দেয়ালে আঁকা হয়েছে জুলাই আন্দোলনের গ্রাফিতি। মাঠের এলইডি বিলবোর্ডেও ফুটে উঠছে নানা রঙের স্লোগান।
কিন্তু তাদের আয়োজন নিয়ে একরকম অসন্তোষই জানিয়ে দিলেন এবারের বিপিএলের সবচেয়ে বড় তারকাদের একজন তামিম ইকবাল। স্পষ্ট করেই তিনি বললেন, ‘কনসার্ট নয়, বিনিয়োগ করতে হবে মাঠের ক্রিকেটে। ’ এর সঙ্গে সম্প্রচারে উন্নতির কথাও এলো তার কথায়।
বিপিএলে যতই নতুনের ছোঁয়া দিতে চাওয়ার ইচ্ছে থাকুক বিসিবির, আগের ‘হযবরল’ কাটাতে তারা পারেনি সব জায়গায়। সবচেয়ে বড় উদাহরণ সামনে চলে এসেছে রোববার সকালেই। স্টেডিয়ামের এক নম্বর গেটের সামনে টিকিটের আশায় লম্বা লাইন দিয়ে ভোর থেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন কয়েকজন দর্শক।
সাধারণত আন্তর্জাতিক সিরিজে টিকিট পাওয়া যায় ওই গেটের কাছাকাছি একটি বুথে। কিন্তু বিপিএলে তেমন হচ্ছে না। বিসিবি বেশিরভাগ টিকিটই ছেড়েছে অনলাইনে। বাকি যেগুলো আছে- তা পাওয়া যাবে মধুমতি ব্যাংকের সাতটি শাখায়। কিন্তু ওই খবর কি না ম্যাচের আগের দিন সকাল সাড়ে এগারোটা অবধি জানায়নি বিসিবি!
ক্ষুব্ধ জনতার বিক্ষোভের মুখে এটি জানানোর পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দায়ভার কাঁধে নিয়েছেন বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম। দলগুলোর পেশাদারিত্বেও খুব একটা উন্নতি হয়নি। বেশিরভাগ দলই তাদের অধিনায়কের নাম জানিয়েছে টুর্নামেন্ট শুরুর সময় যখন কয়েক ঘণ্টা বাকি তখন।
টুর্নামেন্টজুড়ে বিপিএলে বিদেশি ক্রিকেটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলটাও আগের মতোই থাকবে। তারকা ক্রিকেটার যারা আসবেন, থাকবেন বড়জোর এক থেকে দুই ম্যাচ। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ অবশ্য বেশ কয়েকবারই আশ্বাস দিয়েছেন, এবার উইকেট ভালো হওয়ার ব্যাপারটা নিশ্চিত করবেন তিনি।
তবে অনুশীলনের অবস্থা থেকে গেছে আগের মতোই। কয়েক বছর ধরে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নিজেদের মাঠে অনুশীলন করছে রংপুর রাইডার্স। এর বাইরে ফরচুন বরিশালও একদিন অনুশীলন করেছে পূবেরগাঁও ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। বাকি সবারই ঠিকানা ছিল মিরপুরের একাডেমি মাঠ।
গাদাগাদি অনুশীলন ছিল তাই অবধারিত। তবে ব্যতিক্রম বলতে সংকুচিত হয়ে গেছে সাংবাদিকদের অনুশীলন দেখার সুযোগ। ক্রিকেটারদের ‘প্রাইভেসি’ রক্ষার জন্য কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে একাডেমি মাঠ। অল্প একটু ফাঁকা জায়গাতেই তাই রাখতে হচ্ছে ক্যামেরার লেন্স।
সবমিলিয়ে বিপিএলের আয়োজন নিয়ে তামিমের কথাই তাই সবচেয়ে উপযোগী, ‘ক্রিকেট কেমন হবে এটা নির্ভর করে খেলোয়াড়রা কেমন খেলছে। এটা তো আসলে যারা আয়োজক তাদের হাতে কিছু থাকে না। তাদের হাতে কী থাকে, সেরা ফ্যাসিলিটিজ দেওয়া, সেরা উইকেট দেওয়া, নিশ্চিত করা সেরা ধারাভাষ্যকার, ক্যামেরা ও টেকনোলজি যেটা এভেইলেবল, তা পাওয়া। ’
২৩ তারিখ ঢাকায় জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে রাহাত ফতেহ আলি খানের কনসার্ট, পরে আরও দুটি শহরেও একই রকম আয়োজন হয়েছে। গ্রাফিতি রঙ ছড়িয়েছে। ‘চলো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ কথায় এসেছে নতুন থিম সং- কিন্তু মাঠে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স, দর্শকদের ভালো সম্প্রচার অথবা সরাসরি খেলা দেখায় ভালো অভিজ্ঞতা দিতে না পারলে সব রঙই হবে বিবর্ণ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪
এমএইচবি/এমএইচএম