বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরই নেমে আসে বৃষ্টি। এরপর থেকে বৃষ্টি আর থামেনি।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ শুরুতে ব্যাট করে ৩৪৯ রানের রেকর্ড সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নামার প্রস্তুতি নিলেও ড্রেসিংরুমেই সময় কাটাতে হয় আইরিশ ব্যাটারদের। কারণ তার আগেই পড়তে শুরু করে বৃষ্টি। বাংলাদেশের ইনিংসের ঠিক পরই কাভারে ঢাকা হয় উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর সময় হয়ে গেলেও বৃষ্টি থামছিল না। এরপর সাড়ে নয়টা পর্যন্ত কাট অফ টাইম নির্ধারিত ছিল। কিন্তু এর এক ঘণ্টা আগেই ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
এর আগে আয়ারল্যান্ডের বোলারদের ওপর রীতিমতো তাণ্ডব চালান বাংলাদেশের ব্যাটাররা। বিশেষ করে মুশফিক। ব্যাট হাতে রান পাচ্ছিলেন না বলে সমালোচনা ছিল। প্রশ্ন উঠেছিল দলে জায়গা নিয়েও। আগের ম্যাচে নতুন ব্যাটিং পজিশনে মেলে ধরেছিলেন নিজেকে। এবার ইনিংসের শেষদিকে এসে ছিলেন সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে।
ইনিংসের শেষ ওভার শুরুর আগে ৯ রান দরকার ছিল তার। তৃতীয় বল থেকে স্ট্রাইক পাওয়া মুশফিক দুইটি ডাবলের সঙ্গে মেরেছেন একটি চার। শেষ বলে সমীকরণ ছিল এক রান নেওয়ার। সেটি নিয়ে ওয়ানডেতে দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ানই হয়ে গেছেন মুশফিক, ছাড়িয়ে গেছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাকিব আল হাসানের ৬৩ বলের শতককে। তাতে বাংলাদেশও পেয়েছে রেকর্ড সংগ্রহ।
টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ৪২ রানের উদ্বোধনী জুটি পায়। তামিম ইকবাল এরপর হয়ে যান রান আউট। পাওয়ার প্লের শেষ বলে এসে শর্ট ফাইন লেগে ফেলে রানের জন্য দৌড় শুরু করেন নন স্ট্রাইকে দাঁড়ানো তামিম। কিন্তু তিনি ক্রিজে পৌঁছার অনেক আগেই সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভাঙেন মার্ক আডইয়ার।
এরপর শান্তকে নিয়ে শতরান ছাড়ানো জুটি গড়েন লিটন দাস। দুর্দান্ত খেলছিলেন তিনি। কিন্তু আউট হয়েছেন খুবই সহজভাবে। দুর্বল ফ্লিক অনেকটা ‘নাথিং শট’ হয়ে ধরা পড়ে ম্যাকব্রিনের হাতে। ৩ চার ও সমান ছক্কায় ৭১ বলে ৭০ রান করে লিটন আউট হন ক্যাম্পারের বলে।
মাঝে গ্রাহাম হিউমের বলে স্লগ করতে গিয়ে হাওয়ায় ভাসানো বল সাকিব ক্যাচ দেন হ্যারি টেক্টরের হাতে। ১৯ বলে ১৭ রান করেন তিনি। লিটন সেঞ্চুরি মিসের পর আশা ছিল শান্তকে নিয়ে। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও পারেননি হৃদয়-সাকিব।
লিটনের পর এ ম্যাচে ব্যর্থ হন শান্তও। হিউমের বলে উইকেটের পেছনে সহজ ক্যাচ দেন শান্ত। ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৭৭ বলে ৭৩ রান করেন তিনি। আগের ম্যাচে অভিষেকে রান পেয়েছিলেন তাওহিদ হৃদয়, পেলেন এদিনও। কিন্তু দুদিনই তার সঙ্গী হলো সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরির আফসোস।
মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে হৃদয়ের ৭৮ বলে ১২৮ রানের জুটির পর আউট হয়েছেন ৪৯ রানে। ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৪ বলে এই রান করা ব্যাটার অ্যাডাইয়ের বলে আউট হন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। এরপরের পুরো আলোটাই ছিল মুশফিকুর রহিমের জন্য।
হৃদয়ের অভিষেকের পর তার ব্যাটিং পজিশন নেমে গিয়েছিল ছয় নম্বরে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় ২৬ বলে ৪৪ রান করেছিলেন মুশফিক। রানের ধারা তিনি ধরে রাখেন দ্বিতীয়টিতেও। শেষ বলে সেঞ্চুরি হাঁকানো মুশফিক অপরাজিত থাকেন ঠিক ১০০ রানে। ১৪ চার ও ২ ছক্কায় ৬০ বলে ইনিংস সাজান তিনি। বাংলাদেশ পায় ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৩
এমএইচএম