ঢাকা: জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) সাত বছর পর শিরোপা হাতে পেল ঢাকা বিভাগ। খুলনাকে হারিয়ে মঙ্গলবার শিরোপা উত্সব করল তারা।
ব্যাট হাতে দারুণ করেছে ঢাকা বিভাগের আব্দুল মজিদ। তিনি সর্বাধিক ৬৯০ রানের অধিকারী। যার মধ্যে ছিলো দুইটি শতক ও দুইটি অর্ধশতক। বেশি রান করায় আনন্দের বাংলানিউজের কাছে অনুভূতি প্রকাশ করেন,‘ভাই আনন্দতো অনেক লাগছে। খুবই ভালো লাগছে যে আমি সবচেয়ে বেশি রান করেছি। ’
২০০০ সালে থেকে তিনি ক্রিকেটের সঙ্গে আছেন। নিজের সেরা প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন এই ওপেনার,‘সেরা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। চেষ্টা করেছিলাম বেশি সময় ধরে উইকেটে টিকে থাকতে। আর উইকেটের কথা যদি বলি উইকেট অনেক ভালো, স্পোর্টিং উইকেট। যদি কোনো বোলার চায় ভালো বল করতে তাহলে সেটা পারবে। এবং যদি কোন ব্যাটসম্যান চায় ভালো রানও করতে তাহলে সেও পারবে। ’
জাতীয় দলের আসার ব্যাপারে তিনি বলেন,‘ইচ্ছে তো সবারই থাকে জাতীয় দলে খেলার। আশা আছে, বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছে। ’
এই রেকর্ড তার সেরা রেকর্ড না। ২০১১-১২ সালে শেখ জামালের হয়ে প্রথম শ্রেণীর খেলায় ৮১৭ রান করেছিলেন তিনি।
এবারের আসরে বল হাতে ঘূর্ণির জাদু দেখিয়েছেন মনির হোসেন খান। বরিশাল বিভাগের পক্ষ তিনি ৩৩ উইকেট শিকার করেন। সাত রাউন্ডে তিনিই সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন। খেলা শেষেই লঞ্চে করে রবিশালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন মনির। লঞ্চেই ভালো লাগার অনুভূতির কথা জানালেন বাংলানিউজকে,‘আমি আসলে অনেক অনেক খুশি। এতো খুশি যে ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। সবসময় আল্লাহর কাছে চেয়ে ছিলাম এক বা দুই যেনো হতে পারি। এখন ৩৩ উইকেট নিয়ে খুব ভালো লাগছে। ’
গত দুই বিপিএলে দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে খেলেছেন এই স্পিনার। নিজেকে কোন পর্যায়ে দেখতে চান এমন প্রশ্নে ২৮ বছর বয়সী এ বোলার বলেন,‘আসলে সবার মনেই ইচ্ছে থাকে জাতীয় দলে খেলার। আমারও ইচ্ছে আছে। নির্বাচকরা যদি মনে করেন আমি ভালো বল করি তাহলে তারা আমাকে দলে নিতে পারেন। জাতীয় দলে খেলি বা না খেলি আমি ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই। ’
সবচেয়ে বেশি রান:
আব্দুল মজিদ: ঢাকা বিভাগের এই খেলোয়াড় সাত ম্যাচে ১৩ ইনিংস খেলেছেন। দুটি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরিতে সবচেয়ে বেশি ৬৯০ রান করেছেন তিনি। এই ওপেনারে এক ইনিংসে সরোচ্চ স্কোর ১৮২ রান।
আসিফ আহমেদ: ২০০ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলা ঢাকা মহানগরের এই ব্যাটসম্যান ৬১৪ রান নিয়ে আছেন দ্বিতীয় স্থানে। তিনটি সেঞ্চুরি ও একটি অর্ধশতক রয়েছে ৭ ম্যাচে ১৪ ইনিংস খেলা আসিফের।
তুষার ইমরান: সাত ম্যাচে ১২ ইনিংস খেলেছেন তুষার ইমরান। খুলনা বিভাগের হয়ে এবারের আসরে দুটি শতক ও চারটি হাফ সেঞ্চুরি মেরেছেন তিনি। সব মিলিয়ে ৫৪৫ রান নিয়ে তিন নম্বরে এই ব্যাটসম্যান।
রনি তালুকদার: একটি শতক ও দুটি অর্ধশতক নিয়ে সাত ম্যাচে ১৩ ইনিংস খেলে ৫০০ রান করেছেন খুলনা বিভাগের এই ওপেনার।
নুরুল হাসান: দলের শিরোপা দখলে শেষ ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন এই উইকেট রক্ষক। দুটি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরি নিয়ে ৪৮৯ রান সংগ্রহে তার। সাত ম্যাচে ১০ ইনিংস খেলতে পেরেছেন তিনি।
সবচেয়ে বেশি উইকেট
মনির হোসেন: সাত ম্যাচে ১৩ ইনিংস খেলে ৩৩ উইকেট নিয়ে সবার উপরে বরিশাল বিভাগের এই বোলার। এক ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নিয়েছেন দুবার। সেরা বোলিং ফিগার ২৭ রানের বিনিময়ে ছয়টি উইকেট।
নাজমুল ইসলাম: ঢাকা বিভাগের এই বোলারের সেরা ইনিংস ছিল ২১ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট। এক ইনিংসে দুবার পাঁচ উইকেট বা তার বেশি পেয়েছেন তিনি। ছয় ম্যাচে ৩১ উইকেট নিয়েছেন তিনি। দলও জিতেছে শিরোপা।
এনামুল হক জুনিয়র: ছয় ম্যাচে ২৭ উইকেট দখলে নিয়ে তিন নম্বরে আছেন সিলেট বিভাগের এই বোলার। এক ইনিংসে একবারই পাঁচ বা তার বেশি উইকেটি পান তিনি।
সোহরাওয়ার্দী শুভ: মোটামুটি নিয়মিত উইকেট পেয়েছেন এই স্পিনার। সাত ম্যাচে ২৬ উইকেট নিয়ে এবারের আসরে চতুর্থ সেরা বোলারের খ্যাতি পেয়েছেন রংপুর বিভাগের তারকা।
নাবিল সামাদ: ছয় ম্যাচ খেলে ২৪ উইকেট নিয়ে সিলেট বিভাগের নাবিল শীর্ষ পাঁচ উইকেট শিকারির তালিকায় আছেন। তিনিও এক ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট পেয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, ২২ এপ্রিল ২০১৪