যতদিন ধরে যত টাকা আউটস্ট্যান্ডিং থাকবে, শুধু ওই টাকার ওপরই ইন্টারেস্ট প্রযোজ্য হবে।

বাংলানিউজ: স্টাডি অ্যাব্রড ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে বলুন?

মেহরুবা রেজা: স্টাডি অ্যাব্রড ক্রেডিট কার্ড হলো, বিদেশে পড়তে যাওয়া ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজনের কথা বিবেচনায় রেখে বিশেষভাবে ডিজাইন করা একটি ক্রেডিট কার্ড।

শিক্ষার্থীর অভিভাবকের কার্ডে যে লিমিট থাকে তার ৯০ ভাগ শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয়। এ কার্ডের ফি প্রথম বছরের জন্য ফ্রি থাকে, পরের বছর থেকে চার্জ কার্যকর হয়।

এই কার্ডের আরেকটি সুবিধা হলো লাউঞ্জ ফ্যাসিলিটি। যেহেতু শিক্ষার্থীরা বিদেশে পড়তে যায়, এজন্য তাদের লাউঞ্জ সুবিধা দরকার হয়। এই কার্ডের মাধ্যমে বিদেশে এয়ারপোর্টগুলোতে তারা লাউঞ্জ সুবিধা পেয়ে থাকে।

বাংলানিউজ: আপনি বলছিলেন গত বছর সর্বোচ্চ স্টুডেন্ট ফাইল খুলেছেন। এতে আপনাদের অগ্রগতি কেমন?

মেহরুবা রেজা: গত বছর আমরা সর্বোচ্চ সংখ্যক স্টুডেন্ট ফাইল খুলেছি। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ এখন পর্যন্ত ৫৯টি দেশে পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে স্টুডেন্ট ফাইল খুলেছি আমরা। গত বছর ব্র্যাক ব্যাংক সর্বোচ্চ ১০ হাজারেরও বেশি স্টুডেন্ট ফাইল খুলেছে।

বাংলানিউজ: ব্যাংকিং খাতে আপনারা সর্বোচ্চ স্টুডেন্ট ফাইল খুলেছেন। এই সাফল্য কীভাবে অর্জন করেছেন? শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে কেন?

মেহরুবা রেজা: আমরা অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে স্টুডেন্ট ফাইল সার্ভিস দিয়ে থাকি। আমরা তিনটি ডেডিকেটেড ‘আগামী সেন্টার’ পরিচালনা করছি। এর সাথে সব শাখাতে এই সার্ভিস পাওয়া যায়। ধানমন্ডি, গুলশান ও প্রগতি সরণিতে আগামী সেন্টারসহ ১৮৯টি শাখাতে ২৭ জন আগামী রিলেশনশিপ অফিসার (স্টুডেন্ট ব্যাংকিংয়ের জন্য ডেডিকেটেড কর্মকর্তা) নিয়োজিত আছেন। আমাদের আগামী রিলেশনশিপ অফিসাররা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, অত্যন্ত দক্ষ, পেশাদার ও উন্নত সেবাদানে পারদর্শী।

উন্নত সার্ভিস নিশ্চিত করতে ও সার্ভিসটি সহজলভ্য করতে আমরা শুধু কয়েকটি শাখায় সার্ভিস কেন্দ্রীভূত না রেখে সারা দেশে বিকেন্দ্রীকরণ করেছি। এর ফলে একজন শিক্ষার্থী আগামী সেন্টার বা যেকোনো ব্র্যাক ব্যাংকের শাখা থেকে এই সেবা নিতে পারছে। আর ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও সেভাবেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ফলে, শিক্ষার্থীরাও উন্নত সার্ভিস পাচ্ছে।

অন্যান্য ব্যাংক এটাকে স্টুডেন্ট ফাইল সেন্টার বলে। আমরা আগামী স্টুডেন্ট ব্যাংকিং সেন্টার বলি। স্টুডেন্ট ফাইল ও অ্যাকাউন্ট খোলাসহ ছাত্রছাত্রীদের সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা আগামী সেন্টারে দেওয়া হয়। আন্তরিকতার সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের ব্যাংকিং প্রয়োজনগুলো আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পূরণ করে থাকি। এজন্য ব্র্যাক ব্যাংক স্টুডেন্ট ফাইল সার্ভিসে ছাত্রছাত্রীদের আস্থা অর্জন করেছে আর ব্যবসায় অর্জন করেছে লক্ষণীয় সাফল্য।

বাংলানিউজ: ব্র্যাক ব্যাংকে কতজন শিক্ষার্থী অ্যাকাউন্ট খুলেছে?

মেহরুবা রেজা: সঞ্চয়ের জন্য সেভিংস অ্যাকাউন্ট খুলেছে ৬০ হাজার শিক্ষার্থী। আর স্টুডেন্ট ফাইল খুলেছে ২৪ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী।

বাংলানিউজ: আপনাকে ধন্যবাদ।

মেহরুবা রেজা: বাংলানিউজকেও ধন্যবাদ।

জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।