ঢাকা: মোহামেডানের আফগান রিক্রুট রেহমাত শাহের ৫০তম ওভারের চতুর্থ বলটি নাসির হোসেন লং অনে পাঠিয়ে সিঙ্গেল নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠলো আবাহনীর পুরো ড্রেসিংরুম। স্বস্তির হাসি হাসলেন কোচ সারওয়ার ইমরান।
আবাহনী সুপার লিগে ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানকে তিন উইকেটে হারিয়েছে। কিন্তু ফতুল্লায় বুধবার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচে দেখা গেছে পুরনো সেই লড়াইয়ের আমেজ। ক্ষণে ক্ষণে পাল্টেছে ম্যাচের রং। কখনো আবাহনী সমর্থকদের মুখে হাসি, আবার কখনো মোহামেডান সমর্থকদের ব্যান্ড পার্টির তালে তালে নৃত্য করতে দেখা গেছে।
আবাহনীর জয়ের নায়ক নাসির হোসেন কিন্তু ম্যাচে প্রাণ ফিরিয়ে আনার জন্যে কৃতিত্ব দিতে হবে মোহামেডানের অধিনায়ক মাশরাফির বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কত্বকে।
২৪১ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে যখন মনে হচ্ছিল আবাহনী সহজ জয়ের পথে হাঁটছে তখনই মাশরাফি দেখিয়েছেন তার ঝলক। কখনো এনে দিয়েছেন প্রয়োজনীয় ব্রেক-থ্রু, আবার কখনো বোলার পরিবর্তন করে চাপে রেখেছিলেন ধানমন্ডির ক্লাবটিকে।
তবে নাসির হোসেনের ৬৯ বলে ৮৩ রানের ইনিংসটি শেষ পর্যন্ত হাসি ফুটিয়েছে আবাহনীর সমর্থকদের মুখে। ৪৬তম ওভার পর্যন্ত ম্যাচের লাগাম ছিল মোহামেডানের হাতেই। আবাহনীর শেষ চার ওভারে প্রয়োজন ছিল ৪১ রান।
৪৭তম ওভারে রেহমার শাহর উপর দিয়ে ঝড় বয়ে দিলেন নাসির। তার ওভারে তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম বলে টানা তিন ছয়ে পাল্টে যায় ম্যাচের দৃশ্যপট।
তবে শেষ ওভারেও ছিল নাটক। আবাহনীর জয়ের জন্যে প্রয়োজন ছিল সাত রান। রেহমাত শাহ জিয়ার উইকেট তুলে নিলে আবারো ম্যাচে ফিরে আসে মাশরাফির দল। কিন্তু দ্বিতীয় বলে চার মেরে সব শঙ্কা উড়িয়ে দেন ফিনিশার নাসির।
তবে ৩৩ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারানোর পর আবাহনীর ইনিংসের হাল ধরেছিলেন রকিবুল হাসান এবং ফরহাদ হোসেন। তৃতীয় উইকেটে ৭৮ রান যোগ করে পরিস্থতি সামাল দেন তারা।
টসে জিতে মোহামেডানের অধিনায়ক মাশরাফি ব্যাটিং বেছে নেন। কিন্তু ৯ ওভারের মধ্যে ৩৮ রানের মধ্যে চার উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে মোহামেডান। সকালের বোলিং কন্ডিশনকে কাজে লাগিয়ে পেসার শুভাশিষ একাই ধসিয়ে দেন মতিঝিল পাড়ার ক্লাবটির টপ অর্ডার। প্রথম স্পেলেই তিন উইকেট নেন আবাহনীর এই পেসার।
তবে দলের বিপর্যয়ে হাল ধরেন নাইম ইসলাম এবং আরিফুল হক। পঞ্চম উইকেটে ১২২ রানের পার্টনারশিপ গড়ে মোহামেডানের ড্রেসিংরুমে স্বস্তি এনে দেন।
নাইমের ৯৮ বলে ৫১ রানের ইনিংসে নেই কোনো চার কিংবা ছয়। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় তার এই ইনিংস সমর্থকদের বাহবা পেয়েছে।
আবার আরিফুল হকের ১৩৭ বলের ১০৯ রানের ইনিংসটা উজ্জ্বল ভবিষৎতেরই ইঙ্গিত দিল। ১১ চার এক ছয়ে সাজানো ইনিংসটিই মোহামেডানের ইনিংসে গতি এনে দিয়েছিল। তবে শেষ দিকে মাশরাফির ২৭ বলে ৩৮ রানের ইনিংসটিও মনে করিয়ে দিল পুরোন মাশরাফিকে।
নাইম, আরিফ এবং মাশরাফির মিলিত প্রচেষ্টায় মোহামেডানের স্কোর শেষ পর্যন্ত দাঁড়ায় সাত উইকেটে ২৪০ রান।
বাংলাদেশ সময়: ২২১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৪