সিলেট থেকে : শুরুতে ম্যাক্স ও ডাউড ও আফিফ হোসেনে চড়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স পেলো মজবুত ভিত্তি। পরে ঝড় তুললেন কার্টিস ক্যাম্পার।
শুক্রবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএলের ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল। আগে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রান করে চট্টগ্রাম। পরে জবাব দিতে নেমে ৪ বল আগেই জয় পায় বরিশাল। এই জয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে টপকে ৮ ম্যাচে ৬ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠেছে সাকিব আল হাসানের দল।
টস হেরে ব্যাট করতে নামা চট্টগ্রামের উদ্বোধনী ব্যাটার মেহেদি মারুফ শুরুতেই বিদায় নেন। ২ বল খেলে ১ চারে ৫ রান করেন তিনি। এরপর ম্যাক্স ও ডাউডকে সঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষণ সংগ্রহ বাড়াতে থাকেন উন্মুক্ত চাঁদ। ৩ চারে ১৩ বলে ১৬ রান করে তিনিও ফেরেন সাজঘরে।
একপ্রান্ত আগলে রাখা ম্যাক্সকে ফেরান খালেদ আহমেদ। তার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৩৪ বলে ৩৩ রান করেন ডাচ ব্যাটার। আরেক প্রান্তে অবশ্য ব্যাট চালাতে থাকেন আফিফ। মাঝে ২ রান করে বিদায় নেন চট্টগ্রাম অধিনায়ক শুভাগত হোম।
দারুণ ব্যাট করা আফিফের ইনিংস থামে ৩৭ রানে। ২৩ বলে ২ ছক্কা ও ৩ চারে এই ইনিংস সাজান বাংলাদেশি অলরাউন্ডার, আউট হন কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে। শুরুতে রাব্বির হাতেই থার্ডম্যানে জীবন পেয়েছিলেন আফিফ।
শেষদিকে কার্টিস ক্যাম্পার ও ইরফান শুক্কুরের ৩৯ বলে ৬৬ রানের জুটিতে মাঝারি সংগ্রহ পায় চট্টগ্রাম। ক্যামিও ইনিংস খেলা ক্যাম্পার ২৫ বলে ২ ছক্কা ও ৪ চারে ৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন। শেষ বলে রান আউট হওয়া ইরফান শুক্কুর করেন ১৯ বলে ২০ রান করেন। বরিশালের পক্ষে জোড়া উইকেট নেন কামরুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদ। একটি উইকেট পান মোহাম্মদ ওয়াসিম।
জবাব দিতে নেমে শুরুটা ভালোই হয় বরিশালের, উদ্বোধনী জুটিতে ৪৮ রান যোগ করেন সাইফ হাসান ও এনামুল হক বিজয়। ২ চারে ৯ বলে ১০ রান করে সাইফ আউট হলে তাদের জুটি ভাঙে। মেহেদী হাসান রানার বলে অদ্ভূতভাবে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি।
এদিন সুবিধা করতে পারেননি বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই ক্রিকেটার ছয় বলে ২ রান করে নিহাদুজ্জামানের বলে বোল্ড হন। ঠিক তার পরের বলেই এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, খুলতে পারেননি রানের খাতা।
স্পিনারকে ঠিকঠাক সামলাবেন, এই আশা নিয়ে পাঠানো হয় চাতুরাঙ্গা ডি সিলভাকেও। কিন্তু তিনিও হতাশই করেছেন। ৫ বলে ৩ রান করে নিহাদুজ্জামানের বলে উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো ইরফান শুক্করের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ডি সিলভা।
একপ্রান্ত আগলে তখন লড়ছিলেন এনামুল হক বিজয়। এই ওপেনার ইফতেখার আহমেদের সঙ্গে ৩৪ রানের জুটি গড়ে দলকে পথ দেখানোর চেষ্টাও করছিলেন বেশ ভালোভাবেই, জাগাচ্ছিলেন নিজের সেঞ্চুরির সম্ভাবনা। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয়ের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরত যান তিনি। এর আগে ৬ চার ও সমান ছক্কায় ৫০ বলে ৭৮ রান করেন বিজয়।
তাকে হারানোর পর বরিশালের একমাত্র আশা ছিলেন ইফতেখার আহমেদ। বড় হিট করতে পারার সক্ষমতা রয়েছে এই ব্যাটারের, শুরুতে কিছুটা সময়ও নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ইফতেখারকে দারুণ এক ডেলেভারিতে বোল্ড করে দেন নিহাদুজ্জামান।
আশাও অনেকটাই শেষ হয় বরিশালের। কিন্তু সেখান থেকেই দলকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেন করিম জানাত ও সালমান হোসেন। উইকেটে এসে রীতিমতো ঝড় তুলেন করিম জানাত। এই ব্যাটার শেষ ওভারের প্রথম বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ১২ বলে ৩১ রান করে ফেরেন, তবে এর আগেই নিশ্চিত করে যান দলের জয়। ১৪ বলে ১৮ রান আসে সালমান হোসেনের ব্যাটেও। চার বল হাতে রেখে সেটি পায় বরিশাল। চট্টগ্রামের হয়ে ৪ ওভারে কেবল ১৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন নিহাদুজ্জামান।
বাংলাদেশ সময় : ২২৪৭ ঘণ্টা, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩
এমএইচবি