ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ৩০ মে ২০২৫, ০২ জিলহজ ১৪৪৬

ক্রিকেট

বিসিবি সভাপতির পদত্যাগে ‘চাপ’: আইসিসি’র নিয়ম লঙ্ঘনের আশঙ্কা

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৪৪, মে ২৯, ২০২৫
বিসিবি সভাপতির পদত্যাগে ‘চাপ’: আইসিসি’র নিয়ম লঙ্ঘনের আশঙ্কা

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে, যা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) নিয়ম অনুযায়ী গুরুতর বিষয় হতে পারে। আইসিসি তার সদস্য দেশগুলোর ক্রিকেট বোর্ডের স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেয় এবং সরকারী হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে।

আইসিসির নীতিমালা ও পূর্ববর্তী উদাহরণ

আইসিসির নীতিমালা অনুযায়ী, একটি দেশের ক্রিকেট বোর্ড হবে স্বায়ত্বশাসিত এবং সরকারের কোনো ধরনের প্রভাব থাকবে না বোর্ড প্রশাসনের ওপর। কোনো ক্রিকেট বোর্ডের প্রশাসনে সরকারি হস্তক্ষেপ হলে তা সদস্যপদ স্থগিতের কারণ হতে পারে। ২০১৯ সালে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ড এবং ২০২৩ সালে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে আইসিসি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তগুলোর পেছনে আইসিসির মূল যুক্তি ছিল, ক্রিকেট বোর্ডের স্বায়ত্তশাসনে সরকারি হস্তক্ষেপ আইসিসির নীতিমালার পরিপন্থী।

পদত্যাগ করবেন না ফারুক

গত বুধবার রাতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসেন ফারুক আহমেদ। সেখানে তাকে বলা হয়, সরকার আর তাকে সভাপতি হিসেবে দেখতে চায় না। তবে কোনো ব্যর্থতা বা সুনির্দিষ্ট কারণ দেখানো হয়নি।

ফারুক বলেন, “আমাকে বলা হয়েছে সরকারের ওপরমহল আমাকে চায় না। এখন ওপরমহল মানে কারা, সেটা আপনারাই বুঝে নিন। আমি তো নিজে এই পদ চাইনি, আমাকে ডেকে এনে বসানো হয়েছে। এখন সরাতে হলে কারণও দেখানো উচিত। ”

বিসিবিতে বর্তমান পরিস্থিতি

ফারুক আহমেদ দাবি করেছেন যে, ক্রীড়া উপদেষ্টা তাকে পদত্যাগের পরোক্ষ অনুরোধ জানিয়েছেন, তবে কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যর্থতা উল্লেখ করেননি। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে, বোর্ডের কিছু পরিচালক তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন এবং তাদের অপকর্ম ঢাকতেই তাকে সরানোর চেষ্টা চলছে।  

সন্ধ্যার দিকে বিসিবি সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জানিয়ে চিঠি দেন বোর্ডের ৮ পরিচালক। যারা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন—তারা হলেন:

নাজমুল আবেদীন ফাহিম
ফাহিম সিনহা
মো. সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরী
মাহবুব উল আলম
ইফতেখার রহমান মিঠু
কাজী ইনাম আহমেদ
মো. মনজুর আলম
মো. সালাহউদ্দিন চৌধুরী

শুধুমাত্র সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেননি। এই চিঠির কারণেই পদ ছাড়তে হতে পারে ফারুককে। কিন্তু এ কথা জানার পর বিষয়টি নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় যাবেন বলে ভাবছেন তিনি।

আইসিসির সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া

যদি বিসিবির সভাপতির অপসারণে সরকারী হস্তক্ষেপ প্রমাণিত হয়, তবে আইসিসি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারে, যার মধ্যে সদস্যপদ স্থগিত করা, আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা, বা আর্থিক সহায়তা বন্ধ করা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। তবে, আইসিসি সাধারণত এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিস্তারিত তদন্ত করে এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে।

এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।