দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে প্রায় একাই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ইনিংস টানলেন বিরাট কোহলি। নিজের সেঞ্চুরির রেকর্ডটাকেও আরও এক ধাপ এগিয়ে নিলেন তিনি।
২০২৪ আইপিএলের ১৯তম ম্যাচে আজ ৬ উইকেটে জয় পেয়েছে রাজস্থান। জয়পুরে টস হেরে আগে ব্যাট করে ৩ উইকেটে স্বাগতিকদের সামনে ১৮৪ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় বেঙ্গালুরু। যা ৪ উইকেট হারিয়ে পেরিয়ে যায় রাজস্থান। এই জয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে পেছনে ফেলে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে এলো স্যামসনবাহিনী। ৪ ম্যাচের সবকয়টি জিতে তাদের সংগ্রহ ৮ পয়েন্ট। টানা তিন জয় পাওয়া কলকাতার পয়েন্ট ৬।
লক্ষ্য তাড়ায় নামা রাজস্থানের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। স্কোরকার্ডে কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই বিদায় নেন ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল। তবে জস বাটলার ও সাঞ্জু স্যামসন মিলে সেই ধাক্কা দারুণভাবে সামলে নিয়ে পথে ফেরান রাজস্থানকে। ১৪৮ রানের মজবুত জুটি গড়েন তারা। প্রতি ওভারেই কমপক্ষে একটু বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন দুজনেই।
৪২ বলে ৬৯ রান করে স্যামসন আউট হলে অবশ্য ছোটখাটো বিপর্যয়ের মুখে পড়ে রাজস্থান। দ্রুত ফেরেন রিয়ান পরাগ (৪) ও ধ্রুব জুরেল (২)। তবে একপ্রান্ত আগলে রাখেন বাটলার। বাকি পথ নিজের ব্যাটে টেনে নেন দলকে। সহজ জয়ের পথেই এগোচ্ছিল রাজস্থান। তবে শঙ্কা ছিল বাটলারের সেঞ্চুরি নিয়ে। ১৯তম ওভার পর্যন্ত ৫৭ বলে ৯৪ রান ছিল বাটলারের। কিন্তু শেষ ওভারে জয়ের জন্য মাত্র ১ রান দরকার ছিল রাজস্থানের। আর সেঞ্চুরি ছুঁতে বাটলারের লাগতো ৬ রান।
শেষ ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে সমীকরণ মিলিয়ে ফেলেন বাটলার। ক্যারিয়ারের শততম আইপিএল ম্যাচে সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে যান তিনি। আইপিএলের ইতিহাসেই মাত্র দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে শততম ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকালেন বাটলার। তার আগে ২০২২ সালে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের হয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে একই কীর্তি গড়েন লোকেশ রাহুল।
আজকের সেঞ্চুরিটি বাটলারের আইপিএল ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। যে কারণে আইপিএলে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডে ক্রিস গেইলকে ছুঁয়ে ফেলেছেন তিনি। দুজনেরই সেঞ্চুরির সংখ্যা সমান ৬টি করে। তাদের চেয়ে এগিয়ে আছেন কেবল বিরাট কোহলি। যিনি আজ আইপিএলে নিজের অষ্টম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। কিন্তু দিন শেষে বিফলে গেলে তার কীর্তি।
অথচ বেঙ্গালুরুর ইনিংস শেষে কোহলি-বন্দনা চলছিল জোরেশোরে। ব্যাট হাতে একাই দলকে টেনেছেন তিনি। খেলেছেন ৭২ বলে অপরাজিত ১১৩ রানের দারুণ এক ইনিংস। যা সাজিয়েছেন ১২টি চার ও ৪ ছক্কায়। ইনিংসটি খেলার পথে নিজেকেই ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। আইপিএলে সবচেয়ে বেশি (৭টি) সেঞ্চুরির রেকর্ড আগে থেকেই ছিল তার দখলে। আজ তাতে যোগ হয়েছে আরও একটি।
কিন্তু তার সেঞ্চুরিটি আবার টুর্নামেন্টের ইতিহাসেই যৌথভাবে সবচেয়ে ধীরগতির। ৬৭ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন তিনি। ২০০৯ সালে সমান বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন বেঙ্গালুরুর সাবেক ব্যাটার মনিশ পান্ডে। আজ কোহলি ও ফাফ ডু প্লেসি মিলে ওপেনিং জুটিতেই তুলেছিলেন ১২৫ রান। কিন্তু বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক ডু প্লেসি নড়বড়ে ব্যাটিংয়ে ৩৩ বলে ৪৪ রান করে বিদায় নেন। এরপরের সময়টুকু একাই লড়ে যান কোহলি।
পরে ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ ধরে একটি রেকর্ড গড়েছেন কোহলি। আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ক্যাচ নিয়েছেন তিনি (১১০টি)। ১০৯টি ক্যাচ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন সুরেশ রায়না। কিন্তু কোহলির সব আনন্দ কেড়ে নিল বোলারদের ব্যর্থতা। শুধু কি তাই, একটি অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডও গড়েছেন তিনি। আইপিএলে হেরে যাওয়া দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি (৩টি) সেঞ্চুরি এখন তার। নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০০১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২৪
এমএইচএম