ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩২, ২৪ জুন ২০২৫, ২৭ জিলহজ ১৪৪৬

ক্রিকেট

ডিপিএলে সেরা, জাতীয় দলে জায়গা নেই—কেন উপেক্ষিত সোহান-মোসাদ্দেক?

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:২৪, জুন ২৪, ২০২৫
ডিপিএলে সেরা, জাতীয় দলে জায়গা নেই—কেন উপেক্ষিত সোহান-মোসাদ্দেক? মোসাদ্দেক হোসেন ও নুরুল হাসান সোহান/সংগৃহীত ছবি

মেহেদী হাসান মিরাজ স্কোয়াডে থাকলে মোসাদ্দেক হোসেনের জায়গা হয় না। সোমবার (২৩ জুন) এক প্রেস কনফারেন্সে একটি ব্যতিক্রমধর্মী স্পষ্ট বক্তব্যে এমনটাই জানালেন বাংলাদেশ দলের প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন।

 

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আসন্ন তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের স্কোয়াড ঘোষণার সময় মোসাদ্দেক হোসেন ও নুরুল হাসান সোহানকে বাইরে রাখার বিষয়ে তার ব্যাখ্যা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

সাবেক এই জাতীয় অধিনায়ক মনে করিয়ে দিয়েছেন, দলে তারকাদের অবস্থান এতটাই শক্ত, যেখানে ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সও পর্যাপ্ত নয় সুযোগ পাওয়ার জন্য।

প্রধান নির্বাচক বলেন, “সোহান অবশ্যই আমাদের বিবেচনায় আছে। তবে দলে একাধিক উইকেটরক্ষক রাখার জায়গা নেই। লিটন এখন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক এবং পরবর্তী বিশ্বকাপ পর্যন্ত তার জায়গা ধরে রাখার পরিকল্পনা আছে। সেই ধারাবাহিকতা তৈরির অংশ হিসেবেই আমরা চাইছি ও যেন ওয়ানডে খেলতে পারে। ”

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর বাংলাদেশ আর কোনো ওয়ানডে খেলেনি। এর মধ্যে লিটনের পারফরম্যান্সও ছিল না উল্লেখযোগ্য। তবুও তিনি সুযোগ পেলেন, আর ৫২২ রান ও দুটি শতক হাঁকানো সোহান সুযোগ পেলেন না?

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোসাদ্দেক হোসেন ছিলেন অন্যতম উজ্জ্বল মুখ। ৪৮৭ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ৩০টি উইকেট—যা যৌথভাবে সর্বোচ্চ। অপরদিকে, নুরুল হাসান সোহান করেছেন ৫২২ রান, গড় ৫৮, করেছেন দুটি শতক ও দুটি অর্ধশতক।

তবুও এই দুইজনের জায়গা হয়নি স্কোয়াডে। কারণ তারা খেলেন এমন দুটি পজিশনে, যেখানে আছেন দলের দুই অধিনায়ক—মেহেদী হাসান মিরাজ ও লিটন দাস।

তবে মোসাদ্দেক ও সোহানকে ‘বৃহত্তর পরিকল্পনায়’ থাকার কথা জানিয়ে আশ্বস্ত করতে চেয়েছেন গাজী আশরাফ। বলেছেন, “মোসাদ্দেক আমাদের ক্যানভাসে রয়েছে, হয়তো এখন সামনের সারিতে নেই। তবে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে যেন দরকার হলে অবদান রাখতে পারে। ”

সোহান প্রসঙ্গে লিপু বলেন, “আমরা চাই, ভবিষ্যতে তাকে শুধু স্কোয়াডে নয়, একাদশেও দেখতে। সামনে শ্রীলঙ্কা সিরিজ, এরপর পাকিস্তান ও ভারতের সঙ্গে খেলা—এই সিরিজগুলোয় সবাইকে মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে। ”

এইসব ব্যাখ্যা কতটা বিশ্বাসযোগ্য তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মধ্যেও। ক্রিকেটাররা যদি ঘরোয়া পারফরম্যান্স দিয়েও দলে ঢোকার সুযোগ না পান, বরং ‘তারকা’ ক্রিকেটারদের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে হয়, তাহলে সেটা নির্বাচনী নীতির ভারসাম্য কতটা বজায় রাখছে?

মোসাদ্দেক ও সোহান—দুজনেই দেশের প্রতিষ্ঠিত পারফর্মার। তাদের ছাঁটাই করে যেভাবে ‘ভবিষ্যতের আশা’ বলে সান্ত্বনা দেওয়া হচ্ছে, তাতে তারা আদৌ অনুপ্রাণিত হবেন, নাকি হতাশ, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।