জস বাটলারের ফিফটিতে বড় সংগ্রহের পথেই এগোচ্ছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু ডেথ ওভারে দুর্দান্ত বোলিংয়ে রানের লাগাম টেনে ধরেন বাংলাদেশের বোলাররা।
স্যাম কারানের করা প্রথম ওভারে ১০ রান তোলেন লিটন দাস ও রনি তালুকদার। সাত বছর পর জাতীয় দলে ফেরা রনি আগ্রাসী ব্যাটিং দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দেন। দ্বিতীয় ওভারে ক্রিস ওকসের কাছ থেকে একাই ১১ রান আদায় করে নেন ডানহাতি এই ব্যাটার। তৃতীয় ওভারে জফরা আর্চারকে ছেড়ে কথা বলেননি দুই ওপেনার। দুটো চারসহ ১১ রান আসে সেই ওভারে। কিন্তু পরের ওভারে আদিল রশিদের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হন রনি। ফ্লাইটেড ডেলিভারীতে কাভার ড্রাইভ করতে গিয়ে স্টাম্প হারিয়ে ফেলেন তিনি। তাই থামতে হয় ১৪ বলে ৪ চারে ২১ রান করেন। ৩৩ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।
পঞ্চম ওভারে রনির মতোই সাজঘরের পথ ধরেন লিটন। আর্চারের লেংথ ডেলিভারী তার ব্যাটের কানায় লেগে সোজা চলে যায় ওকসের হাতে। ১০ বলে ২ চারে ১২ রান করেন লিটন। এরপর হাল ধরেন অভিষিক্ত হৃদয় ও শান্ত।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে আগ্রাসী শুরু করে ইংল্যান্ড। নাসুমের করা প্রথম ওভারে আসে ৯ রান। তাসকিন আহমেদও সমপরিমাণ রান উপহার দেন সফরকারীদের। দ্বিতীয় বলে চার খেলেও তৃতীয় ওভারে কেবল ৫ রান দেন মুস্তাফিজুর রহমান। পরের ওভারে ৮ রান খরচ করেন তাসকিন। তবে পঞ্চম ওভারে মুস্তাফিজকে তুলোধুনো করেন ফিল সল্ট ও বাটলার। একটি করে চার ও ছয়ে দুজনে মিলেন ১৩ রান তোলেন সেই ওভারে।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে প্রথম বলেই উইকেট নেওয়ার সুযোগ এসেছিল। কিন্তু সল্টের ফিরতি ক্যাচ হাতে স্পর্শ করলেও তালুবন্দী করতে পারেননি নাসুম। তার পঞ্চম বলে বাটলারকে দ্বিতীয় জীবন দেন সাকিব আল হাসান। মিড অনে থেকে সহজ ক্যাচটি ধরতে পারেননি তিনি।
অবশেষে ইনিংসের দশম ওভারে স্বাগতিকদের ব্রেক থ্রু এনে দেন নাসুম আহমেদ। ভাঙেন ৮০ রানের উদ্বোধনী জুটি। অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা বলে সুইপ করার চেষ্টা করেন ফিল সল্ট। কিন্তু বল তার ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় পেছনে থাকা উইকেটরক্ষক লিটন দাসের গ্লাভসে। তাই ৩৫ বলে ৩৮ রান করে ফিরতে হয় ডানহাতি এই ওপেনারকে।
তিনে নেমে থিতু হতে পারেননি দাভিদ মালান। ব্যক্তিগত ৪ রান করেই ফিরতে হয় তাকে। ইনিংসের ১২ তম ওভারে সাকিবের বলে তার ক্যাচ লংঅনে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর বেন ডাকেটকে নিয়ে জুটি গড়ে তোলেন বাটলার। এর ফাঁকে তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২০ তম ফিফটি। তবে ডাকেট ভালো শুরু পেলেও তা ধরে রাখতে পারেননি। ১৬ তম ওভারের শেষ বলে তাকে বোল্ড করেন মুস্তাফিজ। ১৩ বলে ২০ রান করেন এই ব্যাটার।
ডেথ ওভারের শুরুতেই বাটলারকে শিকার করেন হাসান মাহমুদ। লংঅন থেকে বাটলারের ক্যাচটি ধরেন শান্ত। ৪২ বলে চারটি করে চার ও ছক্কায় ৬৭ রান করেন ইংলিশ অধিনায়ক। সেই ১৭ তম ওভারে কেবল এক রান দেন হাসান। ১৮ তম ওভারে কোনো উইকেট না পেলেও ৭ রান খরচ করেন মুস্তাফিজুর। ডেথ ওভারের বিবেচনায় যা কমই বলা যায়। ১৯ তম ওভারে আবারও হাসানের জাদু। মাত্র ৪ রান দিয়ে স্যাম কারানের উইকেটটি তুলে নেন ডানহাতি এই পেসার। শেষ ওভারে ৯ রান দিলেও ক্রিস ওকসকে ১ রানে সাজঘরে ফেরান তাসকিন। যার ফলে ৬ উইকেটে ১৫৬ রানে থামে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশের হয়ে হাসান ২৬ রান দিয়ে দুটি এবং সাকিব, তাসকিন, মুস্তাফিজ ও নাসুম নেন একটি করে উইকেট।
৬ তম ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ১৩৫ রান। শেষ চার ওভারে মাত্র ২১ রান দেয় বাংলাদেশের বোলাররা। বিপরীতে তুলে নেয় তিন উইকেট।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২৩
এএইচএস