ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ জুন ২০২৪, ১৯ জিলহজ ১৪৪৫

ক্রিকেট

রশিদের হ্যাটট্রিক ছাপিয়ে ৫ বলে ৫ ছক্কায় কলকাতার অবিশ্বাস্য জয়

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৩
রশিদের হ্যাটট্রিক ছাপিয়ে ৫ বলে ৫ ছক্কায় কলকাতার অবিশ্বাস্য জয়

আগের তিন ওভারে ৩৫ রান দিয়ে ছিলেন খরুচে। যা তার সঙ্গে একদমই বেমানান।

কিন্তু নামটা রশিদ খান।  যেকোনো সময়, যেকোনো পরিস্থিতিতে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য আছে তার। রশিদ খান ঠিক সেটাই করলেন নিজের চতুর্থ ওভারে। দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনলেন গুজরাট টাইটান্সকে। কিন্তু আইপিএল যেন থ্রিলার সিনেমাকেও হার মানায়। সেই থ্রিলারের নায়ক রিংকু সিং। শেষ ওভারে তার পাঁচ ছক্কায় অবিশ্বাস্য এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কলকাতা নাইট রাইডার্স। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে গুজরাট টাইটান্সকে ৩ উইকেটে হারায় তারা।

রিংকু সিং যদি নায়ক হন তাহলে খলনায়ক ইয়াশ দায়াল। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২৯ রান দরকার ছিল কলকাতার। টি-টোয়েন্টির যুগে হয়তো কোনোকিছুই অসম্ভব নয়। কিন্তু এটি কঠিনতার প্রায় সর্বোচ্চ পর্যায় বলা যায়। টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে শেষ ওভারে এতো রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই। ইয়াশ দায়ালের প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে রিংকুকে স্ট্রাইকে আনেন উমেশ যাদব। তখন পর্যন্ত রিংকুই কলকাতার বেঁচে থাকা স্বীকৃতি ব্যাটার। কিন্তু তাই বলে যে, পাঁচ বলে টানা পাঁচ ছক্কা হাঁকিয়ে বসবেন সেটা হয়তো কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। গুজরাটের হাতের মুঠো থেকে জয়টা একপ্রকার কেড়ে নিলেন তিনি। আর দায়ালকে উপহার দিলেন দুঃস্বপ্নের এক রাত।

দায়ালের দ্বিতীয় ডেলিভারিটি ফুলটস পেয়ে লং অফ দিয়ে উড়িয়ে মারেন রিংকু। পরের ডেলিভারিটিও ফুলটস করেন দায়াল। সেটাকে স্কয়ার লেগ দিয়ে গ্যালারিতে আছড়ে ফেলেন রিংকু। অবিশ্বাস্যভাবে চতুর্থ বলটি ফুলটস পেয়ে গেলে, সেটিও ছাড় দেননি বাঁহাতি এই ব্যাটার। পঞ্চম বলটি ব্যাক অফ দ্য হ্যান্ড দিয়ে করেন দায়াল। কিন্তু রিংকু যেন সেটি প্রথমেই আন্দাজ করে ফেলেছিলেন।  তাই লং অনের উপর দিয়ে বল পাঠাতে  কোনো বেগ পেতে হয়নি তার। অবিশ্বাস্যের ঘোর তখনো কাটেনি। শেষ বলটিতে ঠিক একইভাবে ছক্কা হাঁকিয়ে রোমাঞ্চ রচনা করেন তিনি। শেষ ওভারে ৩১ রানসহ ৪ ওভারে মোট ৬৯ রান দেন দায়াল। আইপিএলের ইতিহাসে এক ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খরুচে বোলার তিনি।

অথচ ম্যাচটি হতে পারত রশিদ খানের। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ উইকেটে ২০৪ রান করে গুজরাট। ৩৮ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৫৩ রান করেন সাই সুদর্শন। শেষদিকে ২৪ বলে ৪ চার ও ৫ ছক্কায় ৬৩ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে গুজরাটকে বড় সংগ্রহ এনে দেন বিজয় শংকর।

জবাব দিতে নেমে ২৮ রানের ভেতর দুই ওপেনারকে হারায় কলকাতা। তবে তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক নিতিশ রানাকে নিয়ে শতরানের জুটি গড়েন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। দুজনই অবশ্য শিকার হন আলঝারি জোসেফের। রানা ৪৩ রান ও আইয়ার ফেরেন ৪০ বলে ৮ চার ও ৫ ছক্কায় ৮৩ রানের ইনিংস খেলে। তখন পর্যন্ত কলকাতার হাতেই ম্যাচ ছিল। কিন্তু ১৬ তম ওভারের প্রথম তিন বলে আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইন, ও শার্দুল ঠাকুরকে সাজঘরে ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন  রশিদ খান। প্রথম বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টি চারটি হ্যাটট্রিকের মালিক হন তিনি। তারপর থেকে আস্তে আস্তে জয়ের পথে এগোতে থাকে গুজরাট। কিন্তু শেষ ওভারেই বদলে গেল সবকিছু। ২১ বলে ১ চার ও ৬ ছক্কায় ৪৮ রানের ঐতিহাসিক এক ইনিংস খেলে কলকাতাকে জয় এনে দেন রিংকু সিং। আসরে এটি টানা দ্বিতীয়  জয় তাদের। অন্যদিকে প্রথম দুই ম্যাচে জয়ের পর এবার হারের মুখ দেখল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গুজরাট।

বাংলাদেশ সময়:  ১৯৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৩

এএইচএস  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।