ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

ক্রিকেট

আফগানিস্তানে নারীদের শিক্ষার অধিকার ফেরানোর আহ্বান রশিদ-নবীর

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০২৪
আফগানিস্তানে নারীদের শিক্ষার অধিকার ফেরানোর আহ্বান রশিদ-নবীর

নতুন করে ২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতায় আসার পর নারী শিক্ষায় একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে আফগানিস্তানের তালিবান সরকার। শুরুতে নারীদের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় বাধা প্রধান করে তারা।

যদিও চিকিৎসা খাতে কিছুটা শিথিল ছিল এই আইন। তবে এবার মেয়েদের নার্সিং ও ধাত্রীবিদ্যা প্রশিক্ষণের ইনস্টিটিউটগুলো বন্ধ করার ঘোষণাও এসেছে। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিবাদ জানিয়েছেন আফগানিস্তানের দুই তারকা ক্রিকেটার রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবী।

এমনিতেই দেশটিতে নারীদের খেলাধুলা নিষিদ্ধ। যার ফলে আইসিসির পূর্ণ সদস্যের দেশ হিসেবে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে আফগানিস্তান। যে কারণে তাদের বিপক্ষে কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে রাজি নয় অস্ট্রেলিয়া। এবার নারীদের আরও একটি শিক্ষার দুয়ার বন্ধ করে দিয়ে সমালোচনার মুখে তালিবান সরকার।

রশিদ ইনস্টাগ্রামে লিখেন, ‘ইসলামের কেন্দ্রবিন্দু হলো শিক্ষা। নারী ও পুরুষের জ্ঞান অন্বেষণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনেও শিক্ষার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবং দুটি লিঙ্গেরই সমান মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তানে মা-বোনদের জন্য শিক্ষা ও চিকিৎসার ইনস্টিটিউটগুলো বন্ধ করার খবরে আমি খুবই হতাশ ও দুঃখ প্রকাশ করছি। এই সিদ্ধান্ত শুধু তাদের ভবিষ্যৎই নয়, সমাজের সামগ্রিক কাঠামোকেও গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের যন্ত্রণাময় অনুভূতিগুলো আমাদের সামনে সংগ্রামের করুণ চিত্র তুলে ধরে। ’

‘আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি আফগানিস্তান একটি সংকটময় সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশের প্রতিটি খাতে পেশাদার মানুষের খুব প্রয়োজন, বিশেষ করে চিকিৎসা খাতে। নারী চিকিৎসক ও নার্সদের তীব্র সংকট খুব দুশ্চিন্তার, যা সরাসরি নারীদের স্বাস্থ্যসেবা ও মর্যাদার ওপর প্রভাব ফেলে। পেশাদারদের মাধ্যমে আমাদের মা-বোনদের স্বাস্থ্যসেরা পাওয়া জরুরি, যারা তাদের প্রয়োজনটা বুঝতে পারেন। আমি তাই সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ করছি। তাতে আফগান নারীরা শিক্ষার অধিকার ফিরে পাবে এবং জাতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে। সবার শিক্ষার অধিকার শুধু সামাজিক দায়িত্ব নয় বরং এটা নৈতিক বাধ্যবাধকতা যা আমাদের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। ’ 


এরপর প্রতিবাদ জানিয়ে নবী লিখেন, ‘চিকিৎসা খাতে নারীদের লেখাপড়া নিষিদ্ধ করা শুধু হৃদয়বিদারক নয়, ভীষণ অবিচারও। ইসলাম সব সময়ই সবার শিক্ষায় গুরুত্ব দিয়েছে এবং ইতিহাসেও এমন প্রেরণাদায়ক প্রচুর উদাহরণ আছে, যেখানে নারীরা জ্ঞানের মাধ্যমে অনেক প্রজন্মে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ’

‘তালিবানকে আমি এসব মূল্যবোধে গুরুত্ব দেওয়ার অনুরোধ করছি। নারীদের শিক্ষা এবং নিজের জনগণকে তাদের সেবা করার সুযোগকে অস্বীকার করার অর্থ হলো তাদের স্বপ্ন এবং আমাদের জাতির ভবিষ্যতের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা। আমাদের মেয়েদের পড়তে দিন, বেড়ে উঠতে দিন এবং সবার জন্য আরও ভালো আফগানিস্তান তৈরি করুন। এটা তাদের অধিকার এবং তা রক্ষার দায়িত্বটা আমাদের। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০২৪
এএইচএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।