আগের ইনিংসে সবগুলো উইকেটই নিয়েছেন তারা দুজন। এবার তো পেসারদের বোলিংয়ে আনেননি পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ।
মুলতানে দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডকে ১৫২ রানে হারিয়ে সিরিজে ১-১ সমতা ফিরিয়েছে স্বাগতিকরা। এর আগে ঘরের মাঠে টানা ১১ ম্যাচ জয়হীন থাকতে হয়েছে তাদের। সবশেষ ঘরের মাটিতে ২০২১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় পেয়েছিল পাকিস্তান। শান মাসুদেরও অধিনায়ক হিসেবে এটি প্রথম জয়। এর আগে টানা ছয় ম্যাচে হারের মুখ দেখেছেন তিনি।
২৯৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৮ উইকেট হাতে নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু নোমান-সাজিদের স্পিনে ধরাশায়ী হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৪ রানের বেশি যেতে পারেনি সফরকারীরা। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৪৬ রান দিয়ে ৮ উইকেট শিকার করেন নোমান। টেস্টে এটি বাঁহাতি স্পিনারের পঞ্চম ফাইফার। বাকি দুটি উইকেট নেন সাজিদ খান। প্রথম ইনিংসে অবশ্য তিনিই ছিলেন পাকিস্তানের নায়ক। ১১১ রান দিয়ে ৭ উইকেট নেন তিনি। ম্যাচসেরার পুরস্কারও তাই ওঠে ডানহাতি এই স্পিনারের হাতে। সেই ইনিংসে বাকি ৩ উইকেট নিজের ঝুলিতে রাখেন নোমান।
তাতে ৫২ বছর পর বিরল এক নজিরই দেখা গেল। টেস্ট ইতিহাসে ২০ উইকেটের সবগুলো নিয়েছেন কেবল দুজন বোলার- এর আগে এমন ঘটনা ঘটেছে কেবল ছয়বার। মুলতান টেস্টে এসে সপ্তম ঘটনার জন্ম দিলেন নোমান ও সাজিদ। যদিও এই কীর্তিতে পাকিস্তানের হয়ে তারাই প্রথম নন।
১৯৫৬ সালে করাচিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে ২০ উইকেটের সবগুলো শিকার করেছিলেন দুই পেসার ফজল মাহমুদ ও খান মোহাম্মদ। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেট তুলে নেন কিংবদন্তি ফজল। অন্যদিকে খান ৪ উইকেটের দেখা পান প্রথম ইনিংসে। দ্বিতীয় ইনিংসে কেবল তিনটি উইকেটই নিতে পারেন তিনি।
আজ সেই স্মৃতিই মনে করিয়ে দিল নোমান-সাজিদ জুটি। তাদের সামনে ইংল্যান্ডের কোনো ব্যাটারই প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। সর্বোচ্চ ৩৭ রান আসে অধিনায়ক বেন স্টোকসের ব্যাট থেকে।
এনিয়ে তৃতীয়বার কোনো টেস্ট ম্যাচে ভিন্ন দুজন বোলার ৭ বা এর বেশি উইকেট নেওয়ার নজির ঘটল। ১৯৯৭ সালে ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ উইকেট করে নেন অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাকগ্রা ও মাইকেল ক্যাসপ্রোভিচ। সেই ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন ফিল টাফনেলও। প্রথমবার এমনটা ঘটে ১৯৫৬ সালে চেন্নাই টেস্টে। ভারতের বিপক্ষে সেবার প্রথম ইনিংসে রিচি বেনো ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেট নেন রে লিন্ডওয়াল।
এদিকে ১৯৮৭ সালের পর এই প্রথম পাকিস্তানের দুই স্পিনার একই ম্যাচে ফাইফারের দেখা পেলেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৩৬৬/১০ (কামরান ১১৮, সায়েম ৭৭; লিচ ৪/১১৪, কার্স ৩/৫০)।
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৯১/১০ (ডাকেট ১১৪, রুট ৩৪; সাজিদ ৭/১১১, নোমান ৩/১০১)।
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ২২১/১০ (সালমান ৬৩, শাকিল ৩১; বশির ৪/৬৬, লিচ ৩/৬৭)।
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: ১৪৪/১০ (স্টোকস ৩৭, কার্স ২৭; নোমান ৮/৪৬, ২/৯৩)।
ফল: পাকিস্তান ১৫২ রানে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজের দুই ম্যাচ শেষে ১-১ সমতা।
ম্যাচ-সেরা: সাজিদ খান (পাকিস্তান)।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৪
এএইচএস