চট্টগ্রাম থেকে : ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ পেলো দারুণ শুরু। এরপর রান পেরোলো দুইশ।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে ডিএলএস মেথডে ২২ রানে হেরেছে আয়ারল্যান্ড। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ১৯ ওভার ২ বলে ২০৭ রান করে বাংলাদেশ। বৃষ্টিতে ৮ ওভারে ১০৪ রানের লক্ষ্য পায় আইরিশরা, ৫ উইকেট হারিয়ে তারা করতে পারে ৮১ রান।
বৃষ্টিতে প্রায় দেড় ঘণ্টা খেলা বন্ধ থাকার পর আয়ারল্যান্ডের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৮ ওভারে ১০৪ রান। ব্যবধানটা তাদের জন্য সম্ভব ছিল খুবই। শুরুটাও হয়েছিল তেমন। নাসুম আহমেদের প্রথম ওভার থেকেই ১৮ রান তোলেন রস অ্যাডায়ার ও পল স্টার্লিং। পরের ওভারেও সেটি ধরে রাখে তারা।
পাওয়ার প্লে ছিল দুই ওভার- কোনো উইকেট না হারিয়েই ৩২ রান করে আয়ারল্যান্ড। তৃতীয় ওভারে এসেই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন হাসান মাহমুদ। এই পেসার প্রথম তিন বল ডট দেওয়ার পর চতুর্থটিতে বোল্ড করেন রস অ্যাডায়ারকে। এর আগে ৩ চারে আইরিশ ব্যাটার ১০ বলে করেন ১৩ রান। ওই ওভারের শেষ বলে চার হাঁকান স্টার্লিং।
তবে হাসান মাহমুদের এনে দেওয়া মোমেন্টাম পরের ওভারে ভাঙতে দেননি তাসকিন আহমেদ। একেবারে প্রথম বলেই তিনি বোল্ড করেন লরকান টাকারকে। ওই ওভারের চতুর্থ বলে তাসকিন ফেরান ভয়ঙ্কর হওয়া স্টার্লিংকে। বোল্ড হওয়ার আগে ৮ বলে ১৭ রান করেন স্টার্লিং।
তাসকিন জাগিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও। দুর্দান্ত বল করতে থাকা এই বোলার ফেরান জর্জ ডকরেলকে। এবার ক্যাচ নেন শামীম হোসেন। তাসকিনের হ্যাটট্রিক বলে মুখোমুখি হয়েছিলেন ডিল্যানি। ওই বলে অবশ্য চার হাঁকান তাসকিনকে। পরের ওভারে হাসান মাহমুদ দেন ১৬ রান।
কিন্তু ম্যাচের মোড় সেভাবে ঘুরেনি আয়ারল্যান্ডের দিকে। শেষ ওভারে আইরিশদের দরকার ছিল ৩২ রান। তারা নেয় কেবল ৯ রান। ৮ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৮১ রানে থামে আইরিশরা। বাংলাদেশের পক্ষে ২ ওভারে ১৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ।
এর আগে ব্যাট ২০৭ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ, যা টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। আরও ৪ বল হাতে ছিল। ২০১৮ সালের ১০ মার্চ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ উইকেট হারিয়ে ২১৫ রান করেছিল টাইগাররা; সেই রেকর্ড অক্ষত থেকে যায়।
ব্যাটিংয়ে দারুণ শুরু পায় বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ওভার করতে আসা হ্যারি টেক্টরকে চতুর্থ বলেই ছক্কা হাঁকান লিটন দাস। ওই ওভারে ১১ রান নেয় স্বাগতিকরা। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে বাংলাদেশ নেয় ৮১ রান। নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ এটি। এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৩ সালে ৭৬ রান আসে।
বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম উইকেট হারায় ইনিংসের অষ্টম ওভারে এসে। ক্রেইগ ইয়াংয়ের বল মিড অফ দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে পল স্টার্লিংয়ের হাতে সহজ ক্যাচ দেন লিটন দাস। ৪ চার ও ৩ ছক্কার দারুণ ইনিংসে ২৩ বলে ৪৭ রান করেন লিটন। এই রান করার পথে তিনি ছুঁয়ে ফেলেন টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্রুততম ১৫০০ রানের রেকর্ড।
লিটনের উদ্বোধনী সঙ্গী রনি তালুকদার পেয়ে যান আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৮ বলে ৬৭ রান করেন গত সিরিজে ক্যারিয়ারে নতুন জীবন পাওয়া এই ব্যাটার। গ্রাহাম হিউমের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরত যান তিনি। এরপর ক্রিজে এসে নিজের ইনিংস খুব লম্বা করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত।
১৩ বলে ১৪ রান করে এই ব্যাটার আউট হন। এদিন ব্যাটিং অর্ডারে উন্নতি হয় শামীম হোসেন পাটোয়ারীর। এই ব্যাটার চার নম্বরে নেমে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২০ বলে ৩০ রান করেন। ৮ বলে ১৩ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তাওহিদ হৃদয়।
বাংলাদেশের রান দুইশ ছাড়ায় শেষদিকে সাকিব আল হাসানের ব্যাটিংয়ে। ৩ চারে ১৩ বলে ২০ রান করেন তিনি। বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হওয়ার চার বল আগেই নেমে আসে বৃষ্টি। খেলা বন্ধ হওয়ার পর বাংলাদেশ আর মাঠে নামেনি।
বাংলাদেশ সময় : ১৮২০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৭
এমএইচবি