আমেরিকায় তার যাওয়ার বিষয়টি চমকপ্রদ। অনেকে নিষেধ করেছেন বিদেশ-বিভূঁইয়ে যেতে।
তার সাক্ষাৎকার-কথন তার ভাষায় উল্লেখ করা হলো-
‘আলহামদুলিল্লাহ, আমি আমেরিকায় আসার পরের দিন থেকে মহান আল্লাহ এই নগন্য বান্দাকে একটি মসজিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রেখেছেন। যখন আমেরিকায় আসার জন্য আমার ভিসা হলো, তখন আমাকে অনেকে বলেছেন, ইহুদি-খ্রিস্টানদের দেশে কেন যাচ্ছিস? ওই দেশে গেলে দাড়ি রাখতে পারবি না। ঠিক মতো ইসলাম পালন করতে বাধার সম্মুখীন হতে হবে। তুই হাফেজ এবং একজন মাওলানা। সেখানে গেলে নামাজ-কোরআন কিছুই ঠিকভাবে ধরে রাখা যাবে না। এছাড়াও আরো নানান ঝামেলার মুখোমুখি হতে হবে ইত্যাদি।
তাদের এসব কথার উত্তরে আমি শুধু বলাতম, দোয়া করবেন যেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে পারি। আল্লাহর হুকুম ও তার রাসুলের অনুসরণ করতে পারি।
আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহর শোকর। তার অশেষ মেহেরবানিতে মসজিদের ইমাম হিসেবে বর্তমানে এখানে রয়েছি। এখানে আসার পরদিন থেকেই আল্লাহ আমাকে এ গুরুত্বপূর্ণ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার তাওফিক দিয়েছেন। প্রতি বছরের মতো এবারো রমজানে তারাবি পড়াচ্ছি। এখানকার কমিনিউটি হচ্ছে, মিশ্র এরাবিয়ান, আফ্রিকান, বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও ভারতীয়।
মাওলানা নাসির উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি মনে করি কেউ যদি সঠিক ইসলাম পালন করতে চায়, সে যেন আমেরিকাতে চলে আসে। ভয়-আতঙ্কের ভেতর ইসলাম পালনের আলাদা স্বাদ রয়েছে। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে হামলার পর থেকে মসজিদে যাওয়া-আসার সময় আমাদের মনে কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করে। তবে জুমার দিন, ঈদের দিন ও অন্যান্য ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনে স্থানীয় পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনি আমাদের নিরাপত্তা দেয়।
স্থানীয় মুসলিম-অমুসলিম জনগণের ভালোবাসায় আমরা প্রতিনিয়ত মুগ্ধ হই। এরা খুবই আন্তরিক ও ভদ্র। অমুসলিমদের ইসলাম সম্পর্কে জানতে চাওয়ার আগ্রহ আমাকে আপ্লুত করে। আল্লাহ তাদের হেদায়াত দান করুন।
কেউ যখন আমাকে প্রশ্ন করে, আমেরিকার মানুষজন কেমন? তখন আমি বলি- ওদের কাছে সব আছে, শুধু ঈমানটা নেই। অন্যদিকে আমাদের কাছে শুধু ঈমান আছে, অন্য কিছু নেই।
মাওলানা নাসির উদ্দিন চট্টগ্রামের বিখ্যাত ধর্মীয় শিক্ষানিকেতন জামেয়া দারুল মাআরিফ আল-ইসলামিয়ায় পড়াশোনা করেছেন। তার গ্রামের বাড়ি ফেনীর সোনাগাজীতে।
রমজানবিষয়ক যেকোনো লেখা আপনিও দিতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘন্টা, মে ৩১, ২০১৯
এমএমইউ