সম্প্রতি এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ওয়ানডে থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন মুশফিকুর রহমি। এরপর থেকে তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করছেন অনেকে।
জাতীয় দলের সাবেক প্রধান কোচ ও টিম ডিরেক্টর সুজনের মতে, ধারাবাহিকভাবে চার নম্বর পজিশনে ব্যাট করলে মুশফিক আরও ভালোভাবে ওয়ানডে ক্যারিয়ার শেষ করতে পারতেন।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ব্যর্থ মিশন শেষে দেশে ফেরার পর গত ৫ ফেব্রুয়ারি ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানান মুশফিক। তবে নিজের ব্যাটিং পজিশন নিয়ে কিছু প্রশ্ন রেখে গেছেন তিনি। ক্যারিয়ারের বড় একটা সময় তাকে চার নাকি ছয়ে নামানো হবে তা নিয়ে দ্বিধায় থাকতে দেখা গেছে নির্বাচকদের। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওয়ানডেতে মুশফিক বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক (৭,৭৯৫ রান)। তার উপরে আছেন কেবল তামিম ইকবাল (৮,৩৫৭ রান)।
চার নম্বর ব্যাটিং পজিশনে মুশফিক দেশের সবচেয়ে সফল ব্যাটার। চারে নেমে ১১৮ ইনিংসে ৪,৩৭২ রান করেছেন তিনি। ২০১৩ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত, তিনি চার নম্বরে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেছেন, ৯৬ ইনিংসে ৩,৭৬২ রান। তার উপরে ছিলেন নিউজিল্যান্ডের রস টেইলর (৫,১৮২ রান)।
২০২২ সালে বাজে বছর কাটে মুশফিকের, আর ২০২০ সালে মাত্র দুটি ওয়ানডে খেলেন তিনি। এর বাইরে প্রায় এক যুগ ধরে ধারাবাহিকভাবে রান করেছেন এই ডানহাতি। এর মধ্যে চার নম্বরে ব্যাট করেই ৭০ শতাংশ রান করেছেন তিনি। এত দারুণ রেকর্ড সত্ত্বেও ২০২৩ সালে মুশফিকের ব্যাটিং পজিশন বদলে যায়, যেখানে তিনি মূলত ছয়ে কিংবা পাঁচে ব্যাট করতেন।
মুশফিকের ব্যাটিং অর্ডারে এই পরিবর্তন তার ক্যারিয়ারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করেন খালেদ মাহমুদ। ক্রিকেটভিত্তিক ওয়াবসাইট ক্রিকবাজকে তিনি বলেন, 'আমার মতে মুশফিক ছয় নম্বরের ব্যাটার নয়, চার নম্বর হিসেবে সে ভালো। সে সময় নেয় এবং একবার সেট হয়ে গেলে, সে অসাধারণ ব্যাটার। হয়তো যদি সে আরও বেশি সময় চার নম্বরে ব্যাট করতো, তার ক্যারিয়ার আরও ভালো হতে পারতো। '
মুশফিকের প্রশংসা করে সুজন বলেন, 'মুশফিক একজন আদর্শ পেশাদার ক্রিকেটার। সে নিজের পরিশ্রমে তৈরি একজন ক্রিকেটার, যা প্রমাণিত। তার ক্যারিয়ার সবার জন্য একটি উদাহরণ। এটা জানতাম যে একদিন মুশফিক অবসর নেবে, এবং এটা তার সিদ্ধান্ত, আমরা তার সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। সে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সত্যিকারের প্রতিনিধি এবং একজন প্রকৃত যোদ্ধা। আমি বিশ্বাস করি সে দারুণ একটি ক্যারিয়ার পেয়েছে। সে একজন কঠোর পরিশ্রমী, নিয়ন্ত্রিত ও নিবেদিত ছেলে... তার মধ্যে সবকিছু উপস্থিত। '
"আমি যখন ড্রেসিং রুমে যাই, তখন আমি বলি, 'মুশফিকের মতো ট্রেনিং করো। ' তাকে সকালে দৌঁড়ে ট্রেনিং করতে দেখেছি, সে অনেক পরিশ্রমী। এটা (অবসর নেওয়া) সত্যিই দুঃখজনক, কিন্তু এটা ছিল সময়ের ব্যাপার। হয়তো সে মনে করেছে যে এখনই সঠিক সময়, আর আমি তার সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। আমি তাকে শুভকামনা জানাই। "
"সে এখনও টেস্ট ক্রিকেট খেলবে, এবং যদি সে আরও ছয়টি টেস্ট খেলে, তবে সে প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলবে। আমি প্রার্থনা করি, সে সুস্থ থাকুক, ফর্মে থাকুক এবং তার টেস্ট ক্যারিয়ার ভালোভাবে শেষ করুক," শেষ করেন সুজন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০২৫
এমএইচএম